ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৭০-এ শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

৭০-এ শেখ হাসিনা

বাঙালী জাতির জন্য এক গৌরবের দিন আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। সত্তর বছর আগে ১৯৪৭ সালের এমনই একদিনে তিনি জন্মেছিলেন এই বাংলায় মধুমতী নদীর তীরে টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। যে গ্রামে ১৯২০ সালে জন্ম নিয়েছিলেন তাঁরই জনক, বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা আজ জনগণনন্দিত নেত্রী। বিশ্বস্বীকৃত সফল নেত্রী। তাঁর হাত ধরে বাঙালী জাতি এগিয়ে চলেছে দিক থেকে দিগন্তে বিশ্বমানবের পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার প্রয়াসে। লাঞ্ছিত, নিপীড়িত, বঞ্চিত, শোষিত জাতিকে সাহসে বুক বেঁধে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর পথ দেখিয়েছেন তিনি। আত্মগর্বে বলীয়ান হবার পথও দেখিয়েছেন তিনি। আজ শেখ হাসিনার জন্মদিন। তিনি সত্তর বছরে পদার্পণ করলেন। জন্মদিনে তাঁর প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। জন্মেছিলেন সঙ্কটের মধ্যে। দেশভাগ, ঘোর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, বিশাল শরণার্থী সমস্যার ভয়াবহ সময়ে জন্মেছিলেন তিনি। শৈশব ও কৈশোরে দেখেছেন ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত দিনগুলো। রাজনীতিতে এসে নিজ জীবনের ওপর বার বার হামলাসহ বহু রাজনৈতিক সঙ্কট অতিক্রম করতে হয়েছে। এখনও করছেন। একটার পর একটা সঙ্কট মোকাবেলা করে জয়ীও হয়েছেন। এখনও সেসব সঙ্কট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। আজকের রোহিঙ্গা সঙ্কট থেকে শুরু করে বহু জাতীয় সমস্যা তাঁকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দেশকে পাকিস্তানী ধারায় ফিরিয়ে নেয়া হয়েছিল। সেই অবস্থান থেকে তিনি দেশকে সঠিক এবং গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে এনেছেন। দেশ, জাতি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রশ্নে আপোসহীন অবস্থান তাঁর আজও অটুট। উদার আকাশ আর বাংলার বিস্তীর্ণ প্রান্তরে দাঁড়িয়ে গৌরবের সঙ্গে তিনি উচ্চারণ করেন, বাঙালীর অগ্রযাত্রা দৃঢ় গতিতে অব্যাহত থাকবে, কেউ রুখতে পারবে না। প্রতিশ্রুতি আর অঙ্গীকার পূরণে দৃঢ়তায় তিনি বাংলার মানুষকে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রমশ দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব মানবের পাশে। দেশ আজ নয় আর হতশ্রী। বাংলাজুড়ে তাঁর নাম তাই ধ্বনি-প্রতিধ্বনিত হয় আস্থার সঙ্গে। সামরিকজান্তা শাসনে পিষ্ট, হতাশাগ্রস্ত, দুঃখ-দুর্দশায় নির্যাতিত জাতিকে তিনি টেনে তুলেছেন মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর শিখরে। শৌর্যে বীর্যে, জ্ঞান গরিমায় বাঙালী বিশ্ব দরবারে ঠাঁই নিচ্ছে ক্রমশ তাঁরই অনুপ্রেরণায়। সফলতা যে সহজেই ধরা দেয়, তা নয়। অনেক শ্রম, কর্মনিষ্ঠতা, কর্মকুশলতা, দক্ষতা, যোগ্যতা, একনিষ্ঠতা ও সততার সমন্বয় ঘটলেই সাফল্য এসে ধরা দেয়। পাল্লাটা সাফল্যের দিকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। জনগণমন নন্দিত নেত্রী হিসেবে আজ স্বদেশে-বিদেশে সমাদৃত তিনি। রাষ্ট্রনায়কোচিত আচরণের মধ্য দিয়ে তিনি দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নকে দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছেন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করিয়েছেন। দেশের ছয় কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তের পর্যায়ে উঠে এসেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ফলে দেশ থেকে ক্রমশ দারিদ্র্য হ্রাস পাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদান করছেন তিনি। বাংলাদেশ আজ তথ্য-প্রযুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, জনশক্তি রফতানি, ব্যাংকিং, প্রশাসন থেকে শুরু করে সকল সেবা মানুষের নাগালে নিয়ে এসেছেন। প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে দেশ ক্রমশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে। আজ এই মহান নেত্রীর শুভ জন্মদিনে তাঁর সুস্বাস্থ্য ও সাফল্যময় কর্মজীবনই প্রত্যাশা।
×