ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কার সুযোগ পাকদের রেকর্ড ভাঙ্গার, দুবাইয়ে দিবারাত্রির দ্বিতীয় টেস্ট শুরু আজ

পাকিস্তানের সিরিজ হার ঠেকানোর লড়াই

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ৬ অক্টোবর ২০১৭

পাকিস্তানের সিরিজ হার ঠেকানোর লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজেদের ঘরের মাঠ হয়ে যাওয়া আরব আমিরাতে দারুণ সফল পাকিস্তান ক্রিকেট দল। ২০১০ সাল থেকে নিয়মিতই এই মরুর দেশে ঘরোয়া সিরিজ আয়োজন করে আসছে তারা। তবে ২০০২ সালেও ৪ টেস্ট খেলেছিল। সার্বিকভাবে সাফল্যের পাল্লাটাই বেশি তাদের। কিন্তু এবার সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দুই টেস্টের সিরিজের প্রথম ম্যাচেই হেরে গেছে পাকরা। দুই অভিজ্ঞ মিসবাহ-উল-হক ও ইউনুস খান ছাড়া নতুন চেহারার পাক ব্যাটিং লাইনআপ কতটা অসহায় সেটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। আজ দুবাইয়ে শুরু সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে পাকরা একটি দিবারাত্রির টেস্ট খেললেও প্রথমবারের মতো কৃত্রিম আলোয় গোলাপী বলে খেলবে শ্রীলঙ্কা। তবে তাদের সামনে এখন মোক্ষম সুযোগ সিরিজ জয়ের। সেজন্য এই টেস্ট ড্র করলেই যথেষ্ট হবে। সেক্ষেত্রে এই মরুর দেশে পাকিস্তানের ৯ সিরিজ অপরাজেয় থাকার রেকর্ড ভেঙ্গে যাবে। সিরিজ বাঁচানোর পাশাপাশি তাই রেকর্ড বাঁচানোর লড়াই পাকিস্তানের। অধিনায়ক মিসবাহ এবং অভিজ্ঞ ইউনুস গত মে মাসেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন। মিডলঅর্ডারের অন্যতম নির্ভরতা এ দুই ব্যাটসম্যান একসঙ্গে বিদায় নেয়ায় বিশাল শূন্যতা তৈরি হয়েছে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে। এ দু’জনকে ছাড়া প্রথমবার খেলতে নামে তারা আবুধাবীতে অনুষ্ঠিত চলমান সিরিজের প্রথম টেস্ট। স্পিনের বিরুদ্ধে সবসময়ই ভাল ব্যাটিংয়ে সিদ্ধহস্ত এ দুই ব্যাটসম্যান। কিন্তু তাদের ব্যতীত স্পিন মোকাবেলায় একেবারেই বিপর্যস্ত চিত্র দেখা গেছে আবুধাবীতে। শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ একাই হারিয়ে দিয়েছেন পাকদের। দুই ইনিংসে ১১ (৫ ও ৬) উইকেট তুলে নেন তিনি। আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টেও হেরাথের বিরুদ্ধে একই ব্যাটিং লাইন নিয়ে মোকাবেলা করতে হবে কোণঠাসা পাকিস্তানকে। অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ আছেন তাই দারুণ অস্বস্তিতে। মিডলঅর্ডারে অভিষেক হওয়া হারিস সোহেল অবশ্য কিছুটা দুঃশ্চিন্তা কমিয়েছেন আবুধাবীতে ৭৬ ও ৩৪ রান করে। এছাড়া প্রথম ইনিংসে ওপেনার শান মাসুদ ৫৯, সামি আসলাম ৫১ ও তিন নম্বরে নামা আজহার আলী ৮৫ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে চরমভাবে ব্যর্থ ছিলেন। আর সেই ধারাবাহিকতার অভাবেই মাত্র ১৩৬ রানের টার্গেটে নেমে ২১ রানে পরাজয়বরণ করে পাকিস্তান দল। আরব আমিরাতে এর আগে ৯ সিরিজ খেলেছে পাকরা। এখন পর্যন্ত কোন সিরিজই হারায়নি। ৫ সিরিজ জয়, ৪ সিরিজ ড্র করে তারা। এই অপরাজেয় থাকার রেকর্ড এবার ভেঙ্গে যাওয়ার শঙ্কায় পাকিস্তান। তবে ৭ ম্যাচ হারের তিক্ততা আছে তাদের। ২৯ টেস্টে অবশ্য জিতেছে ১৫টি এবং ড্র করেছে ৭টি। দারুণ সমৃদ্ধ এ ফলাফল এবার পাল্টে গিয়ে উল্টো হোয়াইটওয়াশ হওয়ার শঙ্কাটা ভালভাবেই চোখ রাঙ্গাচ্ছে। আর টানা দুই টেস্ট (গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে আরেকটি) হার দেখল তারা। অপরদিকে প্রথম টেস্ট জেতার পর এখন লঙ্কানরাও বেশ উজ্জীবিত ও আত্মবিশ্বাসী। তারা যেভাবেই হোক সিরিজ জিততে মরিয়া। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে তিন ফরমেটের ক্রিকেটেই বেশ দুঃসময় যাচ্ছে লঙ্কানদের। দেশে এবং দেশের বাইরে টানা ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী দলটিতে একের পর এক পালাবদলও হানা দিচ্ছে। তবে নতুন এক দিগন্তে পা রাখতে যাচ্ছে তারা দুবাইয়ে। এখন পর্যন্ত ৬টি দিবারাত্রির টেস্ট আয়োজিত হয়েছে যার শুরুটা ২০১৫ সালে এ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড টেস্ট দিয়ে। কিন্তু শ্রীলঙ্কা এই প্রথম খেলতে যাচ্ছে দিবারাত্রির টেস্ট। এই নতুন অভিজ্ঞতায় তারা কিভাবে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে সেটাও একটা বড় বিষয়। তবে সেটার স্বাদ আগেই নিয়েছে পাকরা। ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে এই ভেন্যুতেই ঠিক এক বছর আগে দিবারাত্রির টেস্ট তারা জিতেছিল ৫৬ রানে। তাই আবার জয়ের ধারায় ফিরতে প্রত্যয়ী সরফরাজ, ‘আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করব হেরাথের বিরুদ্ধে আরও ইতিবাচক থাকার। আমরা কখনও আরব আমিরাতে সিরিজ হারিনি সেই রেকর্ডটাও অম্লান রাখা জরুরী।’ অন্যতম পেসার মোহাম্মদ আমির প্রথম টেস্টে ছিলেন উইকেটশূন্য, গোলাপী বলে তিনি ভালভাবেই ফিরবেন বলে বিশ্বাস পাক অধিনায়কের। আর ফিটনেস সমস্যায় থাকা পেসার হাসান আলীও পুরোপুরি ফিট হয়ে নামবেন এমনটাই আশা তাদের। কিন্তু শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল এখন সিরিজ জয়ের স্বপ্নে বিভোর। তারা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিততে পারলেও পাকদের হটিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের ৬ নম্বরে উঠে আসবে তারা। এ বিষয়ে চান্দিমাল বলেন, ‘আমাদের আবার নিজেদের সেরা অবস্থানে থেকে খেলা প্রয়োজন। কারণ পাকিস্তান অনেক ভাল দল। তাদের ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।’
×