ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ড্যানিয়েলি ওয়াইনার ব্রোমার

ইকুইফ্যাক্সের হ্যাকিং নিয়ে মার্কিনীরা উদ্বিগ্ন নয়

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ইকুইফ্যাক্সের হ্যাকিং নিয়ে মার্কিনীরা উদ্বিগ্ন নয়

বেশিরভাগ আমেরিকান ইকুইফ্যাক্সের সাইবার সিকিউরিটি লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তথাপি তাদের অনেকে নিজেদের রক্ষা করার পদক্ষেপ নেয়নি। গবেষণা প্রতিষ্ঠান এসএসআরএস পরিচালিত এক সমীক্ষায় আমেরিকান গ্রাহকদের জিজ্ঞাস করা হয় তারা এই সিকিউরিটি লঙ্ঘনের কথা শুনেছে কিনা এবং তাদের স্পর্শকাতর তথ্যাবলী চুরি হয়ে থাকতে পারে এই নিয়ে তারা কতটা উদ্বিগ্নবোধ করছে। এর জবাবে দুই-তৃতীয়াংশ আমেরিকান বলেছে যে ইকুইফ্যাক্সের সংরক্ষিত তথ্য হ্যাকাররা হ্যাক করে বের করে নিয়েছে এই খবর শুনে তারা ‘অতিমাত্রায়’ বা ‘কতকটা’ উদ্বিগ্ন। কিন্তু মাত্র ১৯ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছে যে তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হ্যাক করা হয়েছে কিনা তা তারা খুঁজে বের করার পদক্ষেপ নিয়েছে। ইকুইফ্যাক্স ইনকর্পোরেটেড হলো একটি কনজিউমার ক্রেডিট রিপোর্টিং সংস্থা। ইকুইফ্যাক্স বিশ্বব্যাপী ৮০ কোটি কনজিউমারের এবং ৮ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তথ্যাবলী সংগৃহীত করে রাখে। জানা গেছে যে হ্যাকাররা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ইকুইফ্যাক্সের সিকিউরিটি ভেদ করে ১৪ কোটি ৩০ লাখ লোকের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হাতিয়ে নিয়েছে। আমেরিকানদের মধ্যে যারা এই হ্যাকিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে তাদের ৩৬ শতাংশ জানিয়েছে যে তারা তাদের ক্রেডিটের ওপর ফ্রড এ্যালার্ট বসিয়েছে। ইকুইফ্যাক্সের দেয়া ফ্রি ক্রেডিট-মনিটরিং সার্ভিসে নিজেদের নাম তালিকাভুক্ত করেছে মাত্র ২৮ শতাংশ। প্রায় ২০ শতাংশ আমেরিকান বলেছে যে তারা আরেকটি ক্রেডিট মনিটরিং সার্ভিস কিনেছে। আর ২১ শতাংশ জানিয়েছে যে তারা তাদের ক্রেডিট ফ্রিজ করে বা আটকে রেখেছে। ইকুইফ্যাক্সের সিকিউরিটি লঙ্ঘন করে হ্যাকাররা গ্রাহকদের নাম, সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর, জন্মতারিখ এবং ড্রাইভারের লাইসেন্স নম্বর হাতিয়ে নিয়েছে জানার পরও সকল আমেরিকানের মধ্যে ৩১ শতাংশ বলেছে তারা এই ঘটনা নিয়ে ‘খুব বেশি উদ্বিগ্ন নয়’ বা ‘আদৌ উদ্বিগ্ন নয়।’ কে বা কারা হ্যাকিং করেছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৮ জন উত্তরদাতা বলেছে যে, যে সব কোম্পানি গ্রাহকদের ড্যাটা ঠিকমতো রক্ষা করতে পারে না তাদের আরও কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এমন বক্তব্য দলমত নির্বিশেষে সবাই পোষণ করেন। কারণ দেখা গেছে যে ৮১ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ও নির্দলীয় এবং ৭৯ শতাংশ রিপাবলিকান এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত। সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে যে, যা ঘটেছে সে সম্পর্কে জনসাধারণকে সাবধান করার ব্যাপারে ইকুইফ্যাক্স খুব ভাল কিছু করেনি। মাত্র ৫৪ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছে তারা ঘটনার কথা শুনেছে এবং মাত্র ৪ শতাংশ বলেছে যে একটি ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি জানিয়েছে তাদের নিজস্ব তথ্যাবলী হ্যাকিং হয়ে থাকতে পারে। জরিপে দেখা যায় যে বয়স্ক আমেরিকানদের মধ্যে এই সংক্রান্ত উদ্বেগটা বেশি। ৪৫ এবং তদুর্ধ বয়সীদের মধ্যে ৭২ শতাংশ উদ্বিগ্ন। অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে উদ্বিগ্নবোধ করেছে ৫৭ শতাংশ। নারীরা পুরুষের চেয়ে অধিক উদ্বিগ্ন। ৭০ শতাংশ নারী যেখানে উদ্বিগ্ন হয়েছে সেখানে পুরুষ হয়েছে ৬২ শতাংশ। নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হওয়ার কারণে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে লোকে যে ক্রেডিট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তাও নয়। জরিপকৃতদের মধ্যে ৮১ শতাংশ বলেছে যে এই ঘটনার কারণে ভবিষ্যতে যে কোন ধরনের ক্রেটি কার্ডের জন্য তাদের চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হবে না। প্রতি ১০ জন আমেরিকানের মধ্যে তিনজন বলেছে যে অতীতেও তাদের পরিচিতি তথ্য কোন না কোনভাবে চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আয়ের সঙ্গে এই সংখ্যাও বেড়েছে। যাদের বার্ষিক আয় ৭৫ হাজার ডলার বা তারও বেশি তাদের প্রায় অর্ধেকই বলেছে, ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি বা রিটেইলার তাদের জানিয়ে দিয়েছে যে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে গেছে। অনুবাদ ॥ এনামুল হক সিএনএনটেক অবলম্বনে
×