ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রয়োজনে রোহিঙ্গাদের জন্য একবেলা খাব ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ৩ অক্টোবর ২০১৭

প্রয়োজনে রোহিঙ্গাদের জন্য একবেলা খাব ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্দশাগ্রস্ত মিয়ানমারবাসী রোহিঙ্গাদের জন্য তার সরকারের বাসস্থান, খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুবিধাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেছেন, দেশের মানুষ যদি প্রয়োজন হয় দিনে এক বেলা খেয়ে আরেক বেলার খাবার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করবে। খবর বাসস’র। রবিবার সন্ধ্যায় রিট্জ কার্লটন হোটেলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেট থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, যদি আমরা ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করতে পারি, তবে প্রয়োজনে রোহিঙ্গাদের দুর্দিনে আরও পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করতে পারব। আমরা দিনে একবেলা খেয়ে আরেক বেলার খাবার এই দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খাব। তিনি বলেন, আমরা মানুষ, আমরা মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও আমরা ধনী না, তবে আমাদের মন আছে... তারাও মানুষ, আমরা তাদের সাগরে ছুড়ে ফেলে দিতে পারি না। শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭২তম অধিবেশনে যোগদানের পূর্বে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন এবং সেখানকার নারী ও শিশুদের মুখ থেকে শোনা তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা অধিবেশনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা অসহায় রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ‘ভাসানচর’-এ স্থানান্তর করা হবে। বেসামরিক প্রশাসন এবং সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও তার দলের স্বেচ্ছাসেবীরা এসব মানুষের কষ্ট লাঘবে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বিদেশী সাহায্যের জন্য অপেক্ষা না করে আমরা নিজেরাই রোহিঙ্গাদের থাকা, খাওয়া এবং ওষুধপত্রসহ চিকিৎসেবার ব্যবস্থা করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি প্রাথমিকভাবে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় পাঁচ কোটি টাকা দিয়েছেন। বিপুলসংখ্যক অসহায় মানুষকে বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশ সরকারের উদারতায় মুগ্ধ। তিনি বলেন, তার সরকার সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযান শুরু করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থা এসব ভয়াবহ ঝুঁকিকে সমূলে উৎপাটনে পরস্পরকে নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ভুল পথ থেকে যুবসমাজকে দূরে রাখতে তাদের শেখানো ও বোঝানোর জন্য এবং অভিভাবক, শিক্ষক ও মসজিদের ইমামসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে অনুপ্রেরণা দেয়ার জন্য ডিভিও কনফারেন্স করেন। মানুষ এখন সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ এবং মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল পর্যায় থেকে শিক্ষা গ্রহণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অব্যাহত রাখার জন্য অর্থনৈতিক প্রণোদনা হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে এক কোটি ৩০ লাখ শিশুর মায়েদের মাঝে অর্থ বিতরণ করা হচ্ছে। সরকার উচ্চশিক্ষার জন্যও শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করছে। সরকার প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগের জন্য ১শ’টি অর্থনৈতিক জোন সৃষ্টি করছে। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অবস্থানস্থল থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি আবক্ষ প্রতিকৃতি উন্মোচন করেন। বিখ্যাত ভাস্কর স্টিফেন ওয়াইজম্যান ব্রোঞ্জের এ প্রতিকৃতিটি তৈরি করেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও দূতাবাসের অন্য কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আজ ওয়াশিংটন ত্যাগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশের পথে বাংলাদেশ সময় আজ মঙ্গলবার সকালে লন্ডনের উদ্দেশে ওয়াশিংটন ত্যাগ করবেন। যুক্তরাষ্ট্রে তার ১৪ দিনের সরকারী সফর শেষে ওয়াশিংটন সময় সোমবার রাত ১০ টায় তিনি যাত্রা শুরু করেন। খবর বাসসর।
×