স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নবেম্বর মাসে শুরু হবে মর্যাদার এ্যাশেজ লড়াই। সেই সিরিজটি নিয়েই এখন যত চিন্তা-ভাবনা অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের। এবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কঠিন পরীক্ষা ইংল্যান্ডের জন্য। কারণ এবারই প্রথম অধিনায়ক হিসেবে এ্যাশেজে দলকে নেতৃত্ব দেবেন জো রুট। ইতোমধ্যে এ্যাশেজে ১৪ টেস্ট খেলেছেন তিনি। কিন্তু অধিনায়কত্ব করতে হয়নি। এমন একটি সিরিজেই তাকে হয়তো লড়াইয়ে নামতে হবে নির্ভরযোগ্য পেস অলরাউন্ডার বেন স্টোকসকে ছাড়াই। মারামারির ঘটনায় এখন তিনি ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তাকে ক্রিকেট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। তাই এ্যাশেজের দলে থাকলেও খেলা নিয়ে আছে সংশয়। কারণ নিষেধাজ্ঞা এর আগে না উঠলে এ্যাশেজে খেলা হবে না তার। আর এটিকে ইংল্যান্ড দলের জন্য অনেক বড় বিপদ হিসেবেই দেখছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল। তিনি দাবি করেছেন স্টোকসে ছাড়া কোনভাবেই এ্যাশেজে জিততে পারবে না ইংল্যান্ড।
সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত দেড় মাস বাকি এ্যাশেজের। ওই সময়ে অস্ট্রেলিয়া সফর করবে ইংল্যান্ড দল, খেলবে ৫ ম্যাচের মর্যাদার এই টেস্ট সিরিজ। কিন্তু মাঠের বাইরের অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিয়ে এখন দলটির অন্যতম নির্ভরতা স্টোকস আছেন সংশয়ে। তিনি খেলতে পারবেন কিনা সেটা নিয়ে ইংলিশ শিবিরে আছে যথেষ্ট শঙ্কা। কারণ নাইট ক্লাবের বাইরে একব্যক্তিকে আচ্ছামতো পিটিয়েছেন, সেই ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরপর ব্রিটিশ পুলিশ আটক করলেও কোন অভিযোগ দায়ের না হওয়াতে তদন্তের আগ পর্যন্ত জামিন পেয়েছেন স্টোকস। এ কারণে ঘোষিত এ্যাশেজ টেস্টের দলে তাকে রেখে দেয় ইসিবি। কিন্তু সেই তদন্তের শুরুতেই ভিডিও ফুটেজে দারুণ আক্রমণাত্মক স্টোকসকে দেখা গেছে। এরপর উল্টো নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে স্টোকসের ওপর। ১৬ জনের এ্যাশেজ স্কোয়াডে থাকলেও এখন তদন্ত শেষ হওয়া, এরপর বিচারকার্য সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে স্টোকসকে। ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের সহ-অধিনায়কের এমন কীর্তিকলাপে এখন অস্থিরতা ইংলিশ শিবিরে। স্টোকস শেষ পর্যন্ত না খেলতে পারলে ইংল্যান্ডের জন্য আসন্ন এ্যাশেজে চরম দুঃখ অপেক্ষা করছে বলেই মনে করছেন চ্যাপেল। তিনি বলেন, ‘তাকে ছাড়া তারা কোনভাবেই জিততে পারবে না। এর কারণ অনেকগুলো। অবশ্যই তার সামর্থ্যটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। তিনি ম্যাচজয়ী পারফর্মার এবং এ ধরনের খেলোয়াড় দলে থাকলে অন্যরাও উজ্জীবিত থাকে। তারাও ভাল নৈপুণ্য দেখায় এবং দলকে আরও ভাল অবস্থানে নিয়ে যায়।’
স্টোকস একই সঙ্গে দুর্দান্ত বোলিংয়ের পাশাপাশি দারুণ ব্যাটিংও করে থাকেন মিডলঅর্ডারে। দুই ক্ষেত্রেই তার ওপর আস্থা রাখতে হয় ইংল্যান্ডকে। এ বিষয়ে চ্যাপেল আরও বলেন, ‘সম্ভবত তিনি সেসব খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন যার মাধ্যমে অনেক ভাল দলের বিরুদ্ধে খেলার সময় অন্যরা উজ্জীবিত থাকে। তার মতো আত্মবিশ্বাসী মনোভাব হয়তো আর কারও মধ্যে নেই। আমার মনে হয় না তাকে ছাড়া ইংল্যান্ডের কোন আশা আছে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভাল করার।’ ২৩ নবেম্বর ব্রিসবেনে এ্যাশেজের প্রথম টেস্ট শুরু হবে। তার আগে স্টোকসের জন্য সময় আছে দেড় মাস ঝামেলা কাটিয়ে ওঠার। তবে অভিযোগের যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ পুলিশের কাছে চলে আসায় হয়তো বড় ধরনের ঝামেলাই পোহাতে হবে স্টোকসকে। সেক্ষেত্রে আপাতত স্টোকসকে ছাড়াই বিকল্প চিন্তা করতে হবে ইংলিশদের।