ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ছয় বছরের মধ্যেই দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর হবে ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ছয় বছরের মধ্যেই দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর হবে ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী ছয় বছরের মধ্যে দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, ২০২৪ সালে দেশের ৭ শতাংশ মানুষ রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল থাকবে। অর্থাৎ বলা যায়, দেশে কোন দরিদ্র মানুষ থাকবে না। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিদেশ যাত্রার সম্ভাব্য ঝুঁকি উত্তরণ, রেমিটেন্স বৃদ্ধি, জনকল্যাণে এজেন্ট ব্যাংকিং ও সাধনা সংসদের সহায়ক ভূমিকা’ শিরোনামে মতিঝিলের পূর্বানী হোটেলে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সাধনা সংসদের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংসদের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোঃ আলী আশরাফ। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব দেলওয়ার হোসেন ভূইয়া। সূচনা বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি রওনক জাহান। অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-এসডিজিতে ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের কথা বলা হলেও বাংলাদেশে তার ছয় বছর আগেই দারিদ্র্য দূর হবে। দারিদ্র্য বিমোচনের আন্তর্জাতিক লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সাল হলেও আমরা ২০২৪ সালেই তা হাসিল করব। এই আত্মবিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে বলতে পারি, আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি, বাংলাদেশ ২০৪১ সালে অবশ্যই একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হবে। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় জনগণের মধ্যে ৭ শতাংশ রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল, আর বাংলাদেশও সেই পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমার বিশ্বাস ২০২৪ সালে দেশে মাত্র ৭ শতাংশ মানুষ রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল থাকবে। ওই সময়ের পর দেশে কোন দারিদ্র্য থাকবে না। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ প্রগতির পথে ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এই অগ্রগতির মূল নায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যাবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশটির জন্ম হয় একটি স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে। তবে আমরা সেই অবস্থায় এখন আর নেই। যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি, আমার স্থির বিশ্বাস আমাদের নেত্রী স্বপ্ন দেখিয়েছেনÑ আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হবো ২০২১ সালে এবং সমৃদ্ধ দেশ হবো ২০৪১ সালের মধ্যে। শুধু তাই নয়, আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রীর এই অঙ্গীকার এবং লক্ষ্যমাত্রাÑ সেটা আমরা হাসিল করতে সক্ষম হবো। অর্থমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যবিমোচনে এখন বাজেটে বরাদ্দ হয় জিডিপির ২ শতাংশের মতো। সেটাকে আমরা অনবরত বাড়িয়ে যাচ্ছি। প্রসঙ্গত, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটেও দারিদ্র্য কমাতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, এতিম শিশু কল্যাণ তহবিল, প্রতিবন্ধী জরিপ, অটিজম রিসোর্স সেন্টার স্থাপন, ভিক্ষুক পুনর্বাসন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান, গৃহায়ন তহবিল, কাবিখা, আশ্রয়ণ, একটি বাড়ি একটি খামার, ঘরে ফেরা, বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক, চর জীবিকায়ন কর্মসূচী, ক্ষুদ্রঋণ, প্রতিবন্ধী উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এসব কর্মসূচী গ্রহণ করার ফলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া ভিজিডি কর্মসূচী ও ভিজিএফ কার্ডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সমাজের সবচেয়ে অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষ করে দলিত, হরিজন, বেদে ও হিজড়া সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে অতিরিক্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
×