ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে ফেরার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেবে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৪ অক্টোবর ২০১৭

দেশে ফেরার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেবে আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান শেষে দেশে ফেরার পর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে নাগরিক গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। হযরত শাহজাহাল বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভাতৃপ্রতিম সংগঠন প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেবে। আর বিমানবন্দরে দেশবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানাবেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকগণ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে এসব কথা জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংকালে প্রধান বিচারপতির এক মাসের ছুটি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধান বিচারপতির বিষয়টিতে আইনমন্ত্রী সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। এখানে বারবার কথা বলার প্রয়োজন নেই। যে মানুষ অসুস্থ, এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার। আমাদের সংবিধান কারও অসুস্থতায় কী ব্যবস্থা নিতে হবে সে বিষয়টি ৯৭ ধারায় পথরেখা করে দিয়েছে। কাজেই সেভাবেই হবে। এখানে অস্বাভাবিক কিছু নেই। এটা আন্দোলনের বিষয় নয়, আইনগত বিষয়। তিনি বলেন, যে দল (বিএনপি) থেকে এ অভিযোগ করা হচ্ছে সেই দলের নেত্রী (খালেদা জিয়া) কী কারণে এতদিন বিদেশে আছেন? অসুস্থতার কথাই তো বলেছিলেন। সময় ছিল দুই মাস। এখন দুই মাস পেরিয়ে তিন মাস, তিন মাসের পরেও আরও কয়েকদিন। তিনি এখনও এলেন না। লন্ডনে বসে বেগম জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান কীী ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন, তা জাতি জানতে চায়। এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তদন্তে সাহায্য করার জন্য স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড, এমআই সিক্সসহ ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আমরা অনুরোধ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণসংবর্ধনা প্রদান প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় যে সাহসের পরিচয় দিয়েছেন, এর মাধ্যমে তিনি পুরো দুনিয়ায় বিপন্ন মানবতার বাতিঘরে পরিণত হয়েছেন। তাই জনগণের যে আকুতি, নেত্রী দেশে ফিরে এলে দেশবাসীর পক্ষে বিশিষ্ট নাগরিকরা তাকে সংবর্ধনা দিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাবেন এবং চলার পথে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে যানজট না ঘটিয়ে এবং মানুষের চলাচলে বিঘœ না ঘটিয়ে সাধারণ মানুষ তাকে সংবর্ধনা জানাবে। এ সময় তিনি বলেন, আমরা নেত্রীর জন্য গর্বিত, গোটা জাতি গর্ববোধ করছে। আমরা যদি তাকে স্বাগত না জানাই, সেটা আমাদের বিবেককে কষ্ট দেবে, আমাদের অনুভূতিতে আঘাত হবে। ঢাকাবাসী সংবর্ধনা দিতে রাস্তায় দাঁড়াবেন এটাই আমরা আশা করি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটে আজ সারা দুনিয়ায় আলোড়ন, সে আলোড়ন বিএনপি চেয়ারপার্সনের মধ্যে পেলাম না। সঙ্কটের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের দল আওয়ামী লীগ, আমি নিজেও শেখ হাসিনার নির্দেশে রোহিঙ্গাদের মাঝে পড়ে আছি। লোক দেখানো ফটোসেশনের জন্য তাদের দলের (বিএনপি) কেউ কেউ গেলেন। আমি সেখানে ২০ দিন ছিলাম আর মির্জা ফখরুল সাহেব গেলেন মাত্র একদিন। আর একদিন গিয়েও শুধু অভিযোগ করা। সারা দুনিয়া বলছে সরকার সফল আর বিএনপি বলছে সরকার ব্যর্থ। দেশের জনগণ বলছে এ সঙ্কটে সময়োচিত নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। কিন্তু এ প্রশংসা বিএনপি করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নেতিবাচক রাজনীতি করতে করতে বিএনপি যেভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, তাতে আমার কাছে মনে হয় কখন যে এ দলটিকে লাইফ সাপোর্টে যেতে হয়। সে অবস্থায় আসতে এ দলের বেশি বাকি নেই। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া পাঁচ দফা প্রস্তাব সারা দুনিয়ায় সমাদৃত ও প্রশংসিত হয়েছে। সে কারণে বিশ্ব জনমতের চাপে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর আউং সান সুচির একজন মন্ত্রী বাংলাদেশে এসেছে। বৈশ্বিক চাপের মুখে মিয়ানমারের মন্ত্রীর নরম সুর আর ওই দেশের রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের অবস্থানগত পরিবর্তন শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের পরিচয়। তিনি (শেখ হাসিনা) জাতিসংঘসহ সারাবিশ্বের নেতাদের বোঝাতে পেরেছেন এটা গণহত্যা, জাতিগত নিধন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দুটি দেশ ছাড়া সব দেশই এটাকে সমর্থন করেছে। এ দুটি দেশ সরাসরি সমর্থন না করলেও তাদের একটা সহানুভূতির সুর দেখা গেছে। তাদের এ অবস্থান শেষ কথা বলে মনে করছি না। আগামী ৭ অক্টোবর দেশে ফেরার দিন লাখো মানুষের ঢল নামিয়ে গণসংবর্ধনা সফল করতেই আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের সঙ্গে এ যৌথসভার আয়োজন করা হয়। ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেনÑ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ড. আব্দুর রাজ্জাক, মুহাম্মদ ফারুক খান, মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একেএম এনামুল হক শামীম, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ড. হাছান মাহমুদ, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, শাম্মী আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুস সবুর, আমিনুল ইসলাম আমিন, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রমুখ।
×