ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

২ বছরে পুঁজিবাজারবিষয়ক ৯ মামলা ট্রাইব্যুনালে

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ১ অক্টোবর ২০১৭

২ বছরে পুঁজিবাজারবিষয়ক ৯ মামলা ট্রাইব্যুনালে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারবিষয়ক ট্রাইব্যুনাল গঠনের ২ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও বিচার কাজ পরিচালনা করার মতো মামলা এসেছে মাত্র ৯টি। যদিও শেয়ারবাজার-সংক্রান্ত মামলার অভাব নাই। এমতাবস্থায়, শেয়ারবাজারবিষয়ক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে ট্রাইব্যুনালটি গঠন করার উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের জুন মাসে কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে ২৪টি মামলা ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। এর মধ্যে ৬টি মামলার পূর্ণ ও ১টি মামলার আংশিক রায় হয়েছে। বিচারিক ক্ষমতা না থাকায় ২টি মামলা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফেরত দেয়া হয়েছে। ২টি মামলার পূর্ণ ও ১টি মামলার আংশিক বিচার কাজ চলছে। আর ১৩টি মামলা উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। অর্থাৎ ট্রাইব্যুনালে মামলা ২৪টি আসলেও বিচার কাজ পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সে সংখ্যা ৯টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মোট ৫৩৫টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জেনারেল সার্টিফিকেট কোর্টে ২৫৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তবে সার্টিফিকেট মামলাগুলো বিচার প্রচলিত আদালতে হবে। এ হিসাবে এখন পর্যন্ত দায়ের করা আড়াই শ’র বেশি মামলা পুঁজিবাজার ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি হওয়ার কথা। কিন্তু প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না থাকার কারণে ট্রাইব্যুনালে এসব মামলা স্থানান্তরিত হচ্ছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে ট্রাইব্যুনাল গঠনের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, শেয়ার কেলেঙ্কারির মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। এ কারণে ট্রাইব্যুনালে মামলাগুলো যাতে স্থানান্তরিত হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। বিএসইসির অপর সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, যদি ট্রাইব্যুনাল মামলা শূন্য হয়ে পড়ে, তাহলে এটি শেয়ারবাজারের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ সাইফুর রহমান বলেন, যেগুলো ক্রিমিন্যাল কেস, শুধু সেগুলোই ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে। যেসব মামলার ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে সেসব মামলা ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে বিএসইসি। এ ক্ষেত্রে আমাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। বিএসইসির প্যানেল আইনজীবী মাসুদ রানা বলেন, শেয়ারবাজারবিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এখন ২টি মামলার পূর্ণ ও ১টি মামলার আংশিক বিচার কাজ চলছে। বিচার কাজের জন্য আসা ২৪টা মামলার মধ্যে ৬টির পূর্ণ রায় ও ১টি মামলার আংশিক রায় সম্পন্ন হয়েছে।২০১৫ সালের ২১ জুন শেয়ারবাজারবিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। বিচারিক কার্যক্রম শুরুর পর প্রথম রায় ঘোষণা করা হয় একই বছরের ৩ আগস্ট। ওই রায়ে ফেসবুকে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রচারের দায়ে মাহবুব সরোয়ারকে ২ বছরের কারাদ দেয় ট্রাইব্যুনাল। এরপরে ২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেকট্রোডের (বর্তমান নাম বিডি ওয়েল্ডিং) শেয়ার কেলেঙ্কারির মামলায় কোম্পানির ব্যবস্থাপনা নুরুল ইসলাম ও ইংরেজী দৈনিকের সম্পাদক এনায়েত করিমকে ৩ বছরের কারাদ ও ২০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে ট্রাইব্যুনাল। ৩১ আগস্ট ১৯৯৬ সালের চিক টেক্স শেয়ার কেলেঙ্কারির মামলায় কোম্পানির এমডি মাকসুদুর রসুল ও পরিচালক ইফতেখার মোহাম্মদকে ৪ বছর করে কারাদ ও ৩০ লাখ টাকা করে জরিমানার রায় ঘোষণা করা হয়। ২৫ অক্টোবর প্লেসমেন্ট কেলেঙ্কারির মামলায় একমাত্র আসামি সাত্তারুজ্জামান শামীমকে ও ৩০ নবেম্বর সাবিনকো শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলায় কোম্পানির সাবেক এমডি কুতুব উদ্দিনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। আর ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল সিকিউরিটিজ প্রমোশন এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের (এসপিএম) শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শেলী রহমান ও গ্রাহক সৈয়দ মহিবুর রহমানকে ২ বছর করে কারাদ এবং ১৫ লাখ টাকা করে আর্থিক জরিমানা করা হয়। এছাড়া সর্বশেষ চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ মামলায় কোম্পানিটিসহ এম এ রউফ চৌধুরী ও সাঈদ এইচ চৌধুরীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
×