স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার। এ মেলার উদ্বোধনকালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ট্যুরিজম বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য স্থানে চলে এসেছে। আশপাশের দেশগুলোর সরব ভূমিকা এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। এশিয়ার ট্যুরিজমে বাংলাদেশের অবস্থা এখন আর আগের মতো নেই। বাংলাদেশ একটি নিরাপদ ট্যুরিস্ট কান্ট্রি।
এবারের মেলার অন্যতম আকর্ষণ দেশী-বিদেশী ট্যুরিস্টদের জন্য নিরাপদ বাহন হিসেবে বিশেষ যানবাহনের সুবিধা-সম্বলিত প্রচার। কনভয় সার্ভিস নামের দেশের শীর্ষ ট্যুরিস্ট বাস মিনিবাসের স্টলে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। কনভয় সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী আমিন চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, পর্যটকদের কাছে প্রধান ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে নিরাপদে চলাচল। আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য কনভয় সার্ভিস বিশ্বমানের ট্যুরিস্ট কোচ সার্ভিসের নিশ্চয়তা দিচ্ছে। ইচ্ছে করলেই দেশী-বিদেশী পর্যটকরা রাজধানীর উত্তরায় নর্দান হোটেলের কাউন্টার থেকে কনভয় সার্ভিসের আয়োজনে যে কোন ধরনের পরিবহন সুবিধা নিতে পারেন। অনলাইনেও চলে বুকিং। মেলার প্রথম দিনেই ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
এ ছাড়া পাহাড়, নদী আর মেঘের ভেলায় ভেসে ভেসে নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগের পীঠস্থান পার্বত্য জেলা বান্দরবানের মার্কেটিং করতে এখানে অংশ নিয়েছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ জেলায় ভ্রমণে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের উৎসাহ দিতে ষষ্ঠ এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারে প্রচার চালাচ্ছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। মেলার ৩০ নম্বর স্টলে ভ্রমণপিপাসুদের জানিয়ে দেয়া হচ্ছে শৈলপ্রপাত, মেঘলা, নীলাচল আর নানা নানা জাতির পাহাড়ী জেলা বান্দরবান ভ্রমণের নানাবিধ তথ্য।
মেলায় অংশ নেয়া বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোঃ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, আমরা বান্দরবানের সৌন্দর্য তুলে ধরতে মেলায় অংশ নিয়েছি। বান্দরবান হলো এমন একটি জেলা যেখানে একেক ঋতুতে একেক রূপ পাওয়া যায়। বর্ষায় এক রকম, গ্রীষ্মে অন্য রকম, শীতে আরেক রকম। বিভিন্ন ঋতুতে রূপময় ধারণ করা নানা নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বসবাসের এই জেলা। তিনি বলেন, অনেকে মনে করেন এখানে দেখার মতো শুধু নীলাচল ও নীলগিরি আছে। কিন্তু তা নয়, এখানে ঘুরে দেখার মতো অসংখ্য স্থান। তা অনেকেই জানেন না। তাই মানুষকে এসব পর্যটন সমৃদ্ধ জায়গাগুলোকে মানুষকে পরিচয় করিয়ে দিতেই এ আয়োজনে অংশ নিয়েছি। এখানে কেওকারাডং পাহাড়, জাঁদিপাই ঝর্ণা, জীবন নগর, তিন্দুর বড়পাথর, মিরিঞ্জা, আলীর গুহা, উপবন লেক, মেঘলা, নীলাচল, জলপ্রপাত, চিম্বুক, শৈলপ্রপাত, প্রান্তিক লেক, রিজুক ঝর্ণা, রুমানা ঝর্ণা, বগালেকসহ আরও অনেক জায়গা। এগুলো মানুষকে জানানোর জন্যই আমরা এসেছি।
জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোঃ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, পাহাড়ের স্নেহে ছায়ায় গড়ে ওঠা এক স্বপ্নীল জনপদ বান্দরবান। এ জেলার বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর অকৃত্রিম জীবনাচরণ যে কারও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে। পর্যটকদের ভ্রমণ সহায়ক হিসেবে এ মেলা বান্দরবানসহ দেশের পর্যটন বিকাশে ভাল ভূমিকা রাখবে।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেনÑ মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম গোলাম ফারুক, পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান খান কবির, পর্যটন বোডের সিইও ড. নাসির উদ্দিন, ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিফিন্সের রাষ্ট্রদূত ভিসেন্ট ডিফেন্স, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত রিসাপি সোমার্নো প্রমুখ। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আন্তর্জাতিক এ পর্যটন মেলার ‘এয়ারলাইন পার্টনার’। প্রতিদিন প্রবেশ টিকেটে র্যাফেল ড্রর মাধ্যমে সৌজন্য টিকেটের ব্যবস্থা থাকবে। পুরস্কার হিসেবে থাকবে আন্তর্জাতিক রুটের রিটার্ন টিকেট। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে।