ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ আফ্রিকা-বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্ট শুরু শুক্রবার

ইনজুরি- ব্লুমফন্টেইন টেস্টে নেই তামিম

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ৫ অক্টোবর ২০১৭

ইনজুরি- ব্লুমফন্টেইন টেস্টে নেই তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টেই তামিম ইকবালের খেলা অনিশ্চিত ছিল। শেষ পর্যন্ত খেলেছেন। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে আর তামিমকে পাওয়া যাচ্ছে না। ইনজুরিতে তামিমকে দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে দেখা যাবে না। আর তাই শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া ব্লুমফন্টেইন টেস্টে তামিমকে ছাড়াই নামতে হবে বাংলাদেশকে। সাকিব আল হাসান নেই। তাতে যে কতটা বিপত্তিতে পড়েছে বাংলাদেশ তা প্রথম টেস্টেই বোঝা গেছে। দুর্বল হয়ে পড়েছে দল। ৩৩৩ রানের বড় ব্যবধানে হারও হয়েছে। এখন তামিমও থাকছেন না। ব্লুমফন্টেইনের গতি আর বাউন্সি উইকেটে যে বাংলাদেশের কি হবে তা সময়ই বলবে। দলের দুই সেরা ক্রিকেটারকে ছাড়া খেলা দেশের মাটিতেই কঠিন। সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা তো আরও কঠিন। প্রথম টেস্টের পর আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। প্রথম টেস্টের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে মাংসপেশিতে চোট পেয়েছিলেন তামিম। টান লেগেছিল। তাতে প্রথম টেস্ট খেলাই তামিমের অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সুস্থ হয়ে খেলেন। কিন্তু এত অল্প সময়ে কি আর পুরোপুরি সুস্থ হওয়া যায়? তাই সুস্থ ভাব আরও বেশি করে পেতে দ্বিতীয়দিন ফিল্ডিং ছেড়ে ড্রেসিংরুমে যান তামিম। প্রায় ৫০ মিনিট ড্রেসিংরুমে থাকেন। তাকে ফিজিওরা দেখভাল করেন। যেন আরও দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু এমন সময়ই ইনিংস ঘোষণা করে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস এখানে বুদ্ধি খাটান। কারণ ইনিংস ঘোষণার আগে যতক্ষণ কোন ফিল্ডার মাঠের বাইরে থাকবে ততক্ষণ ব্যাটিংয়েও নামতে পারবে না। আর তাই ইনিংস ঘোষণা করে দেন প্লেসিস। তামিমও তার বাইরে থাকার সময়টুকু অতিক্রম না করার আগে ব্যাট হাতে নামতে পারেননি। ওপেনিংয়ে নামতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে ঠিকই ওপেনিংয়ে নেমেছেন। নেমে সেই জৌলুস ছড়াতে পারেননি। এরমধ্যেই আবার ফিল্ডিং করার সময় উরুতে চোট তীব্র হয়েছে। প্রথম টেস্টের পর পরীক্ষা শেষে জানা গেছে, তামিমের চোট গ্রেড ওয়ান পর্যায়ের। এমন চোট ধরা পড়লে ঠিক হতে চার সপ্তাহ লাগে। এমনটি সত্যিই হলে তামিমকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে নাও মিলতে পারে। তবে আপাতত দ্বিতীয় টেস্টে তামিমকে দেখা যাবে না। দল আশা করছে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে পারলে ওয়ানডে সিরিজের আগে তামিম ঠিক হয়ে যাবেন। এ জন্য তামিমকে দলের সঙ্গেও রাখা হচ্ছে। কিন্তু খেলতে আর পারবেন না। তাই