ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একাদশে চমক নিয়েই খেলছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ৭ অক্টোবর ২০১৭

একাদশে চমক নিয়েই খেলছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওপেনার তামিম ইকবাল খেলতে পারবেন না। তার পরিবর্তে ব্লুমফন্টেইন টেস্টে যে সৌম্য সরকার খেলবেন তা আগেই জানা ছিল। পেসার শফিউল ইসলামের পরিবর্তে রুবেল হোসেনও খেলবেন তাও বোঝা গেছে। কিন্তু একাদশে তো দেখা গেল পরিবর্তনের হিড়িক লেগে গেল। একাদশে যেন চমক মিলল। সেই চমক নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে খেলছে বাংলাদেশ। এক এক করে চারটি পরিবর্তন হলো একাদশে। তামিমের পরিবর্তে সৌম্য খেলছেন। শফিউলের পরিবর্তে খেলছেন রুবেল। হলো পরিবর্তন আরও দুটি। তাসকিন আহমেদের পরিবর্তে শুভাশীষ রায়কেও নামানো হলো। আর মেহেদী হাসান মিরাজের পরিবর্তে খেলানো হচ্ছে তাইজুল ইসলামকে। একাধারে পাঁচ পরিবর্তনে সবাই অবাক। উইকেটে ঘাস আছে। বাদামি ঘাস। তার মানে উইকেটে পেসাররা সুবিধা পাবেন। বাউন্স পাবেন। প্রথম সেশনে যে দলই ব্যাটিং করবে যদি পেসাররা ভালভাবে বোলিং করতে পারেন তাহলে ব্যাটসম্যানরা বিপদে পড়বে। টস জেতা মানেই তাহলে ফিল্ডিং নেয়া। পিচ রিপোর্ট করতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক শন পোলক যখন বলেন, ‘টস জিতলে বোলিং নেয়াই হবে উত্তম।’ তখন ফিল্ডিং না নিয়ে কী আর উপায় আছে? মুশফিক টস জিতলেন। ফিল্ডিংও নিলেন। কিন্তু পেসাররা প্রথম সেশনটি কাজে লাগাতে পারলেন না। প্রথম টেস্টের উইকেট ছিল ব্যাটিংস্বর্গ। তাতে দক্ষিণ আফ্রিকা উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়েছে। ৩৩৩ রানের জয়ও তুলে নিয়েছে। এরপরও দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসের কণ্ঠে ছিল ক্ষোভ। কারণ যেরকম গতি আর বাউন্সি উইকেট চেয়েছেন তা পাননি। দ্বিতীয় টেস্টে তাই যে করেই হোক প্লেসিসের চাওয়া ছিল সবুজ ঘাসের উইকেট। বাউন্সি উইকেট। তার চাওয়া পুরোপুরি পূরণ না হলেও কিছুটা পূরণ হয়েছে। গতি ততটা না থাকলেও বাউন্স ঠিকই হবে। এমন উইকেটে ফিল্ডিং না নিয়ে উপায় নেই। মুশফিক তাই ফিল্ডিং নিলেন। তাতেও যেন খুশি প্লেসিস। বলেই দিলেন, ‘১০ বারের মধ্যে ৯ বার আগে ব্যাট করবে। খুবই সাধারণ ক্রিকেট উইকেট।’ সঙ্গে প্রথম সেশনটি কাটিয়ে দিতে পারলেই যে ব্যাটিংয়ে ভাল করা যাবে সেটিও বললেন। সেটিই হলো। বাংলাদেশ বোলাররা প্রথম সেশনে কিছুই করে দেখাতে পারলেন না। পোচেফস্ট্রুম টেস্টে তো শুরুতে উইকেট পাওয়ার আশা তৈরি করেছিলেন। সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু ব্লুমফন্টেইন টেস্টে সেই সুযোগও মিলেনি। প্রথম সেশনে কোন উইকেটই শিকার করা যায়নি। একাধারে চার পরিবর্তন করেও তাই কোন লাভ হয়নি। কথায় আছে, ‘যে লাউ, সেই কদু।’ তাই দাঁড়াল। একজন ব্যাটসম্যান পরিবর্তন করার সঙ্গে তিন বোলার পরিবর্তন করা হলো। পোচেফস্ট্রুম টেস্টে বোলাররা ব্যর্থ হওয়ায় পরিবর্তনের জোয়ার লেগে গেল। যদি কিছু হয়। কিন্তু কোথাও দেখা গেল না কোন উত্তাপ। তামিমের পরিবর্তে সৌম্য, শফিউলের পরিবর্তে রুবেল খেলছেন। ঠিক আছে। কিন্তু তাসকিন কেন নেই? মিরাজই বা ড্রেসিংরুমে কেন? যতদূর জানা গেল, তাসকিনের গোড়ালিতে সমস্যা রয়েছে। তাই দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে তাসকিনকে রাখা হয়নি। শুভাশীষকে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। আর মিরাজ প্রথম টেস্টে ব্যর্থ হয়েছেন। তাকে স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু না বল হাতে প্রথম টেস্টে কিছু করে দেখাতে পেরেছেন। না ব্যাট হাতে। প্রথম টেস্টের দুই ইনিংস মিলিয়ে ২৩ রান (৮ ও ১৫*) করেছেন। বল হাতে থাকেন উইকেটশূন্য। সাকিব না থাকায় স্পিনে একমাত্র ভরসাই ছিলেন মিরাজ। স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবে খেলেছেন। কিন্তু কিছুই করে দেখাতে পারেননি। তাই দ্বিতীয় টেস্টে তাইজুল ইসলামকে নেয়া হয়েছে। ফর্মের কারণেই মিরাজকে বাদ দেয়া হয়েছে। এত পরিবর্তনের পরেও কোন কাজ হচ্ছে না। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনারকেই তো দ্রুত ঠেকিয়ে রাখা যায়নি। আবার দুইজন মিলে একের পর বাউন্ডারিও হাঁকাতে থাকেন। যেন ওয়ানডে খেলছেন। বোলিংয়ে তিন পরিবর্তন নিয়েও তাই বিশেষ কোন কাজ হয়নি। চমক তেমন কাজে লাগেনি। সেই চমক নিয়েই খেলছে বাংলাদেশ।
×