ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মডেলের ছবিতেও থাকতে হবে সতর্কতা

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ১ অক্টোবর ২০১৭

মডেলের ছবিতেও থাকতে হবে সতর্কতা

মডেলের শারীরিক সৌন্দর্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে যে প্রায়শই তার ছবির কিছু কিছু জায়গায় কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিবর্তন ঘটানো হয়, সেটা তো আর গোপন কিছু নয়। প্রতিনিয়ত এমন বিজ্ঞাপন আমাদের চোখে পড়ে যেখানে মডেলকে আরও স্লিম, দীর্ঘকায়, সরু ও লম্বা পায়ের অধিকারী, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি আরও মসৃণ ত্বক, বড় বড় চোখ এবং শরীরের কোথাও কোথাও বাঁক সৃষ্টি করে তাকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বিশেষ কিছু সফটওয়্যারের মাধ্যমে ছবিতে এসব পরিবর্তন ঘটানো হয়। কিন্তু ফ্রান্সে আজ (রবিবার) বিজ্ঞাপনের ছবিতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এ ধরনের কোন পরিবর্তন আনা হলে এ বিষয়ে ভোক্তাদের সতর্ক করে দিতে হবে; যেমনটা লেখা থাকে সিগারেটের প্যাকেটে। অর্থাৎ বিজ্ঞাপনে মডেলের ফিগার পাল্টানোর ফাঁকি আর চলবে না। নতুন আইনে বলা হয়েছে, এ ধরনের বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট করে লিখে দিতে হবে, ‘সম্পাদিত ছবি’ এই বার্তাটি। এই আইন ভঙ্গ করলে তার ৩৭,৫০০ ইউরো কিংবা বিজ্ঞাপনটি তৈরি করতে যত খরচ হয়েছে তার ৩০ শতাংশ গুনতে হবে জরিমানা হিসেবে। কর্মকর্তারা বলছেন, জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এ ধরনের কৃত্রিম ছবি তৈরি বন্ধ করতেই সরকারের এই উদ্যোগ। তারা বলছেন, এসব ছবি দেখে মানুষ যাতে অতিরুগ্ন হওয়া এবং ওই মডেলের মতো শারীরিক সৌন্দর্যের অধিকারী হতে বেপরোয়া না হয়ে নিজেদের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে সে লক্ষ্যে নতুন আইনটি কার্যকর হতে যাচ্ছে। ফরাসী স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, শরীরের এসব অবাস্তব ছবি দেখে অল্প বয়সী ছেলেমেয়ের আত্মবিশ্বাস ও নিজের প্রতি সম্মান নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে তাদের শারীরিক ক্ষতিও হতে পারে। বিজ্ঞাপনে মডেলের ফিগারকে আকর্ষণীয় করে তোলা হয় প্রযুক্তির মাধ্যমে কারণ, ফরাসী তরুণ-তরুণীর কাছে স্লিম হতে পারে তাদের ধ্যান-জ্ঞানের মতো। দেশটিতে প্রচুর মানুষ ক্ষুধাহীনতার মতো অসুখে ভুগছে এবং ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সেই মানুষের বিএমআই সবচেয়ে কম। ফ্রান্সই যে পৃথিবীর একমাত্র দেশ যারা আইনটি প্রয়োগ করতে যাচ্ছে তা নয়, ইসরাইলেও এ ধরনের একটি আইন কার্যকর আছে। স্লিম ও মোটা মানুষের প্রতি লোকজনের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন তার ওপর একটি বই লিখেছেন ফরাসী লেখক গ্যাব্র্রিয়েল দেদিয়ার। বইতে তিনি লিখেছেন, মোটা হওয়ার কারণে একটি স্কুলে তাকে চাকরি হারাতে হয়েছে। আরেক জায়গায় চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে তাকে শুনতে হয়েছে মোটা মানুষের ঘিলু কম। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নতুন আইন কি শরীরের প্রতি ফরাসী মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলে দিতে পারবে? অনেকেই এটা মানতে রাজি নন। এ রকমই একজন ব্রিটেনের টম কুইন। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি বেসরকারী সংস্থায় কাজ করেন তিনি। তিনি বলেন, ফটোশপ করা ছবি খাওয়া-দাওয়া সমস্যা সৃষ্টি করতে পাওে, বিষয়টা এত সহজ-সরল নয়। অনেকেই আছেন এ ধরনের সম্পাদিত ছবি দেখার পর তাদের আত্মবিশ্বাস ও প্রেরণা কমে যায়। বিবিসি অবলম্বনে
×