ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আমেরিকান মেড ॥ দি টম ক্রুজ শো

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৫ অক্টোবর ২০১৭

আমেরিকান মেড ॥ দি টম ক্রুজ শো

আমেরিকান মেড। টম ক্রুজের সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি। আর টম ক্রুজ মানেই একা সব আলো টেনে নেয়া। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। বিশ্বজুড়ে অগণিত ভক্ত অপেক্ষায় থাকেন আর নতুন ছবি মুক্তির। অবশেষে অপেক্ষার অবসান। গত শুক্রবারে মুক্তি পেল টম ক্রুজের নতুন ছবিÑ আমেরিকান মেড। মোট ৩০২৪টি প্রেক্ষাগৃহে প্রথম তিন দিনের আয় ১৭ মিলিয়ন ডলার। বাজার বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার তুলনায় আয়ের পরিমাণ কিছুটা কম। তাই বলে টম ক্রুজের মাহাত্ম্য কমেনি এতটুকু। তিনি টম ক্রুজ, তিনি জানেন তিনি কী চান। কি করা উচিত। তাই তিনি করেছেন। আর তাই গল্প, পরিচালক, বাজেট, এ্যাকশনÑ সব ছাপিয়ে ‘আমেরিকান মেড’কে বলা হচ্ছেÑ দ্য টম ক্রুজ শো। কাহিনী গ্যারি স্রিনেল, পরিচালক ড্যুগ লিমান। ‘আমেরিকান মেড’-এ টম ক্রুজের সঙ্গে সহশিল্পী হিসেবে আছেন ডুমনাল গ্রিসন, সারাহ রাইট, আলেজান্দ্র এডা, মাউরোসিও মেজ্জা, ক্যালেব ল্যান্ড্রি জোনস্, জেসি প্লেমন্সসহ অন্যরা। প্রথম মুক্তি ইউরোপে ২৩ আগস্ট, ২০১৭। আমেরিকায় মুক্তি পায় সেপ্টেম্বর ২৯-এ। ইউনিভার্সেল পিকচার পরিবেশিত ২০০২ এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বর্ন আইডেনটিটি’র পর এটি লিমানের প্রথম ছবি। মুক্তির পর থেকেই ইউরোপ, আমেরিকাজুড়ে চলছে ক্রুজ বন্দনা। ১৯৭০ দশকের শেষ প্রান্তে ব্যারি সিল যিনি একজন কমার্শিয়াল পাইলট তার সঙ্গে যোগাযোগ হয় সিআইএ এজেন্ট মন্টি শেফারের সঙ্গে। সিলকে সেন্ট্রাল আমেরিকায় ক্যামেরা বসানো প্লেনে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়। এক সময় সিলের ওপর দায়িত্ব বর্তায় পানামার জেনারেল নরিরেগা ও সিআইএর মধ্যে কুরিয়ারের দায়িত্ব পালনের। মেডেলিন কার্টেল সিলকে বেছে নেয় ফিরতি প্লেনে মাদক বহনের কাজে, সিল প্রস্তাব গ্রহণ করে কোকেন পাচার শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইসিয়ানায়। সিআইএ বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে নিজ স্বার্থে। কিন্তু সিল নজরে আসে ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির। অপকর্ম ঢাকতে সিআইএ সিলকে সরিয়ে দেয় আরকানসাসের প্রত্যন্ত গ্রাম মেলাতে। সিলকে আবার দায়িত্ব দেয়া হয় হন্ডুরাসে নিকারাগুয়ান কন্ট্রাদের কাছে চোরাচালানের মাধ্যমে অস্ত্র পৌঁছে দেয়ার। তবে অচিরেই সিল বুঝতে পারে কন্ট্রারা যুদ্ধের ব্যাপারে মোটেও সিরিয়াস নয় এবং তারা মেতে উঠেছে অস্ত্র ব্যবসায়। সিআইএ মেলাতে স্থাপন করে ট্রেনিং বেস। মাঝে দৃশ্যপটে প্রবেশ করে জেবি এবং জন্ম দেয় আরেক নাটকীয় ঘটনার। একপর্যায়ে সিআইএ তাদের প্রোগ্রাম বাতিল করে আর সিলকে পরিত্যাগ করে তাকে টেনে দেয় অন্যান্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার গ্রেফতারের মুখে। গ্রেফতার এড়াতে সিল হোয়াইট হাউসের সঙ্গে এক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। চুক্তি অনুযায়ী কাজ করলেও সে আবার শিকার হয় প্রতারণার। অতঃপর গ্রেফতার। তবে সেখানেও থাবা বসায় মাদক পাচারকারী চক্র। সিলের সাজা হয় স্যালভেশন আর্মির জন্য কমিউনিটি সেবা দেয়ার। এর ফাঁকে ড্রাগ কার্টেল এর হাত থেকে বাঁচতে মোটেল থেকে মোটেলে পালিয়ে বেড়ানো। বাকিটুকুর জন্য অপেক্ষায় থাকতে পারেন দর্শক। ছবির শূটিং শুরু হয় ২৭ মে ২০১৫তে। শূটিং লোকেশনে জর্জিয়া। এ ছাড়াও চিত্রগ্রহণ হয়েছে মেডেলিন, কলম্বিয়া ও সান্তা মারিয়াসহ বিভিন্ন লোকশনে। শূটিং চলাকালে সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৫তে ছবির সেটে বিধ্বস্ত হয় দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট একটি প্লেন। নিহত হন দু’জন ক্রু সঙ্গে আহত অনেক। শুরুতে ইউনিভার্সেল পিকচার ছবির মুক্তির সময় নির্ধারণ করে ৬ জানুয়ারি ২০১৭তে। পরে ৮ আগস্ট ২০১৬তে মুক্তির তারিখ পিছিয়ে নতুন তারিখ ধার্য হয় ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭। সেই সঙ্গে মেনা নাম বদলে নতুন নামকরণ করা হয় আমেরিকান মেড। টন ক্রুজের অন্যান্য ছবির মতো সেভাবে সাড়া ফেলতে ব্যর্থ আমেরিকান মেড। কারণ হিসেবে সমালোচকরা বলছেন ছবির গতানুগতিক গল্প। ড্রাগ মাফিয়া আর সরকারের অভ্যন্তরে ষড়যন্ত্রকারীদের গল্পের দিন গত হয়েছে। তবে দীর্ঘ অভিনয় জীবনে টম ক্রুজ আজ এমন এক উচ্চতায় যে, তার উপস্থিতিই বক্স অফিস সাফল্যের জন্য যথেষ্ট এবং ঘটেছে সেটাই। ভক্তদের কাছে এটি টম ক্রুজের ছবি এবং সেটাই যথেষ্ট। সঙ্গে দুর্দান্ত এ্যাকশন তো উপরি পাওনা। সব মিলিয়ে আমেরিকান মেড নিয়ে বলতেই হয়- দ্য টম ক্রুজ শো।
×