ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বজিত বড়ুয়া

বিদেশী পর্যটকদের প্রয়োজন মেটানো

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৫ অক্টোবর ২০১৭

বিদেশী পর্যটকদের প্রয়োজন মেটানো

সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা সবুজারণ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্বর্গীয় লীলাভূমি আমাদের বাংলাদেশ। বান্দরবনের পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে তুলতুলে মেঘ দেহমন স্পর্শ করে শীতল করে দেয়। সুন্দরবনের কথা সারা পৃথিবীর মানুষের নখ দর্পণে একমাত্র ম্যানগ্রোভ অরণ্যে হাজার রকমের পশু-পাখিসহ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিচরণ ভূমি। সাগরকে যদি বটগাছ বলি তাহলে অসংখ্য নদী বটগাছের শিকড় আঁকড়ে ধরে আছে বাংলাদেশ। কুয়াকাটা সৈকতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশেই অবলোকন করা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। তাছাড়া আছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও পারকি সমুদ্র সৈকত। কেমনে ভুলিব সেন্টমার্টিন দ্বীপের কথা। সেন্টমার্টিন দ্বীপের ওপর তো শকুনরা অনেকবার ছোঁ মেরেছে, নিতে না পারলেও বেশ আঁচর ফেলেছিল। রাঙ্গা মাটির রঙ্গে চোখ জুড়ানো, সাম্পান মাঝির গানে মন ভরাল, রূপের মধু সুরের জাদু কোন সে দেশে, মায়াবতী মধুমতি বাংলাদেশে। কাপ্তাই হ্রদের দু’ধারে অপরূপ দৃশ্য যে দেখেনি সে তো কিছুই দেখেনি। বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পার্বত্য অঞ্চল আর চা-বাগানের সারি সারি চা-কর্মীদের চা-তোলার দৃশ্য দেখে ভ্রমণপিপাসুরা আনন্দ পাবে না বা সেলফি তুলবে না এতো চিন্তাই করা যায় না। আরও বলা যায়, সিলেটের মাধবকুণ্ডের ঝর্ণা, রাঙ্গামাটির সুভলং ঝর্ণা ও বান্দরবনের ঋজুক ঝর্ণার কথা বলতে পারি। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পাহাড়, মহেষখালীর আদিনাথ পাহাড়ের কথা তো না বললেই নয়। প্রাচীন ঐতিহ্য পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়, ময়নামতিসহ অনেক প্রাচীন নিদর্শন বিদেশী পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ইতোমধ্যে সক্ষম হয়েছে। দেশে এত কিছু আছে তবু আমাদের পর্যটন অবহেলিত কেন! তা আমাদের ঠা-া মাথায় চিন্তা করতে হবে। বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণে আমাদের কিছু ঘাটতি আছে তা দূর করতে হবে। তাহলো প্রথমে পর্যটকদের নিরাপত্তা, থাকা-খাওয়া ও যাতায়তের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশী পর্যটকরা যেন অবাধে চলাফেরা করতে পারে সেজন্য বিশেষ করে প্রতিটি সমুদ্র সৈকতে বিদেশীদের জন্য আলাদা জোন করতে হবে, সেখানে অবাঞ্ছিত কোন লোক যেন প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে; তবে বাংলাদেশীরা প্রবেশ করতে পারবেন যাদের টিন সার্টিফিকেট বা নিদির্ষ্ট কার্ড থাকবে। সোজা কথা বিদেশীদের জন্য উপযোগী সব সুবিধা রাখতে হবে। বিদেশী পর্যটকরা যেন কোনভাবে প্রতারিত না হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। তারা কোন প্রকার অভিযোগ করলে তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। তাদের জন্য দূষণমুক্ত সকল প্রকার পানীয় থাকতে হবে। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের অধীনে অথবা অনুমোদিত ট্যুরিস্ট গাইড (কার্ডধারি নারী-পুরুষ) থাকতে হবে। এতে অনেক বেকারের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। আন্তর্জাতিকভাবে বিদেশী পর্যটকদের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আকৃষ্ট করতে হবে। তা যদি পারি; আমাদের দেশ পর্যটন শিল্পে থাইল্যান্ডের চেয়ে শতগুণ এগিয়ে থাকবে। এটাই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বাংলাদেশে পর্যটন শিল্প চিরজীবী হোক। আনোয়ারা, চট্টগ্রাম থেকে
×