ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মার নিখোঁজ নাসিরের লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০১:২০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পদ্মার নিখোঁজ নাসিরের লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের পদ্মার শাখা নদীতে সাঁতার কাটতে গিয়ে নিখোঁজ মো. নাসিরের লাশ উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার সকালে ১৫-১৬ কি.মিটার ভাটিতে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাসাইল ইউনিয়নের পদ্মা নদীর চরের পার হতে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। গত তিন দিন ধরে খোজাঁখোজিকালে শুক্রবার সকালে টঙ্গীবাড়ির পদ্মা নদীতে নাসিরের বাবা সাহেদ আলী স্বজনদের নিয়ে যখন নাসিরের সন্ধ্যান করছিল, তখন একদল জেলেকে দেখে তারা জিঞ্জেস করে পদ্মায় কোন লাশ ভাসতে দেখেছে কিনা। জেলেরা জানায় হাসাইলের পদ্মার চরের পারে একটি লাশ পরে আছে। পরে নাসিরের বাবা মো. সাহেদ আলী মিস্ত্রি সেখানে গিয়ে নাসিরের লাশ সনাক্ত করে। উল্লেখ্য গত বুধবার নাসিরও তার অপর দুই বন্ধু মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের পদ্মার শাখা নদীতে গোসলকরতে গেলে মো. নাসির (২০) নিখোঁজ হয়। এ সময় অসুস্থ্য হয়ে পড়ে অপর দুই বন্ধু মো. অনিক (১৮) ও মো. শাহীন (১৭)। নিহত অনিক উপজেলার পাইকারা গ্রামের মো. সাহেদ আলী মিস্ত্রির ছেলে। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শি সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে ওই তিন বন্ধু মিলে বাড়ির কাছের ব্রাহ্মনগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের অঙ্গিনায় ফুটবল খেলছিল। খেলা শেষে বেলা ১২ টার দিকে তারা তিন বন্ধু মিলে বিদ্যালয় সংলগ্ন পদ্মার শাখী নদীতে গোসল করতে নামে। এ সময় ২ শ’ মিটার দূরে নাব্যতা সংকটে আটকে পড়া একটি বালুবাহী ট্রলারে উঠতে তারা সাঁতার কাটতে শুরু করে। ট্রলারটির কাছাকাছি যাবার পর তিন বন্ধুই ক্লান্ত হতে চিৎকার শুরু করে। এ সময় ট্রলারে থাকা শ্রমিকরা তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে। অনিত ও শাহীনকে শ্রমিকরা উদ্ধার করতে পারলেও স্রোতের টানে নাসির পদ্মার পানিতে ডুবে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরাও নাসিরকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। উদ্ধার হওয়া অনিক ও শাহীনকে লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নাসিরে লাশ বাড়ির পাশের ব্রাক্ষনগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সমজিদের পাশে রাখলে এখানে শত শত মানুষের ভিড় জমে নাসিরের লাশ শেষ বারের মত এক নজর দেখতে। এসময় স্বজনদের কান্নার রোলে আকাশ বাসাত ভাড়ী হয়ে উঠে। সৃষ্টি হয় এক শোকাচ্ছন্ন পরিবেশের। নাসিরের বাবা কাঠ মিস্ত্রি সাহেদ আলী জানান, নাসির এসএসসি পাশ না করলেও কারিগরি বিষয়ে তার খুব আগ্রহ ছিল। প্রতি শুক্র ও শনিবার উপজেলার চন্দ্রের বাড়ি বাজারের ডেন্টিস ডা. সিফাত উদ্দিন খানের সহকারী হিসেবে কাজ করতো। ভাল ও হাসিখুশি ছেলে হিসেবে নাসিরের বেশ সুনাম ছিল। এদিকে, উদ্ধার হওয়া অনিক ও শাহীনকে অসুস্থ্য অবস্থায় ওই দিনই লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। শাহীনের অবস্থা কিছুটা ভাল হলে তাকে বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। শাহীনের ভাই তুহিন জানিয়েছে, ওর মানষিক অবস্থা খুবই খারাপ। রাতে ঘুমাতে পারেনা। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। অপর দিকে অসুস্থ্য অনিকের অবস্থা খারাপের দিকে গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার ঢাকা মিটফোর্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখান থেকে অনিককে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসরা জানিয়েছেন শাহীনের হার্ট এ্যাটার্ক হয়েছে। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। লৌহজং থানার ওসি মো. আনিচুর রহমান জানিয়েছেন, পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় ময়না তদন্ত ছাড়াই নাসিরের লাশ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
×