ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কালো তালিকাভুক্ত হচ্ছেন দিনাজপুরের ১৮৯৪ চালকল মালিক

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কালো তালিকাভুক্ত হচ্ছেন দিনাজপুরের ১৮৯৪ চালকল মালিক

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ চাল সরবরাহে সরকারী খাদ্যগুদামের সঙ্গে চুক্তি না করায় দিনাজপুরের এক হাজার ৮৯৪ চালকল মালিককে কালো তালিকাভুক্ত করতে যাচ্ছে খাদ্য বিভাগ। চলতি বোরো চাল সংগ্রহ মৌসুমে সরকার নির্ধারিত ক্রয়মূল্যের চেয়ে বাজারে ধান-চালের দাম বেশি হওয়ায় সরকার শাস্তিমূলক এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। কালো তালিকাভুক্ত হলে এসব চালকল মালিক আমন মৌসুমসহ আগামী দুই বছর অর্থাৎ ৪ মৌসুম সরকারী খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করতে পারবেন না। চুক্তিবিহীন চালকল মালিকদের প্রতি কড়া নজর এবং সরবরাহকৃত চালকল মালিকদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে বোনাস ব্যবস্থার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টির অপেক্ষায় আছে খাদ্য বিভাগ। জানা গেছে, দিনাজপুরের ১৩ উপজেলায় দুই হাজার ৪৯৪টি চালকল রয়েছে। এর মধ্যে চলতি বোরো মৌসুমে ছয় শ’ চালকল মালিক চাল সরবরাহের জন্য খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা চার ভাগের এক ভাগও অর্জিত হয়নি। খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় বোরো মৌসুমে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৮৬ হাজার মেট্রিক টন। এ লক্ষ্যে ১ মে থেকে জেলার দুই হাজার ৪৯৪টি চালকল মালিককে সরকারী খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করতে খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে চুক্তি করতে বলা হয়। চুক্তির শেষ সময় ছিল ২০ মে। এই সময়ের মধ্যে মাত্র ছয় শ’ চালকল মালিক চুক্তিবদ্ধ হন। পরে চুক্তির মেয়াদ ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। বর্ধিত সময়ের মধ্যে আর কেউ চুক্তিবদ্ধ হননি। চুক্তিবদ্ধ মালিকরা এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করেছেন। সরকার চাল কেনার জন্য প্রতি কেজি সিদ্ধ চালের মূল্য ৩৪ টাকা নির্ধারণ করেছে। অথচ খোলা বাজারে সর্বনিম্ন মানের চাল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকায়। চাল উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় চালের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। লোকসান গুনতে হবে ভেবে অধিকাংশ চালকল মালিক সরকারী খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করতে চুক্তিবদ্ধ হননি। অনেক চালকল মালিক লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে লোকসানের কথা মাথয় রেখেই চাল সরবরাহ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। বীরগঞ্জ উপজেলার কবিরাজহাট এলাকার দুইভাই চালকলের মালিক মাজেদুর রহমান মাজেদ বলেন, সরকারীভাবে চালের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, বাজারে তারচেয়ে চালের দাম অনেক বেশি। তাই সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারিনি। জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতি মোসাদ্দেক হুসেন বলেন, কালো তালিকাভুক্ত করা হলে আমাদের কিছু করার নেই। ব্যবসায়ীরা তো লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে চাল সরবরাহ করবে না। দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়সার আলী বলেন, যেসব চালকল মালিক চাল সরবরাহে চুক্তি করেননি তারা কালো তালিকাভুক্ত হতে পারেন।
×