ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভিত্তি হবে ’৯২ সালের যৌথ ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৪ অক্টোবর ২০১৭

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভিত্তি হবে ’৯২ সালের যৌথ ঘোষণা

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে ১৯৯২ সালের যৌথ ঘোষণা ভিত্তি হবে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার। মঙ্গলবার মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। সোমবার ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর আউং সান সুচির দফতরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ের বৈঠকের বিষয়ে এ বিবৃতি দেয় মিয়ানমার। ১৯৯২ সালের দুই দেশের মধ্যকার যৌথ ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে নিবন্ধিত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের বৈধ কাগজপত্রসহ ফিরতে পারবে রাখাইনে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানামরের মন্ত্রী দেশটির স্টেট কাউন্সিলর আউং সান সুচির ১৯ সেপ্টেম্বর দেয়া প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সুচির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের যাচাই ও প্রত্যাবাসনে প্রস্তুত রয়েছে। ১৯৯২ সালের ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যৌথ ঘোষণা অনুসারে তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে। এ যৌথ ঘোষণা অনুসারে ১৯৯২ থেকে ২০০৫ সালের জুলাই পর্যন্ত দুই লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৫ জনকে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, বৈঠকে মিয়ানমারের মন্ত্রী ২০০০ সালের ১৪ জানুয়ারি ইয়াঙ্গুনে অনুষ্ঠিত দুই দেশের সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যকার বৈঠকের চুক্তির বিষয়ও তুলে ধরেন বলে জানানো হয়। এতে আরও বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে এ ইস্যুগুলো উভয় দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে বন্ধুত্বপূর্ণ উপায়ে দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান সম্ভব। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর দফতরের বিবৃতি অনুসারে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয় দেশের ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি আরসাকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সাধারণ শত্রু বলে উল্লেখ করে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথাও জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকের শেষদিকে মিয়ানমারের মন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নেপিডো সফরের আমন্ত্রণ জানান। সীমান্ত সুরক্ষা, ১৯৯২ সালের এপ্রিলের যৌথ বিবৃতি অনুসারে যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমার ফিরতে চায়, তাদের যাচাইকরণ বিষয়ে পদক্ষেপ চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশের মন্ত্রীকে এ সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। বৈঠকের পর একটি মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন মিয়ানমারের মন্ত্রী। এতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন। এতে বিস্তারিত আলোচনার জন্য বাংলাদেশের মন্ত্রীকে মিয়ানমার সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, আলোচনা বন্ধুত্বপূর্ণ ও উষ্ণ ছিল। সোমবার রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন মিয়ানমারের মন্ত্রী তিন্ত সোয়ে। বৈঠকের বিষয়ে মিয়ানমারের মন্ত্রী ঢাকায় কোন মন্তব্য না করলেও একদিন পর দেশটির স্টেট কাউন্সিলরের দফতর থেকে আনুষ্ঠানিক এ বিবৃতি দেয়া হলো।
×