ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে ফিরে এসেছে হারিয়ে যাওয়া আউশ ধান

প্রকাশিত: ২২:৩১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

টাঙ্গাইলে ফিরে এসেছে হারিয়ে যাওয়া আউশ ধান

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ আউশ ধানের পিঠা, পায়েস, চিড়া, মুড়ি, খৈয়ের অতুলনীয় স্বাদ আজও অনেকের জিভে লেগে আছে। হাসিকলমি, কটকতারা, ধারিয়াল, পংখিরাজসহ স্থানীয় নানা জাতের আউশ ধান কর্তনের পর গ্রামের মা-বোনেরা উপাদেয় সেই সব খাবার তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। সেই হারানো আউশ ধানের সুদিন আবার ফিরে আসছে টাঙ্গাইলে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় আবারো এখানকার কৃষকরা আউশ আবাদে ঝুকছেন। আউশ ধান চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন। সত্তর দশকের আগে দেশে আউশ ধানই ছিল প্রধান ফসল। আমন ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। সত্তর দশকের পর সেচ নির্ভর বোরো আবাদের প্রচলন শুরু হয় দেশে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাড়তি মানুষের খাদ্যের জোগান দিতে গিয়ে অধিক উৎপাদনশীল সেচ নির্ভর বোরো ধান চাষে মানুষ ঝুঁকে পড়ে। আর পরিবেশবান্ধব বৃষ্টি নির্ভর ফসল আউশ ধানের চাষ একেবারেই কমে যায়। কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর নির্দেশনায় ও টাঙ্গাইল কৃষি বিভাগের উদ্যোগে আবারো আউশ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে নানা কর্মসূচি গ্রহন করা হয়। চলতি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা সহায়তা হিসেবে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ৩শ’৫০ জন কৃষককে ১শ’৫০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদের জন্য বিনামুল্যে বীজ ও সার প্রদান করা হয়। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় আধুনিক কলাকৌশল ব্যবহার করে সঠিক নিয়মে জমির পরিচর্যা করায় ফলন হয়েছে ভালো। হারিয়ে যাওয়া আউশ ধান নতুন করে আবাদ করে বাড়তি লাভবান হওয়ায় খুশী কৃষকরা। কৃষকরা এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যাস্ত। তারা আগামীতে আরো বেশী জমিতে এ ধান আবাদের কথা ভাবছেন। টাঙ্গাইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ জানান, এ অঞ্চলের কৃষকরা জমিতে বছরে বোরো ও আমন এই দুই ফসল চাষ করতেন। এখন কৃষি বিভাগের পরামর্শে বছরে একই জমিতে বোরো ও আমনের মাঝে আরো একটি বাড়তি ধান আউশ চাষ করছেন। এ ধান চাষে সময় কম লাগে। সেচ খরচ খুবই কম। সারও কম লাগে। ফলনও হয় তুলনামুলক ভালো। চলতি মৌসুমে ১শ’৫০ হেক্টর জমিতে ৬শ’ টন আউশ ধানের উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মুল্য দেড় কোটি টাকা। এটি দেশের বাড়তি একটি আয়। অনেক কৃষকই আগামীতে তাদের জমিতে আউশ ধান আবাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আউশের মতো হারিয়ে যাওয়া অন্যান্য ধানের জাতগুলোও আবার ফিড়িয়ে আনার দাবী জানিয়েছেন।
×