ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের অর্থমন্ত্রী ঢাকায়, সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তি সই আজ

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ৪ অক্টোবর ২০১৭

ভারতের অর্থমন্ত্রী ঢাকায়, সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তি সই আজ

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি তিন দিনের সফরে মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছেন। মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে ভারতের একটি বিশেষ বিমানে ঢাকার কুর্মিটোলায় বিমানবাহিনীর ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে পৌঁছান ভারতীয় অর্থমন্ত্রী। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তাকে স্বাগত জানান। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের আমন্ত্রণে ঢাকায় এসেছেন অরুণ জেটলি। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর থেকে অরুণ জেটলিকে নিয়ে যাওয়া হয় সোনারগাঁও হোটেলে। এ সফরে তিনি সেখানেই থাকবেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় হোটেলেই এফবিসিসিআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেন ভারতের অর্থমন্ত্রী। ভারতের অর্থ সচিব সুভাষ চন্দ্র গর্গসহ কয়েকজন উর্ধতন কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের ৩০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ সফরে অরুণ জেটলির সঙ্গে রয়েছে। এ সফরে তৃতীয় দফায় বাংলাদেশকে ভারতের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার (আনুমানিক ৩৬ হাজার কোটি টাকা) ঋণ দেয়ার বিষয়ে চুক্তি হবে বলে ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বাংলাদেশের জন্য সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের ঘোষণা দেয়া হয়। আজ বুধবার দুই অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তৃতীয় দফার এ ঋণচুক্তি বাস্তবায়নে ‘ডলার লাইন অব ক্রেডিট’ চুক্তি সই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ চুক্তি হলে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার পাওয়া বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সুরক্ষার জন্য দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তি নিয়ে যৌথ ব্যাখ্যামূলক নোটও স্বাক্ষরিত হবে। ভারতের অর্থমন্ত্রী এ সফরে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ ও ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্যোগে ‘ভারত সরকারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উদ্যোগ’ বিষয়ে বক্তব্য দেবেন। এছাড়া দুই দেশের অর্থমন্ত্রী যৌথভাবে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ‘ক্যাশলেস ভিসা সার্ভিস’ পরিচালনার নতুন সেবা এবং এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ঢাকা কার্যালয়ের উদ্বোধন করবেন। এর বাইরে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন অরুণ জেটলি। আজ বুধবার ভারত ও বাংলাদেশের দুই অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তৃতীয় ঋণরেখা বাস্তবায়নের জন্য ডলার ঋণরেখা চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে গত ছয় বছরে বাংলাদেশকে ভারতের মোট ঋণরেখা ৮শ’ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে। শুধু তাই নয়, তৃতীয় ঋণরেখা চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন অরুণ জেটলি। দুই অর্থমন্ত্রী ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর এবং ২০১৭ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে গৃহীত অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং উন্নয়ন অংশীদারিত্ব উদ্যোগসমূহের অবস্থা পর্যালোচনা করবেন। চলতি বছরের শুরু থেকেই অরুণ জেটলির সফর নিয়ে ঢাকা ও দিল্লীর মধ্যে আলোচনা চলছিল। গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চে দু’দফা তার ঢাকা সফরের তারিখ প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু উভয়পক্ষের সুবিধাজনক না হওয়ায় ওই সময়ে সফরটি বাস্তবায়িত হয়নি। এবার উভয়পক্ষের সুবিধাজনক তারিখ আবার প্রস্তাব করা হয়। সে অনুযায়ী অরুণ জেটলি ঢাকা এসেছেন। ২০১৪ সালের ২৬ মে ভারতের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর অরুণ জেটলির এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লী সফরের পর ভারতের প্রভাবশালী কোন মন্ত্রী এবার ঢাকায় এলেন। সঙ্গত কারণেই সফরটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগে প্রণব মুখার্জী অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালে ২০১২ সালের ৫ মে ঢাকা সফরে এসেছিলেন। সে সময় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী পালনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন প্রণব মুখার্জী। পরবর্তীতে প্রণব মুখার্জী রাষ্ট্রপতি হন।
×