ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভাল গ্রাহকদের পুরস্কৃত করবে ব্যাংক

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ভাল গ্রাহকদের পুরস্কৃত করবে ব্যাংক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিয়মিত ঋণ পরিশোধকারী ভালো গ্রাহকদের জন্য ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আদায়যোগ্য সুদ বা মুনাফার ১০ শতাংশ মওকুফ (রিবেট) সুবিধা কার্যকর করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১৯ মার্চ থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের কোনও তারিখে বিদ্যামান কোনও গ্রাহক তার ঋণ হিসাবের আগের ৩ বছরের লেনদেন বিবেচনায় ভালো গ্রাহক চিহ্নিত হলে ২০১৫ সালে ১৯ মার্চ থেকে ওই গ্রাহক ১০ শতাংশ রিবেট সুবিধা পাবেন। তবে ২০১৫ সালের হিসাব চূড়ান্ত হয়ে গেলে প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণপূর্বক ব্যাংক ২০১৬ সালেও রিবেট সুবিধা দিতে পারবে। এতদিন ব্যাংকগুলো থেকে খেলাপি ঋণগ্রহীতারাই বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু যারা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করে আসছিলেন, তারা কোনও সুযোগ-সুবিধা পাননি। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্নও উঠে। এ প্রেক্ষিতে ভালো গ্রাহকদের প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সাল ও পরবর্তী বছর থেকে কোনও ভালো ঋণ গ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত হলে সংশ্লিষ্ট হিসাববর্ষে গ্রাহক প্রযোজ্য রিবেট প্রাপ্য হবেন। সূত্র জানিয়েছে, রাজনৈতিক সহিংসতার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গত বছর ব্যাংকিং খাতে ৫শ কোটি বা তার বেশি পরিমাণ ঋণখেলাপিদের মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়েই ১২ বছরের জন্য ঋণ পুনর্গঠনের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগের বছরও একই কারণে নামমাত্র ডাউনপেমেন্ট দিয়ে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করে নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়। ওই সময় প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চলমান ঋণের ক্ষেত্রে তিন বছর নিয়মিত ঋণ পরিশোধ সাপেক্ষে তৃতীয় বছরের শেষে ভালো ঋণ গ্রহীতার হিসাবের বিপরীতে ওই বছরে আদায় করা সুদ বা মুনাফার কমপক্ষে ১০ শতাংশ অব্যাহতি (রিবেট) দিতে হবে। পরবর্তী বছরগুলোতে ভালো গ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত থাকলে এ সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে বর্ধিত ঋণ সুবিধাও দিতে হবে। একইভাবে তলবি ও মেয়াদি ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রেও এসব সুবিধা দিতে হবে। এছাড়া ব্যাংকগুলো বার্ষিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভালো ঋণগ্রহীতাদের পুরস্কৃত করে সামাজিকভাবে মর্যাদা সম্পন্ন বিবেচনা করার মাধ্যমে উৎসাহিত করতে হবে। ‘ভালো ঋণগ্রহীতা’ হিসেবে বিবেচনার মানদণ্ড হিসেবে বলা হয়েছে— যেসব চলমান, তলবি ও মেয়াদি ঋণের গ্রাহকরা পর পর তিন বছর ভালোভাবে ঋণ পরিশোধ করেছেন, যাদের কোনও ঋণ শ্রেণিকৃত করা হয়নি এবং তিন বছরের মধ্যে যাদের সংশ্লিষ্ট কোনও প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিরূপমানে শ্রেণীকৃত হয়নি, তারা ‘ভালো ঋণগ্রহীতা’ বলে বিবেচিত হবেন।
×