ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নেইমার ঝলকে পিএসজিতে বিধ্বস্ত বেয়ার্ন

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

নেইমার ঝলকে পিএসজিতে বিধ্বস্ত বেয়ার্ন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নেইমার ও এডিনসন কাভানির মধ্যে দ্বন্দ্বটা প্রকট আকার ধারণ করেছিল। পেনাল্টি ও ফ্রিকিক নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল জটিলতা। তবে ফরাসী ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের (পিএসজি) এই দুই বিদেশী সুপারস্টারের মধ্যে সবকিছু বোধহয় মিটমাট হয়ে গেছে। যে প্রমাণ মিলেছে বুধবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের গ্রুপপর্বের ম্যাচে। ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে নেইমার-কাভানি জুটির দুর্দান্ত পারফর্মেন্সে ভর করে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে পিএসজি। নিজেদের মাঠ প্যারিসের পার্ক দ্য প্রিন্সেসে অনুষ্ঠিত হাইভোল্টেজ ম্যাচে জার্মান পরাশক্তি বেয়ার্ন মিউনিখকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ফরাসী জায়ান্টরা। পিএসজির হয়ে একটি করে গোল করেন দানি আলভেজ, এডিনসন কাভানি ও নেইমার। ফ্রান্সের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে শুরু থেকেই স্বাগতিক পিএসজি ছিল দারুণ আত্মবিশ্বাসী। তারই ধারবাহিকতায় ম্যাচ শুরুর ৯০ সেকেন্ডের মধ্যেই জাতীয় দলের সতীর্থ নেইমারের নিখুঁত পাসে আলভেজ গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। ৩১ মিনিটে কাভানি ব্যবধান দ্বিগুণ করার পর নেইমার ৬৩ মিনিটে দলের জয় নিশ্চিত করেন। ২০১৫ সালের মে মাসে বার্সিলোনার কাছে সেমিফাইনালে এই একই ব্যবধানে পরাজয়ের পর এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এত বড় ব্যবধানে হারের স্বাদ পেল বাভারিয়ানরা। নেইমার ও কাভানির মধ্যে দারুণ বোঝাপড়া লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান তারকা ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে পিএসজি। হারলেও দুই নম্বরে আছে বেয়ার্ন। গ্রুপের আরেক ম্যাচে বেলজিক ক্লাব আন্ডারলেচটকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে স্কটল্যান্ডের সেল্টিক। ‘এ’ গ্রুপে দ্বিতীয় ম্যাচেও গোলোৎসব করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। মস্কো সফরে স্বাগতিক সিএসকেএ মস্কোকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে জোশে মরিনহোর দল। রেড ডেভিলসদের হয়ে জোড়া গোল করেন রোমেলো লুকাকু। বাকি দু’টি গোল করেন এ্যান্থনি মার্শাল ও হেনরিখ মাখাটারিয়ান। গ্রুপের আরেক ম্যাচে পর্তুগালের বেনফিকাকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে সুইজারল্যান্ডের এফসি বাসেল। স্প্যানিশ পরাশক্তি বার্সিলোনা থেকে নেইমারকে ২২২ মিলিয়ন ইউরোর চড়া মূল্যে দলভুক্ত করার বিষয়টি কোনভাবেই মেনে নেয়নি বেয়ার্ন। দলবদলের বাজারে একজন খেলোয়াড়ের পেছনে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচের বিষয়টিতে প্রথম থেকেই সমালোচনা করে আসছে জার্মান ক্লাবটি। পরশু রাতের ম্যাচেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। প্যারিসের মাঠে আগত জার্মান সমর্থকরা টিকেটের চড়া মূল্যের বিরোধিতা করে বলেছেন, আমরা নেইমার নই, টিকেটের মূল্য অবশ্যই ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে হওয়া উচিত ছিল। ম্যাচে টিকেটের মূল্য ছিল ৭৫ ইউরো। চড়া দামে টিকেট কিনে ম্যাচটি জিততে পারলে হয়তো সমর্থকদের মনে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসতো। কিন্তু ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই গোল হজম করে বেয়ার্ন মূলত পিছিয়ে পড়ে। পরে এই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি জার্মান জায়ান্টরা। পিএসজির জন্য এই ম্যাচটা মূলত ছিল নিজেদের ফিরে পাওয়ার চ্যালেঞ্জ। আগের মৌসুমে বার্সিলোনার কাছে বড় ব্যবধানে হেরে বিদায়ের পর থেকেই পিএসজির ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সাধারণত শক্তিশালী দলগুলোর বিরুদ্ধে কখনই পেরে ওঠেনি তারা। সেদিক থেকে বেয়ার্নের বিরুদ্ধে ম্যাচটি ছিল অনেকটাই এসিড টেস্ট। তাতে দারুণভাবে উতরে গেছে উনাই এমেরির শিষ্যরা। ম্যাচ শেষে পিএসজি কোচ এমেরি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তিন পয়েন্ট অর্জন। তবে আমার কাছে আরও একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হলো সমর্থকরা ম্যাচটা দারুণ উপভোগ করেছে। বিশেষ করে বেয়ার্নের মতো দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের জয় সত্যিই আনন্দের। কিছুদিন আগে ফরাসী লীগ ওয়ানে পেনাল্টি করা নিয়ে কাভানি ও নেইমারের মধ্যে বিতর্কের পর এই প্রথম দুই তারকা একসঙ্গে খেলতে নামেন। আর সবকিছুকে ঝেড়ে ফেলে দু’জনই দারুণ খেলেছেন। বেয়ার্ন ভুগেছে অভিজ্ঞ ফ্র্যাংক রিবেরি ও আরিয়েন রোবেন না খেলায়। কোচ তাদের বসিয়ে রাখেন। পরে এ প্রসঙ্গে বেয়ার্ন কোচ কার্লো আনচেলোত্তি বলেন, সম্ভাব্য সেরা দলটিকেই আমি নামিয়েছিলাম। কিন্তু তার জন্য যদি আমাকে সমালোচিত হতে হয় তবে আমি সেটা মেনে নিয়েছি। ম্যাচ পরাজয়ের মূল কারণ হচ্ছে শুরুতেই গোল হজম করা।
×