ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যয় হবে ৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা

যশোরের ৭২ হাজার মানুষ নিরক্ষরতা মুক্ত হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

যশোরের ৭২ হাজার মানুষ নিরক্ষরতা মুক্ত হবে

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরের চার উপজেলায় নিরক্ষরদের লেখাপড়ার জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে এক হাজার ২শ’টি শিক্ষাকেন্দ্র। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো বাঘারপাড়া, ঝিকরগাছা, মনিরামপুর ও শার্শায় নিরক্ষরদের এ শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তুলছে। সেখানে ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ৭২ হাজার নিরক্ষর মানুষকে ছয় মাস ধরে লেখাপড়া শেখানো হবে। এ কাজে সাত কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো যশোর অফিসের সূত্রমতে, নিরক্ষরদের পাশাপাশি অক্ষর চেনেন কিন্তু শব্দ ও বাক্য গঠন করতে অক্ষম ব্যক্তিদের এসব কেন্দ্রে লেখাপড়া শেখানো হবে। ‘চেতনা’ নামের একটি বই পাঠদানের মধ্য দিয়ে লিখতে-পড়তে ও হিসাব-নিকাশ করতে শিখবেন নিরক্ষর নারী-পুরুষরা। সেই সঙ্গে পরিচিত হবেন তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে। পাশাপাশি অর্জন করবেন বিভিন্ন সামাজিক সচেতনতা। এখান থেকে লেখাপড়া শেখার পর দেশ-বিদেশের শ্রমবাজারে কাজের উপযোগী করে গড়ে তুলতে তাদের বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সূত্রমতে, প্রতিটি উপজেলায় ৩শ’টি করে শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপিত হবে, যেখানে দুটি শিফটে ৬০ জন করে নারী-পুরুষ পৃথকভাবে লেখাপড়া শিখবেন। এভাবে একেকটি উপজেলা থেকে ১৮ হাজার নারী-পুরুষ নিরক্ষরতামুক্ত হবেন বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন। বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি বাড়ির উঠান, গাছের নিচে ও ঘরভাড়া নিয়ে এসব শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রথম পর্যায়ে যশোরের দুটি উপজেলা বাঘারপাড়া ও ঝিকরগাছায় এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। বর্তমানে এ দুটি উপজেলায় নিরক্ষর জরিপ কার্যক্রম চলছে। উপজেলা দুটিতে একজন করে প্রোগ্রাম অফিসার ও অফিস সহায়ক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দুটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উপজেলা দুটিতে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বাঘারপাড়ায় কর্মসূচী বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে দিশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা ও ঝিকরগাছায় উলশী সৃজনী সংঘ। সংস্থা দুটি বর্তমানে সেখানে নিরক্ষর জরিপের কাজ করছে। গত আগস্ট মাসে জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জরিপ শেষে নিরক্ষর দূরীকরণে স্থাপিত শিক্ষাকেন্দ্রে পাঠদান করবেন তাদের নিয়োজিত শিক্ষকরা। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো যশোরের সহকারী পরিচালক কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষদিকে শিক্ষাকেন্দ্রগুলোয় পাঠদান শুরু হবে। এছাড়া অচিরেই অপর দুটি উপজেলা মনিরামপুর ও শার্শায় এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মনিরামপুরে দীপশিখা ও শার্শায় অগ্রণী মহিলা উন্নয়ন সংস্থা নামে দুটি বেসরকারী সংস্থা মনোনীত হয়েছে। জানা যায়, ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারী-পুরুষদের মৌলিক সাক্ষরতা ও জীবন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সরকার এ প্রকল্প গ্রহণ করে। দেশের ২৫০টি উপজেলায় ৭৫ হাজার শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তুলে ৪৫ লাখ নিরক্ষর মানুষকে লেখাপড়া শেখানোর পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের ১৩৭টি উপজেলায় কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
×