ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ৫ অক্টোবর ২০১৭

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ মনে করে, সাম্প্রতিক সময়ে তৈরি পোশাক (গার্মেন্ট) শিল্প একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সংগঠনটি বলছে, গত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) পোশাক শিল্পের রফতানি প্রবৃদ্ধি ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমে এসেছে। প্রবৃদ্ধি কমে আসার কারণ হিসেবে ১৩টি সমস্যা চিহ্নিত করেছে বিজিএমইএ। ২০২১ সাল নাগাদ পোশাক খাতে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ বিলিয়ন ডলার। এসব সমস্যার সমাধান করা না হলে ওই টার্গেট অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। বুধবার বিকেলে গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে ‘পোশাক শিল্পের বর্তমান ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সংগঠন হিসেবে বিজিএমইএ এসব বক্তব্য তুলে ধরে। গোলটেবিলের আয়োজকও বিজিএমইএ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এছাড়াও আলোচক হিসেবে অংশ নিয়েছেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তা, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা ও সিনিয়র সাংবাদিকরা আলোচনায় অংশ নেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। আলোচনার শুরুতে লিখিত উপস্থাপনায় বিজিএমইএ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির রফতানি প্রবৃদ্ধি কমে আসার ১৩ কারণ উল্লেখ করেন। এগুলো হলো- দীর্ঘ সময় ধরে ডলারের বিপরীতে টাকার শক্তিশালী অবস্থান, চট্টগ্রাম বন্দরে স্থবিরতা, আমদানির ক্ষেত্রে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অনুন্নত সেবা, পোশাকের দরপতন ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, পোশাক কারখানার সংস্কার বাবদ অতিরিক্ত খরচ, বৈশ্বিকভাবে পোশাক আমদানির চাহিদা হ্রাস, ভারত, ভিয়েতনাম ও পাকিস্তানের মতো প্রতিযোগী দেশগুলোর রফতানি প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাওয়া, অন্যতম প্রতিযোগী ভারত কর্তৃক পোশাক খাতে সরকারী প্রণোদনা, যা বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে দিচ্ছে, বৈশ্বিক ক্রেতাদের বিশাল একটি অংশের ফের চীনমুখিতা, বিদ্যুত ও গ্যাসের নাজুক পরিস্থিতি এবং ঘনঘন মূল্যবৃদ্ধি, পোশাকখাতকে ঘিরে নেতিবাচক প্রচার এবং পোশাক খাত বিষয়ে সরকারের নীতি স্থিতিশীলতার অভাব। আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের অনেক বন্ধু দেশ নিজেদের স্বার্থের বিষয়ে একটুও আপোস করে না। যখনই আমরা পোশাক খাতে রফতানির লক্ষ্য ৫০ বিলিয়ন ডলার ঠিক করেছি, প্রতিযোগী দেশগুলো আমাদের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে গেছে। এখন মনে হয়, ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্য ঘোষণা করা বোধ হয় ঠিক হয়নি। মন্ত্রী বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর গোটা বিশ্বে আমরা মর্যাদাহীন হয়ে পড়েছিলাম। গত চার বছরে ওই ক্ষত পূরণ করে আমরা মর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি। যুক্তরাষ্ট্রে পাবলিক ও প্রাইভেট খাতে মাত্র ৭ ও ৩০ শতাংশ ট্রেড ইউনিয়ন আছে। অথচ দেশটি শতভাগ ট্রেড ইউনিয়নের জন্য আমাদের চাপ দেয়। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও এ্যাকর্ড-এ্যালায়েন্স নাই। কেউ সুবিধা দেবে না, তবে যত শর্ত কেবল বাংলাদেশের বেলায়। তবে কেউই আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছবই।
×