ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

সৈয়দ শামসুল হককে নিবেদিত আবৃত্তিসন্ধ্যা ‘বাল্যপ্রেম’

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ৪ অক্টোবর ২০১৭

 সৈয়দ শামসুল হককে নিবেদিত আবৃত্তিসন্ধ্যা ‘বাল্যপ্রেম’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবিতার আশ্রয়ে স্মরণ করা হলো সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে। তারই রচিত কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে জানানো হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। শরত সন্ধ্যায় উঠে এলো তার রচিত কবিতার পঙ্ক্তিমালা। উচ্চারিত হলো সৈয়দ হক রচিত ‘বাল্যপ্রেম’ কবিতার বার্তাবহ চরণগুলোÑ ‘বালকেরা জন্ম নেয়, বালিকারা জন্ম পেয়ে থাকে।/ বালিকারা জন্ম নেয় বেতুল বেভুল এক বনে/ বালকেরা জন্ম নেয়, জন্ম নেয়া বলা হয় যাকে।/ জন্মনাড়ি ছিঁড়ে যায় বালিকার নারীর জীবনে’। সেই বাল্যপ্রেম কবিতার আশ্রয়ে বিশেষ আবৃত্তি প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে আবৃত্তি সংগঠন মুক্তবাক। প্রযোজনাটির মঞ্চায়ন হলো মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে এ আবৃত্তিসন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। রাজধানীর কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে আবৃত্তি প্রযোজনা শুরুর আগে ছিল সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব। এতে আলোচনা করেন কবির জীবনসঙ্গী কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক আশরাফুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ রেজা ও আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য বেলায়েত হোসেন। সভাপতিত্ব করেন মুক্তবাকের নির্বাহী প্রধান ইকবাল খোরশেদ। কবির স্মৃতির প্রতি এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ আয়োজন। এর পর অতিথি ও বাচিকশিল্পীরা কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে। আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, জীবনে বিশাল একটা সময় একসঙ্গে কাটিয়েছি। তাকে কখনো হৈ-চৈ করতে দেখিনি। নীরবে নিভৃতে কাজ করে গেছেন। তার কবিতা ছিল অনন্য। তার অনেক কবিতা আমার নিজেরও পড়া হয়নি। এখন যখন পড়ছি তখন বিস্মিত হচ্ছি। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের অনেককিছু আহরণ করে তিনি নিজের ভাষায় লিখেছেন। আশরাফুল আলম বলেন, কিছু মানুষ চলে যাওয়ার পরেও থেকে যান, সৈয়দ হক তেমনই একজন মানুষ। তার কবিতার একটি বিশেষত্ব রয়েছে, তার কবিতা এককভাবে নাগরিক কবিতা বা গ্রামীণ কবিতা মনে হয়নি। এ দুইটির সমন্বয়ে কবিতা উজ্জ্বল হয়ে আছে। তার মতো তার কবিতা আর কেউ আবৃত্তি করতে পারতেন না। বেলায়েত হোসেন বলেন, তিনি এভাবে চলে যাবেন, কখনও ভাবিনি। খুব মনে পড়ছে তার আশিতম জন্মবার্ষিকীর দিনটির কথা। সেদিন তিনি বলেছিলেন, আমার অনেক কাজ এখনও বাকি। সেগুলো শেষ করে যেতে চাই। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হয়নি। সৈয়দ হকের ‘বাল্যপ্রেম’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন আশরাফ আলী সরকার লিখন, অদিতি অমৃতারাজ, কৃষ্ণা পাল, রায়হান হায়দার রঞ্জন, ইরা মাহফুজা ও মোঃ আসাদুজ্জামান। প্রযোজনাটি নির্দেশনা দিয়েছেন ইকবাল খোরশেদ। আবহ সঙ্গীতে ছিলেন অনিন্দ্য মাহাদী। ‘মহাত্মা’ নাটকের মঞ্চায়ন সোমবার ছিল ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন। তার জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী