ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএল ফুটবলে শেখ রাসেল ১-১ সাইফ স্পোর্টিং

ড্র করে দুইয়ে ওঠার সুযোগ হারাল সাইফ

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ৫ অক্টোবর ২০১৭

ড্র করে দুইয়ে ওঠার সুযোগ হারাল সাইফ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দশজনের দল নিয়েও একপর্যায়ে গোল করে এগিয়েও গিয়েছিল। কিন্তু সেই লিড আর ধরে রাখা যায়নি। তবে হারতেও হয়নি। দশজন নিয়েও ড্র করাটা নিশ্চয়ই মন্দ নয়। তবে বড় একটা আক্ষেপ থেকেই গেল সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের। কেননা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের নবাগত এই দলটির বুধবার বেশ ভাল একটা সুযোগ ছিল পয়েন্ট টেবিলে চতুর্থ থেকে একলাফে দ্বিতীয় স্থানে যাবার (শেখ জামাল ধানম-ি এবং ঢাকা আবাহনীকে টপকে শীর্ষে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনীর পরেই থাকতো সাইফ) কিন্তু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম এই ম্যাচটিতে প্রতিপক্ষ শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করাটা সেই স্বপ্নটা আর পূরণ হয়নি। শাহাদাত হোসেন জুবায়েরের (সাধারণ সম্পাদক, সাইফ স্পোর্টিং ফ্যান ক্লাব) নেতৃত্বে গ্যালারিতে সাইফের শ’খানেক সমর্থক ব্যান্ডপার্টি নিয়ে এসেছিলেন বড় আশা নিয়ে দলের জয় দেখতে। খেলা শেষে তাদের গ্যালারি ছাড়তে হয়েছে মিশ্র অনুভূতি নিয়ে। ম্যাচের আগে সাইফ-রাসেল দু’দলই ছিল পিঠাপিঠি অবস্থানে। ম্যাচের পরেও তাই। নিজেদের নবম ম্যাচে এটা সাইফের তৃতীয় ড্র। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে আগের চতুর্থ স্থানেই। পক্ষান্তরে একবারের লীগ চ্যাম্পিয়ন এবং ‘বেঙ্গল ব্লুজ’ খ্যাত রাসেলেরও সমান ম্যাচে এটা তৃতীয় ড্র। পয়েন্ট ১২। অবস্থান আগের মতোই, পঞ্চম (১২ দলের মধ্যে), সাইফের নিচে। গতিশীল এই ম্যাচটিতে ছিল ফাউলের ছড়াছড়ি। ফলে রেফারি সুজিত ব্যানার্জী চন্দন ছিলেন বেশ ব্যতিব্যস্ত। পুরো ম্যাচে দুই দলকে ছয়টি হলুদ ও একটি লালকার্ড দেখান তিনি। খেলার শুরুতে দুই দলের ফর্মেশন ছিল সাইফ ৪-৩-৩ , রাসেল ৪-৪-২। প্রথমার্ধে রাসেলই তুলনামূলক বেশি আক্রমণ করে। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণে তারাই ছিল এগিয়ে। তাদের আক্রমণগুলোও বেশি হয় মাঝ মাঠ বরাবর। সাইফের আক্রমণের সিংহভাগই ছিল উইং নির্ভর, নির্দিষ্ট করে বললে মতিননির্ভর। ফলে বারবারই প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন। একবার তো বেশ চোট পেয়ে কিছু সময়ের জন্য চলেই গিয়েছিলেন মাঠের বাইরে। ৭ মিনিটে সাইফের ফরোয়ার্ড মতিন মিয়া বল নিয়ে বিপজ্জনকভাবে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েন। কিন্তু তাকে ট্যাকল করে বল ক্লিয়ার করেন রাসেলের এক ডিফেন্ডার। ১৫ মিনিটে মতিন আবারও বাঁপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ঢুকে উঁচু ক্রস করেন, সতীর্থ মিডফিল্ডার জুয়েল রানার লাফিয়ে ওঠা হেডটি বারপোস্টের সামান্য ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৩৭ মিনিটে কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড হেম্বার ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে বল আদান-প্রদান করে বক্সে ঢুকে পড়েন মতিন। বাঁ পায়ে উঁচু যে শটটি নেন অবশ্য লুফে নিতে সমস্যা হয়নি রাসেলের গোলরক্ষক মাকসুদুর রহমানের। ৪৭ মিনিটে দশজনের দলে পরিণত হয় সাইফ। রাসেলের মিডফিল্ডার কাওসার আলী রাব্বি বল নিয়ে বাঁপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে সাইফের বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেন। পেছন থেকে তার জার্সি টেনে ধরেন সাইফের ডিফেন্ডার রিয়াদুল হাসান রিয়াদ। রাব্বি অবশ্য অতি অভিনয় করে মাটিতে পড়ে গিয়ে ব্যথা পাবার ভান করেন। তার অভিনয়ে ‘মুগ্ধ’ হয়ে রেফারি রিয়াদকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড ও পরে লালকার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন। দশজনের দলে পরিণত হওয়ার পরই সাইফ উল্টো যেন আরও শক্তিশালী-সংঘবদ্ধ হয়ে ওঠে। টানা আক্রমণ করে যায় তারা। ৪৮ মিনিটে সাইফের বদলি মিডফিল্ডার আল-আমিন হোসেন সতীর্থের কাছ থেকে বক্সের মধ্যে উঁচু লব থেকে যে ব্যাকহেড করেন তা রাসেলের পোস্টের মাঝখানে লেগে ফিরে আসে। হতাশায় পোড়ে সাইফ। ৫৮ মিনিটে রাসেলের ডিফেন্ডারের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন ভ্যালেন্সিয়া। বক্সের ভেতরে লম্বা থ্রু বাড়ান। সেই বল ধরে জুয়েল রানা পোস্টে উঁচু শট নেন। তা ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন রাসেলের গোলরক্ষক। ৬২ মিনিটে হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসের ইনসুইং কর্নার থেকে দলনায়ক জামাল ভুঁইয়া হেড করে গোল করে সাইফকে এগিয়ে দেন (১-০)। চলতি লীগে এটা তার প্রথম গোল। ৬৯ মিনিটে ফ্রি কিক পায় রাসেল। মিসরীয় ডিফেন্ডার আহমেদ সাইদ হাসানের উঁচু লম্বা শট সাইফের বক্সে গিয়ে পড়ে। সেই বল ব্যাকহেড করেন গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার দাউদা সিসে। সেই বল চলে যায় আনমার্কড মিডফিল্ডার ফজলে রাব্বির পায়ে। বিপদ বুঝে সামনে এগিয়ে আসেন সাইফের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। কিন্তু তার আগেই ডান পায়ের টোকায় বল জালে পাঠিয়ে রাসেলকে সমতায় ফিরিয়ে উল্লাসে মাতেন রাব্বি (১-১)। ৮০ মিনিটে বদলি মিডফিল্ডার মোঃ ইব্রাহিমের কাছ থেকে পাস পেয়ে বক্সে ঢুকে জটলার মধ্যে ভ্যালেন্সিয়া যে শট নেন তা ধরে ফেলেন রাসেলের গোলরক্ষক।
×