ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আবুধাবীতে বৃহস্পতিবার শুরু পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট

মিসবাহ-ইউনুস উত্তর যুগে পাকিস্তান ক্রিকেট

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মিসবাহ-ইউনুস উত্তর যুগে পাকিস্তান ক্রিকেট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘মিসবাহ-ইউনুস আমাদের কিংবদন্তি। তাদের অভাব সহসা পূরণ হওয়ার নয়।’ সরফরাজ আহমেদ। তিন ভার্সনে পাকিস্তানের নতুন অধিনায়ক মোটেও বাড়িয়ে বলেননি। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই অবসর নিয়েছেন আধুনিক ব্যাটিংয়ের বিস্ময়কর এ যুগলবন্দী। বৃহস্পতিবার শুরু হতে যাওয়া আবুধাবী টেস্টের মধ্য দিয়ে মিসবাহ উল হক-ইউনুস খান উত্তর যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটা হবে ডে-নাইট। তবে সব ছাপিয়ে আলোচনায় কেবলই অবসরে যাওয়া দুই গ্রেট। স্বাভাবিক। ইউনুস-মিসবাহ একসঙ্গে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে ১৯৩টি টেস্ট খেলেছেন। দু’জনে মিলে সংগ্রহ করেছেন ১৫,৩৩১ রান। মূলত তাদের ব্যাটে ভর করেই প্রথমবারের মতো পাকিস্তান প্রথমবারের মতো টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠেছিল। দু’জনের সেঞ্চুরি সংখ্যা ৪৪, সেঞ্চুরি জুটি ১৫টি। নতুন কা-ারি সরফরাজ আরও বলেন, ‘অবশ্যই ব্যাটিংয়ে তাদের অভাব সহজে পূরণ হওয়ার নয়। পাকিস্তান ক্রিকেটে তাদের যথেষ্ট অবদান ছিল। কিন্তু তারপরও এখন আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজতে হবে।’ ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলকে বহনকারী বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ হয়ে আছে। বিদেশী বড় কোন দল সেখানে যায়নি। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পাকিস্তানের হোম ভেন্যু হিসেবে অনুমোদন দেয় আইসিসি। তারপর থেকে মরু শহরগুলোতে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজগুলোতে ইউনুস-মিসবাহর দাপট ছিল সর্বাগ্রে। দলে দু’জনের অবদান এতটাই যে, এ সময়ে আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত নয়টি সিরিজের একটিতেও পরাজিত হয়নি পাকিস্তান। মিসবাহর পরিবর্তে টেস্ট দলের দায়িত্ব পাওয়া সরফরাজ আহমেদের সামনে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ। ১০,০৯৯ রান নিয়ে শুধু পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকই নন, স্লিপ-ফিল্ডার বিশেষজ্ঞ হিসেবে ১১৮ টেস্টে রেকর্ড ১৩৯টি ক্যাচ তালুবন্দী করেছেন ইউনুস। অপরদিকে মিসবাহ ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তার অধিনায়কত্বের মুন্সিয়ানায় দলকে দুর্দান্ত সব সাফল্য উপহার দিয়েছেন। ইউনুস ও মিসবাহকে ছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে খেলতে নামা পাকিস্তনের জন্য একেবারেই এক নতুন অভিজ্ঞতা। গত সাত বছরে এই দু’জন ছিলেন টেস্ট দলের অপরিহার্য অংশ। সাফল্যের সারথী। তার ওপর পাকিস্তানের সামনে এখন ঘরের মাঠে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরিয়ে আনার হাতছানি। আগামী মাসে লাহোরে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে একটি টি২০ আয়োজনের মাধ্যমে সেই দ্বার আরও উন্মোচনের অপেক্ষায় এখন গোটা জাতি। ঠিক এই মুহূর্তে দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে হারিয়ে টেস্ট অঙ্গনে নিজেদের মর্যাদা ধরে রাখাও সরফরাজদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। বাবর আজম চার নম্বরে ব্যাটিং করবেন। অন্যদিকে এখনও টেস্ট না খেলা হারিস সোহেলকেও মূল একাদশে দেখা যেতে পারে। আজহার আলী ও আসাদ শফিকের মতো দুই স্টাইলিশকে ব্যাটিংয়ে নেতৃত্বভার নিতে হবে। যদিও হাঁটুর ইনজুরির কারণে আজহারের প্রথম টেস্টে খেলা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। পাঁচ ফাস্ট বোলারের সাঙ্গে মূল স্পিনার হিসেবে দলে ফিরেছেন অভিজ্ঞ ইয়াসির শাহ। দুই বছর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-১ সিরিজ জয়ে ২৪টি উইকেট নিয়েছিলেন তুখোড় এই লেগস্পিনার। বোলিং জুটিতে তার সঙ্গী হিসেবে দেখা তরুণ মোহাম্মদ আসগর ও বিলাল আসিফকে দেখা যেতে পারে। গ্রেট মিসবাহ-ইউনুসকে ছাড়া নতুন এক টেস্ট যুগে প্রবেশের সিরিজটা স্মরণীয় করে রাখতে চায় সরফরাজবাহিনী।
×