ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গণশুনানি

বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৭২ পয়সা বৃদ্ধির সুপারিশ

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৭২ পয়সা বৃদ্ধির সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আওতাধীন খুচরা পর্যায়ে গ্রাহকের বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৭২ পয়সা বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি কমিটি। পিডিবির তাদের প্রস্তাবে ইউনিট প্রতি ৯৫ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিল। মঙ্গলবার রাজধানীর কাওরানবাজার টিসিবি মিলনায়তনে সকাল থেকে শুরু হওয়া গণশুনানিতে পিডিবির গ্রাহক পর্যায়ে দর বৃদ্ধির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বহুল আলোচিত ব্যাটারিচালিত যানের সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি থাকলে বিদ্যুত দেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ‘শ্রেণী’তে অন্তর্ভুক্ত করে দেয়ার সুপারিশ করেছে। গণশুনানিতে পিডিবির পক্ষে খুচরা পর্যায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব তুলে ধরেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ। শুনানির সঞ্চালনের দায়িত্বে ছিলেন বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম। শুনানিতে বিইআরসির পক্ষে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এটির সদস্য মিজানুর রহমান, রহমান মুরশেদ, আবদুল আজিজ খান ও মাহমুদউল হক ভুইয়া। শুনানিতে পিডিবি চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বলেন, বর্তমানে ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে ঘাটতি থাকায় প্রতি ইউনিটে ৩ শতাংশ হারে লোকসান দিচ্ছে পিডিবি। এতে করে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। পাইকারি বিদ্যুতের দাম সাড়ে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি বিবেচনায় সাড়ে ১৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করছি। বিইআরসির কারিগরি কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান বলেন, পাইকারি বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি দাম ৫৭ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি আমরা। যদি এই দাম বিইআরসি চূড়ান্ত আদেশে পাইকারি বিদ্যুতের দাম আরও কম করার সিদ্ধান্ত দেন তাহলে পিডিবির খুচরা পর্যায়ের বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি যে ৭২ পয়সা বাড়ানোর যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা কমানো যেতে পারে। কারিগরি টিম তাদের প্রস্তাবে আরও বলেছে, যারা প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করবেন তাদের কাছ থেকে জামানত নেয়ার দরকার নেই। প্রসঙ্গত পিডিবি পাইকারি বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৮৭ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে গত ২০ ফেব্রুয়ারি। গত সোমবার এ প্রস্তাবের ওপর শুনানিতে বিইআরসির কারিগরি কমিটি ইউনিট প্রতি পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৫৭ পয়সা বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে খুচরা পর্যায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি। আজ বুধবার পল্লী বিদ্যুত সমিতির দেয়া প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি হবে। পিডিবি এককভাবে পাইকারি বিদ্যুত কিনে ছয়টি বিতরণ সংস্থার কাছে তা বিক্রি করে আর বিতরণ সংস্থাগুলো গ্রাহক পর্যায় বিদ্যুত বিতরণ করে থাকে। পিডিবি একাধারে পাইকারি বিদ্যুত সরবরাহের পাশাপাশি গ্রাহক পর্যায়ও বিদ্যুত বিতরণ করে থাকে। শুনানিতে ভোক্তাদের সংগঠন কনজুমার এ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নেই বলে জানিয়েছেন। তিনি গণশুনানিতে বলেন, যেসব হিসেবের ভিত্তিতে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তা নিয়ে আমাদের অভিযোগগুলো গত সোমবারের শুনানিতে উত্থাপন করেছি। যেহেতু সেই বিতর্কগুলো এখনও শেষ হয়নি বা সে ব্যাপারে কোন আদেশ দেয়নি কমিশন। পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে ফয়সালা না হলে খুচরা পর্যায় দাম বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনার সুযোগ নেই। সোমবারের মতো গতকাল মঙ্গলবারও গণশুনানির বাইরে বিক্ষোভ করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল ও গণতান্ত্রিক বামমোর্চার নেতা কর্মীরা। বামপন্থী সংগঠনগুলো বলছে যতদিন গণশুনানি চলবে ততদিন দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করে তারা বিক্ষোভ করবেন।
×