দিনটি পালিত হয় বিশ্ব অহিংসতা দিবস হিসেবে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে নাট্যদল ইউনিভার্সেল থিয়েটার মঞ্চস্থ করে মহাত্মা গান্ধীর নোয়াখালী সফর ও অহিংস পথের যাত্রা নিয়ে নাটক ‘মহাত্মা’। প্রযোজনাটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন মাজহারুল হক পিন্টু। নাটকটির কাহিনীতে দেখা যায়, উপমহাদেশের রাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্তের জটিল ক্রমধারায় ১৯৪৬ সালের ১০ অক্টোবর নোয়াখালীতে দাঙ্গা বেধেছিল। ভারতবর্ষের সাম্প্রদায়িক ঐক্যকে বিনষ্ট করার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল এর পেছনে। সুবিধাবাদী ও ধর্মান্ধরা সামরিক আক্রমণের কায়দায় সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে। সেতু, রাস্তা, ডাকঘর নষ্ট করে। নানাভাবে আগুন লাগায় গ্রামের পর গ্রামে। ব্যাপক লুট, নরহত্যা, নারীহরণ, নারী নির্যাতন করা হয়। সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা মহাত্মা গান্ধীর কাছে যখন এ সংবাদ পৌঁছায় তখন তিনি অসহায় মানুষের চিন্তায় অস্থির হয়ে ওঠেন। মাত্র দুজন সঙ্গী নিয়ে অসুস্থ শরীরেই রওনা হন নোয়াখালীর উদ্দেশে। গান্ধীজী স্মরণ করিয়ে দেন যে, আমরা নিছক পশু নই- আমরা মানুষ। গান্ধীজী সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘোর অন্ধকারের মধ্যে অহিংসার আলোর সন্ধানে নামলেন। নাটকটি প্রসঙ্গে ইউনিভার্সেল থিয়েটারের সভাপতি আজিজুল পারভেজ বলেন, গান্ধীজীর অহিংস পৃথিবীর অনন্ত যাত্রায় কোথায় আজ আমাদের অবস্থান? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সমকালীন প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ইতিহাসের সেই অবিস্মরণীয় অধ্যায়ের একটি অংশের রূপক ঘটনার ভেতর দিয়ে নাটক ‘মহাত্মা’। হলিউডে প্রদর্শিত হবে ‘এ লেটার টু গড’ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার জানান, তরুণ নির্মাতা সাদীকুর রহমান (হেমন্ত সাদীক) নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘এ লেটার টু গড’ হলিউডে অনুষ্ঠিতব্য রিল টু রিল-গ্লোবাল ইউথ ফেস্টিভালে প্রদর্শিত হবে। হেমন্ত সাদীক ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সংবাদ জানানো হয়। এতে বলা হয়, আগামী ৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের লসএ্যাঞ্জেলেস স্কুলে অনুষ্ঠিত হবে এ প্রতিযোগিতা। উৎসব কমিটি জানিয়েছে, বিশ্বের ২০০ তরুণ নির্মাতার ২০০ চলচ্চিত্র থেকে ২২টি চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে প্রদর্শনের জন্য, যেখানে এ লেটর টু গড ‘এ্যাওয়ার্ড উইনিং’ তালিকায় রয়েছে। এছাড়া আগামী ৭-১১ নবেম্বর নরওয়েতে অনুষ্ঠিতব্য রিঙ্গেরিক ইন্টারন্যাশনাল ইউথ ফিল্ম ফেস্টিভালে এ লেটার টু গড প্রদর্শিত হবে। উৎসবের দাফতরিক ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৮০০’র বেশি তরুণ নির্মাতার চলচ্চিত্র থেকে নির্বাচিত সেরা ৩০ তরুণ নির্মাতাকে এ উৎসবে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উৎসবে বাংলাদেশ থেকে নিজের নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ কর্মশালায় অংশ নেবেন পরিচালক হেমন্ত সাদীক। অপরদিকে আগামী ৯ নবেম্বর ইতালির সিত্তাদেল্লাতে অনুষ্ঠিতব্য জিয়ো ফিল্ম ফেস্টিভাল এ্যান্ড এক্সপোতে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে চলচ্চিত্রটি। এর আগে মরক্কো, ফিলিপিন্স ও মেক্সিকোর চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়।
×