ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাফ ফুটবলে রানার্সআপ বাংলাদেশের যুবারা

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সাফ ফুটবলে রানার্সআপ বাংলাদেশের যুবারা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিতেও হারলো বাংলাদেশ। সাফল্যের একদম কাছাকাছি এসেও স্পর্শ করা হলো না কাক্সিক্ষত ট্রফিটি। যদিও স্বাগতিক ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জয়ের উপলক্ষটা তৈরি করে রেখেছিল লাল-সবুজবাহিনী। কিন্তু ঘণ্টা তিনেক পরেই তাদের সেই স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেয় ভারত-নেপাল। সাফ অনুর্ধ-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে সমীকরণের খেলায় জিতে যায় নেপাল। খেলায় তারা ২-০ গোলে হারায় ভারতকে। সেই সঙ্গে এই আসরের শিরোপাটাও নিজেদের করে নেয় তারা। ফলে রানার্সআপ হয় বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের প্রথম আসরেও নেপাল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এই ভারতকে হারিয়েই। লীগ পদ্ধতির এই আসরে বুধবার থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় শেষ দুটি ম্যাচ। যাতে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ মোকাবেলা করে ভুটানের আর দ্বিতীয় ম্যাচ নেপালের মুখোমুুখি হয় ভারতের। বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য নিজেদের শেষ ম্যাচে ভুটানকে হারানোই যথেষ্ট ছিল না। তাকিয়ে থাকতে হয় অন্য ম্যাচটির (নেপাল-ভারত) ফলের দিকেও। সেক্ষেত্রে ৪-৩ গোলে যাদের হারিয়েছিল বাংলাদেশের যুবারা, সেই ভারতেরই শুভকামনা করেছিল তারা। ভারত জিতলে বা ড্র করলেই লাভ বাংলাদেশের। কারণ বাংলাদেশ-ভারত দুই দলেরই তখন ৪ ম্যাচে পয়েন্ট হতো ৯। সেক্ষেত্রে কিন্তু শিরোপা নির্ধারণে গোল পার্থক্য বিবেচনায় আসতো না। বিবেচনায় নেয়া হতো দুই দলের হেড টু হেড লড়াইয়ের ফলকে। আর এখানেই এগিয়ে থাকতো বাংলাদেশ। কেননা মুখোমুখি দ্বৈরথে তো বাংলাদেশই হারিয়েছিল ভারতকে। কিন্তু নিজেদের কাজটা বাংলাদেশ করলেও ভারত তাতে বাগড়া দিয়ে বসে হেরে গিয়ে। ফলে প্রথমবারের মতো এই আসরে শিরোপা জেতা থেকে বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। অনেকেই বলেন, খেলা দেখে মনে হয়েছে ‘বাংলাদেশ ঠেকাও’ মিশন সফল করতে মাঠে খেলেছে নেপাল-ভারত। কেননা ম্যাচে ভারতের দুটি গোল হজম করার ধরন ছিল খুবই দৃষ্টিকটু এবং সন্দেহজনক। আসলে নেপালের কাছে ১-২ গোলে হারটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশের জন্য। ওই ম্যাচটা যদি ড্র হতো, তাহলে বুধবারের ম্যাচে বাংলাদেশ ভুটানের সঙ্গে জিতে সঙ্গে সঙ্গেই ট্রফি জেতার উল্লাসে মাততে পারতো। অপেক্ষা করতে হতো না নেপাল-ভারত ম্যাচের ফলের জন্য। এখন এই আসরের সব ম্যাচ শেষ হবার পর দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ ও নেপালের পয়েন্ট সমান (৪ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট)। বাংলাদেশের গোল যদিও বেশি (করেছে ৯ ও হজম করেছে ৫ গোল, নেপাল করেছে ৬ ও হজম করেছে ২ গোল), কিন্তু তাতেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি তারা। কেননা টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দুই দলের সমান পয়েন্ট হলে সেক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে এই দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের ফলকে। আর এখানেই পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ। কেননা ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ম্যাচে নেপালের কাছে ১-২ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। বুধবার দিনের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দল ২-০ গোলে হারায় ভুটানকে (প্রথমার্ধের স্কোরলাইন ছিল ০-০)। থিম্পুর চাংমিলিথাং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে স্বাগতিক দলকে হারানোর নায়ক জাফর ইকবাল। দলের দুটো গোলই আসে তার পা থেকে। টুর্নামেন্টে মোট ৫ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনিই। কিন্তু তারপরও ট্র্যাজেডি কিং হয়ে গেলেন জাফর। ৫৪ মিনিটে স্বাধীনকে তুলে নিয়ে বাংলাদেশী কোচ মাঠে নামান তার ‘তুরূপের তাস’ জাফর ইকবালকে। ৮০ মিনিটে সতীর্থর বাড়ানো বল বুঝে নিয়ে ডানদিক থেকে বক্সে ঢুকে মাপা শটে ভুটানের জাল কাঁপান বদলি ফরোয়ার্ড জাফর (১-০)। ৮৪ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে সতীর্থর বাড়ানো বল নিয়ে জাফর ঢুকে পড়েন বক্সে। বাঁপ্রান্ত থেকে দুরূহ কোণ থেকে তীব্র গড়ানো শট কিছুতেই ফেরাতে পারেননি ভুটানী গোলরক্ষক (২-০)। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি বলেন, ‘জাফরকে আমি ইচ্ছে করেই শুরুতে মাঠে নামায়নি। তাকে রেখেছিলাম দ্বিতীয়ার্ধের জন্য। যেন সে ফ্রেশ হয়ে খেলতে পারে। তাকে পরে নামানোর পরিকল্পনা আমার সফল হয়েছে।’ তবে সবকিছুর সারমর্ম হলো- ভারত বা ভুটান নয়, বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়াল নেপাল।
×