ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচ শ’ ত্রিশ পদ শূন্য

যশোরে ভারপ্রাপ্তদের ভার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায়

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ৬ অক্টোবর ২০১৭

যশোরে ভারপ্রাপ্তদের ভার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায়

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ভারপ্রাপ্তদের ভারে নুয়ে পড়েছে যশোরের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা। জোড়াতালি দিয়ে চলছে পাঠদান। নেমে গেছে শিক্ষার মান। যশোরে এই মুহূর্তে ৩৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এসব বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে বছরের পর বছর। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়েই চলছে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। আর সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ১৬৪টি বিদ্যালয়ে। এ কারণে লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। যশোর জেলার আট উপজেলায় এক হাজার ২৮৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৩৬৬ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। আর সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য ১৬৪টিতে। এর মধ্যে অভয়নগর উপজেলায় ৩৯ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ছয়টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। কেশবপুর উপজেলায় ৪৭ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ২৪টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। চৌগাছা উপজেলায় ৩৮ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ১৬টি সহকারী শিক্ষকের পদ, ঝিকরগাছা উপজেলায় ৩২ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ১৪টি সহকারী শিক্ষকের, বাঘারপাড়া উপজেলায় ৩৯ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ২৩টি সহকারী শিক্ষকের পদ, মনিরামপুর উপজেলায় ৮১ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ৫০টি সহকারী শিক্ষকের পদ, শার্শা উপজেলায় ৩০ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ১০টি সহকারী শিক্ষকের পদ এবং সদর উপজেলায় ৬০ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ২৬টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধান শিক্ষকরা অবসরে যাওয়ায় এসব বিদ্যালয়প্রধানের পদ শূন্য হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। এর মধ্যে বেশি শিক্ষক সঙ্কট রয়েছে মনিরামপুর উপজেলায়। এ উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের ৮১ ও সহকারী শিক্ষকের ৫০টি পদ শূন্য রয়েছে। এ অবস্থায় জোড়াতালি দিয়ে বিদ্যালয়গুলোতে চলছে পাঠদান। তার ওপর দাফতরিক কার্যক্রমে ভারপ্রাপ্তরা শিক্ষা অফিসে ব্যস্ত থাকায় দিন দিন লেখাপড়ার মান পড়ে যাচ্ছে। এর ফলে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা। একাধিক শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করা যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। আবার অনেকেই বিপিএড করছেন। এ কারণে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানে খুবই সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সভা, প্রতিবেদন তৈরি ও দাফতরিক কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। সহকারী শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন। প্রধান শিক্ষক না থাকলে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ করে সহকারী শিক্ষকদের পক্ষে সঠিকভাবে পাঠদান কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া শিক্ষক সঙ্কটের কারণে তাদের অতিরিক্ত ক্লাস নিতে হয়।’ এ বিষয়ে যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার অধিকারী বলেন, ‘সব বিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম প্রধান শিক্ষক নিয়ন্ত্রণ করেন। এ কারণে প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়গুলোতে সৃষ্টি হচ্ছে নানা সঙ্কট।’
×