ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কায় রোহিঙ্গা নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

শ্রীলঙ্কায় রোহিঙ্গা নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস

শ্রীলঙ্কায় আশ্রয়গ্রহণকারী এক দল রোহিঙ্গা শরণার্থীর ওপর হামলা পরিচালনার জন্য সে দেশের সরকার উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তীব্র সমালোচনা করেছে। একই সঙ্গে যেসব পুলিশ সদস্য শরণার্থীদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় তাদের বিরুদ্ধেও সরকার ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার করেছে। এএফপি। জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনায় শ্রীলঙ্কার এক সেফ হোমে ১৬ জন শিশু, ৭ জন নারীসহ ৩১ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার একদল উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষু দলবলসহ সেফ হোমে হামলা চালায়। এ ঘটনায় শ্রীলঙ্কা মন্ত্রিসভার মুখপাত্র রজিথা সেনারতেœ বলেন, সরকার রোহিঙ্গাদের সেফ হোমে হামলার তীব্র নিন্দা করছে এবং এ ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য একজন বৌদ্ধ হিসেবে আমি লজ্জিত হয়েছি। রোহিঙ্গাদের জন্য নির্ধারিত সেফ হোমটি রাজধানী কলম্বোর কাছে এক বহুতল ভবনে স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানেই উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বে উত্তেজিত জনতা প্রবেশ পথের গেট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে হামলা চালায়। তারা জানালা, দরজা ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে তা-ব চালায়। এতে সেখানে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে গাদাগাদি করে ওপর তলায় আশ্রয় গ্রহণ করে। সেনারতেœ সাংবাদিকদের বলেন, একেবারে দুগ্ধপোষ্য শিশুসহ মায়েদের জোরপূর্বক সেফ হোম থেকে বের দেয়া হয়। এই শিক্ষা তো বুদ্ধ আমাদের দেননি। সেফ হোমে হামলাকারী ভিক্ষুরা আসলে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী নয় তারা পশু। এ ঘটনায় দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন। তবে রোহিঙ্গাদের হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেনারতেœ বলেন, যেসব পুলিশ কর্মকর্তা উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শ্রীলঙ্কার চরমপন্থী বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সঙ্গে মিয়ানমারের উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। দুটি দেশেই সংখ্যালঘু মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেয়ার জন্য এসব বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দায়ী করা হয়। জাতিসংঘ সেফ হোমে আশ্রয়প্রাপ্ত ৩১ জন রোহিঙ্গাকে পাঁচ মাস আগে শ্রীলঙ্কা নৌবাহিনী সে দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জলসীমায় ভাসমান এক নৌকা থেকে উদ্ধার করে। তাদের ওপর পরিচালিত হামলার খবরে শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘ হাইকমিশনার তার উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি এসব ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের দুঃখ-কষ্টে সহানুভূতিশীল হওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কাবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।
×