ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযোদ্ধা-ফরাশগঞ্জ ম্যাচ নিষ্প্রাণ ড্র

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৪ অক্টোবর ২০১৭

মুক্তিযোদ্ধা-ফরাশগঞ্জ ম্যাচ নিষ্প্রাণ ড্র

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এক দলের অবস্থা বেশ নাজুক। অপর দলের অবস্থা শোচনীয়। এক দল মাঠে নামে টানা ৫ হারের বোঝা মাথায় নিয়ে। অপর দলও টানা ৬ ম্যাচে জয়হীন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র বনাম ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে মঙ্গলবার এই দুই দল মুখোমুখি হয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম খেলায়। খেলার শুরুতে উভয়দলই ৪-৪-২ ফর্মেশনে খেলে। ৯০ মিনিটের নিষ্প্রাণ এই ম্যাচে গোল হয়ে ওঠে দুষ্পাপ্র্য। রেফারি ভারত চন্দ্র গৌড় যখন খেলা শেষ হবার বাঁশি বাজান, তখন দুইদলই পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ছে, অর্থাৎ ০-০ স্কোরলাইনেই শেষ হয়েছে খেলাটি। পুরো ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে মুক্তিযোদ্ধাই। কিন্তু তাদের গোল প্রচেষ্টাগুলো একটাও আলোর মুখ দেখেনি। ফরাশগঞ্জ খেলে কাউন্টার এ্যাটাক কৌশলে। কিন্তু তাদের এই কৌশলও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তবে নিজেদের চেয়ে শক্তিমত্তায় এগিয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধাকে রুখে দিয়ে আত্মতৃপ্তি পেতেই পারে আবু ইউসুফের শিষ্যরা। মাসুদ পারভেজের মুক্তিযোদ্ধাকে রুখে দেয়াটাও কম কৃতিত্বের নয়। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে চলমান লীগে ফরাশগঞ্জ ‘সবেধন নীলমণি’ যে জয়টি পেয়েছে তা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীকে (১-০) হারিয়ে। সেই ঘটনাটা নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ঘটিয়েছিল তারা। এরপর থেকেই যেন ‘শনির দশা’ ভর করে দলটির ওপর। নিজেদের নবম ম্যাচে এটা ‘অল রেড’ খ্যাত এবং দুইবারের লীগ চ্যাম্পিয়ন মুক্তিযোদ্ধার প্রথম ড্র। ৭ পয়েন্ট তাদের। পয়েন্ট টেবিলে একধাপ উন্নতি ঘটলো তাদের। দশম থেকে উঠে এলো নবম স্থানে। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে এটা পুরনো ঢাকার ক্লাব ফরাশগঞ্জের দ্বিতীয় ড্র। ৫ পয়েন্ট নিয়ে তাদের আপাতত উন্নতি হয়েছে একধাপ। আগে তারা ছিল পয়েন্ট টেবিলের একেবারে তলানিতে (১২ দলের মধ্যে দ্বাদশ)। এখন তারা একাদশ স্থানে। পেছনে ঠেলে দিল ব্রাদার্স ইউনিয়নকে। ব্রাদার্সেরও পয়েন্ট ৫। তবে গোল গড়ে এগিয়ে থাকায় ফরাশগঞ্জই (-৯) আছে গোপীবাগের দলটির (-১০) দলটির ওপরে। ৩ মিনিটে ফরাশগঞ্জের বক্সে বল পায় মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু সময় বেশি নিয়ে নেয়ায় গোলের সহজ সুযোগ হাতছাড়া হয় তাদের। বল চলে যায় প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের পায়ে। ১৪ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে লম্বা পাসে বল বাড়িয়ে দেন আব্দুল মালেক। বক্সে বল পেয়ে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন জাকি সারহান। ঝাঁপিয়ে পড়েন গোলরক্ষক বোরহান উদ্দিন। বল তার হাতে লেগে ডান পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় মাঠের বাইরে। পরের মিনিটেই আবারও পোস্টের কাছে বল পেয়ে লাফিয়ে উঠে হেড করেন সারহান। তবে বলের নাগাল পাননি তিনি। ১৮ মিনিটে মালেকের দূরপাল্লার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৮ মিনিটে বক্সের প্রায় দশ গজ দূরে ফ্রি কিক পায় মুক্তিযোদ্ধা। সারহান ডামি করেন, লম্বা শট নেন মালেক। বল অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে সতীর্থের উঁচিয়ে দেয়া বল পোস্টের খুব কাছে পেয়ে হেড নেন মুক্তির মনির আলম। কিন্তু বলে মাথা সংযোগ ঘটাতে পারেননি। ৫৭ মিনিটে বক্সের বাইরে বল পান মুক্তিযোদ্ধার ঘানাইয়ান ডিফেন্ডার আব্বাস ইনুশা। গোলপোস্ট লক্ষ্য করে জোরালো শট নেন তিনি। কিন্তু সেই শট ফিস্ট করে দলকে রক্ষা করেন ফরাশগঞ্জের গোলরক্ষক বোরহান উদ্দিন। ৬৫ মিনিটে মুক্তির মিসরীয় ফরোয়ার্ড ইসিয়ান মোঃ জাকি সারহান বক্সের বাইরে বল পেয়ে দুর্বল শট নিলে তা গ্রিপে নিতে কোন ঝামেলায় পড়তে হয়নি বোরহানকে। ৭৪ মিনিটে মুক্তির মিডফিল্ডার দিদারুল আলম ফরাশগঞ্জের ডি-বক্সের মধ্যে মাইনাস করেন। অপর মিডফিল্ডার সৈকত মাহমুদ মুন্না শট নেন পোস্ট লক্ষ্য করে। তবে সেই শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হতাশা বাড়ে মুক্তি শিবিরের। ৮৩ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেই ফরাশগঞ্জের ডি-বক্সের ভেতরে যে উঁচু মাইনাস ফেলেন মিডফিল্ডার এনজোকে ইজিকে কলিন্স, তা থেকে মিডফিল্ডার মতিউর রহমানের বিপজ্জনক হেডটি অল্পের জন্য পোস্টে ঢোকেনি। বারপোস্ট ছুঁয়ে সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৮৭ মিনিটে ফরাশগঞ্জের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড চিনেদু ম্যাথিউ বক্সে ঢুকে গড়ানো তীব্রগতির যে শটটি নেন তা পোস্টের সামান্য দূর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে গেলে আক্ষেপে পোড়ে ‘লালকুঠি’রাও।
×