ব্লুমফন্টেইন টেস্টে তামিমের স্থানে প্রথম টেস্টে কাঁধের চোটের জন্য খেলতে না পারা সৌম্য সরকারকে দেখা যাবে। ইমরুল কায়েস থাকবেন সৌম্যের সঙ্গে। ২০১৩ সালের গল টেস্টের পর এই প্রথম সাকিব-তামিমকে ছাড়া সাদা পোশাকে খেলবে বাংলাদেশ। সাকিব-তামিম না থাকলেও আশা করা হচ্ছে ব্লুমফন্টেইন টেস্টে ভাল করার। কিন্তু তা কী সম্ভব? মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ মনে করছেন সম্ভব। তিনি বলেছেন, ‘ব্যাটিং নিয়ে খুবই হতাশ। উইকেটটা খুব ভাল ছিল। যেভাবে চেয়েছিলাম ব্যাটিংটা সেভাবে করতে পারিনি। স্কিল কাজে লাগাতে পারিনি। ছোট ভুল করেছি অনেকগুলো। তবে এখনও আমরা আত্মবিশ্বাসী। দ্বিতীয় টেস্টে উইকেট যে রকমই থাকুক আমরা খুব ভাল ব্যাটিং করব। খুব ভালভাবে সিরিজে ফিরে আসব।’ প্রথম টেস্টে গতি আর বাউন্সি উইকেট চেয়েও পাননি প্লেসিস। তাই সমালোচনাও করেছেন। মন্থর, ফ্ল্যাট উইকেট, ব্যাটিং নির্ভর উইকেটেই বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু তাও কোন ছাড় নেই। প্লেসিসের গতি আর বাউন্সি উইকেটই চাই। কিউরেটররাও এবার সেইরকম উইকেটই দেবেন। তাই যদি হয়, তাহলে তো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়বে বাংলাদেশ। পোচেফস্ট্রুমে ফ্ল্যাট উইকেটেই প্রোটিয়া পেসাররা গতি আর বাউন্স দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছেন। সেখানে গতি আর বাউন্স উইকেট পেলে তো খবর আছে। মাহমুদুল্লাহ এসব নিয়ে ভাবতেই রাজি নন। তিনি শুধু নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নেয়ার দিকেই জোর দিয়েছেন, ‘নিজেদের মধ্যে কথা বলেছি। ম্যাচ শেষে (প্রথম টেস্ট শেষে) টিম মিটিংয়ে যেসব বলা দরকার ছিল, যে ভুলগুলো আমরা করেছি সেসব নিয়ে কথা হয়েছে। দিনশেষে সেটা মাঠে কাজে লাগাতে পারব। নিউজিল্যান্ডে সাকিব ডাবল সেঞ্চুরি করেছে, মুশফিক দেড় শ’ রানের ইনিংস খেলেছে। এই ছোট ছোট জিনিসগুলো আমাদের আত্মবিশ্বাস দেয় যে, ওরা যে রকম উইকেটই বানাক আমাদের সেটা দেখার বিষয় নয়। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের স্কিল ভাল, এখন মাঠে যদি কাজে লাগাতে পারি।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘একেক জনের ধরন একেক রকম। অনেকে শুরুতে গিয়ে স্ট্রোক খেলে। শট খেলা দোষের কিছু না। কেউ শট খেলে সেট হয়, সে যদি বাজে বলে ৩/৪টা চার মারতে পারে কেন নয়? তার নিজের খেলাই খেলা উচিত। তবে কন্ডিশনও বিবেচনায় রাখতে হবে এবং সেটা ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভাল ছিল। তবে আগেই বলেছি আমরা আমাদের সামর্থ্য কাজে লাগাতে পারিনি।’ এবার সামর্থ্য কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। কিন্তু সেই কাজে লাগানোর জন্য দলের শক্তিও তো থাকতে হবে। সাকিবকে হারিয়ে শুরুতেই দুর্বল হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। এবার তামিমও নেই। আরও দুর্বল হয়ে পড়ল দল। কিছু করার নেই। ইনজুরিতে পড়া তামিমকে ছাড়াই এখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে খেলতে হবে বাংলাদেশকে।
×