ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির সভা

ভারত থেকে ২৫০ মেও বিদ্যুত আমদানির দরপত্র উন্মুক্তে সম্মতি

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ভারত থেকে ২৫০ মেও বিদ্যুত আমদানির দরপত্র উন্মুক্তে সম্মতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির দরপত্র উন্মুক্ত করতে সম্মতি দিয়েছে যৌথ স্টিয়ারিং কমিটি। বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যুত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ভারতীয়পক্ষ এ বিষয়ে সম্মতি দেয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিদ্যুত আমদানিকে অতিরিক্ত কর প্রত্যাহারের দাবি জানানো হলে ভারত সরকারকে বিষয়টি জানানোর আশ^াস দেয়া হয়। বাংলাদেশ এখন ভারত থেকে ভেড়ামারা দিয়ে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করে। এর মধ্যে ২৫০ মেগাওয়াট সরকারী খাত এবং ২৫০ মেগাওয়াট বেসরকারী খাত থেকে আমদানি করা হয়। বেসরকারী খাতের ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির জন্য প্রথম তিন বছরের চুক্তি ছিল। এখন বাংলাদেশ এই বিদ্যুত আমদানির জন্য দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করতে আগ্রহী। যার দরপত্র আহ্বান করেছিল পিডিবি। এই দরপত্র উন্মুক্ত করার জন্য ভারতের সম্মতির দরকার ছিল। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বিদ্যুত খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির ত্রয়োদশ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশের বিদ্যুত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ভারতের বিদ্যুত সচিব অজয় কুমার ভাল্লা। বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশ এর মধ্যে ভারত থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে। এছাড়া ভেড়ামারায় ব্যাক টু ব্যাক এইচভিডিসি সাব-স্টেশনের ক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ চলছে। এর আগেই ভারত সরকার আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দিয়েছে। একই সঙ্গে নতুন বিদ্যুত আমদানিতে কর প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়। তবে ভারতীয়পক্ষ থেকে বলা হয়, করারোপ বা প্রত্যাহারের বিষয়টি ভারতের বিদ্যুত বিভাগের সিদ্ধান্তে হয় না। ভারতের রাজস্ব বিভাগ কাজটি করে থাকে। কাজেই তারা সরকারকে বাংলাদেশের দাবির বিষয়টি জানাবে। রামপালে বাস্তবায়নাধীন মৈত্রী সুপার থারমাল বিদ্যুত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি কর্তৃক রামপাল বি-ব্লকে সৌর বিদ্যুত প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় ভেড়ামারা ও ত্রিপুরা ইন্টারকানেকশনের মাধ্যমে বিদ্যুত আমদানির বর্তমান অবস্থা, সূর্যমনি-কুমিল্লা নর্থ লিংকের মাধ্যমে জি টু জির আওতায় এনটিপিসি বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে আরও ৩৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি, কাটিহার-পার্বতীপুর-বড়পুকুরিয়া-বরানগর ৭৬৫ কেভি গ্রিড ইন্টারকানেকশন ও বহরমপুর-ভেড়ামারা ৪০০ কেভি ২য় ইন্টারকানেকশন বাস্তবায়ন ও সূর্যনগর-কুমিল্লা নর্থ লিংকের মাধ্যমে আরও বিদ্যুত আমদানির জন্য কুমিল্লায় ব্যাক টু ব্যাক এইচভিডিসি সাব-স্টেশন নির্মাণের সম্ভাবনাসহ বিদ্যুতের ক্রস বর্ডার ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। স্টিয়ারিং কমিটির সভায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ভারতের রিলায়েন্স, সাপুরজি-পালনজি ও আদানী গ্রুপের বাংলাদেশের বিদ্যুত খাতে বিনিয়োগের অবস্থাসহ ভারতীয় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশের বিদ্যুত খাতে অংশগ্রহণ, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে ভারতে বিদ্যুত প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনা, বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের ভারতের বিদ্যুত উৎপাদন খাতে অংশগ্রহণ, নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুত আমদানির সম্ভাবনা এবং জিএমআরের নেপালে উৎপাদিত বিদ্যুত বাংলাদেশে আমদানি, ভুটানের ১১২৫ মেগাওয়াট কুরী-১ হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্টে বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানের যৌথ বিনিয়োগ ও এই বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত বাংলাদেশে আমদানিসহ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার বিষয় বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। সভায় উভয়পক্ষ রামপালে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থারমাল প্রকল্পের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বিদ্যুত খাতে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এর আগে গতকাল বিদ্যুত খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট ওয়ার্কি গ্রুপের ১৩ তম বৈঠক বিদ্যুত ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, গতবছরের ডিসেম্বরে দিল্লীতে বিদ্যুত খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটি ও জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের দ্বাদশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
×