ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আয়েশা শারিন

পূজার আগে বাড়তি ফেসিয়াল

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পূজার আগে বাড়তি ফেসিয়াল

বেজে উঠতে শুরু করেছে ঢাকের বাদ্য। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। উৎসবে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে চান সবাই। তাই রূপচর্চার বিষয়গুলো শুরু করতে হবে এখন থেকেই। উৎসবে নিজেকে সুন্দর দেখাতে চাইলে এখনই সেরে নিন ফেসিয়াল। আর এটি আপনি করতে পারেন ঘরে বসেই। চলুন জেনে নেয়া যাক। ফেসিয়াল করার শুরুতে মুখটা পরিষ্কার করে নিন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একটা ভেজা নরম তোয়ালে রুমাল দিয়ে মুখটা মুছে ফেলুন। এরপর যে কোন হারবাল ক্লিনজিং মিল্ক পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে মুখটা ৫-৬ মিনিট ম্যাসাজ করুন। ম্যাসাজ করার নিয়ম হচ্ছে উভয় হাতের চার আঙ্গুলের সাহায্যে নিচ থেকে উপরের দিকে। কপাল, থুঁতনি ও ঠোঁটের ওপরে করতে হয় দুই আঙ্গুলের সাহায্যে। এরপর ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুখটা মুছে নিন। গরম পানি দিয়ে মুখ ভিজিয়ে নিন। এরপর সমস্ত মুখে ফেসিয়াল স্ক্রাব ম্যাসাজ করুন। এতে ত্বকের মরা কোষ ঝরে যাবে এবং ত্বক মসৃণ ও নরম হবে। একটি গামলায় ফুটন্ত পানি নিন। মাথায় তোয়ালে পেঁচিয়ে গামলা থেকে উড়ে আসা পানির বাষ্প মুখে লাগতে দিন। এভাবে পাঁচ মিনিট থাকতে হবে। তবে এক্ষেত্রে ত্বক যদি সেনসেটিভ হয়, ত্বকে ব্রণ বা অন্য কোন দাগ থাকে তবে এই ধাপটি বাদ দিন। এরপর মুখ মুছে নিয়ে আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী প্যাক লাগান। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ব্যবহার করতে পারেন চন্দনের প্যাক। তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে আধা চামচ লেবুর রস, পাকা পেঁপে এবং ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করুন। শুষ্ক ত্বকের জন্য আধাকাপ কলা ও মধু মিশিয়ে ব্যবহার করুন এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে। মিশ্র ত্বক গোলাপ ফুলের পাপড়ির পেস্ট, গোলাপজল, টক দই ও মধু দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। প্যাক শুকিয়ে গেলে মুখ ভালভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে রোদে পোড়া দাগ হলে পাকা টমেটোর রস লাগান। পাকা টমেটো প্রাকৃতিক বিচের কাজ করে। এক টুকরো তুলোয় টোনার নিয়ে সারা মুখে ও ঘাড়ে লাগান। বাজারে কেনা টোনার না থাকলে শসার রস বা আলুর রস টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তবে চোখের চারপাশে টোনার লাগাবেন না। সব শেষে মুখে লাগান ময়েশ্চারাইজার। মুখটা একটু ভেজা থাকতেই দু’হাতে ময়েশ্চারাইজার লোশন নিয়ে আলতো হাতে লাগান। মুখের যেসব জায়গা বেশি শুষ্ক সে জায়গাগুলোতে দু’বার করে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। এতে দীর্ঘ সময় ত্বক আর্দ্র থাকবে। আমাদের প্রতিদিনের যতেœ রূপচর্চা একটি জরুরী বিষয়। আর কিছু বিষয় আছে যেগুলো ছাড়া রূপচর্চা অসম্পূর্ণ। নানা উপায়ে আমরা রূপচর্চা করে থাকি। তার মধ্যে স্ক্রাবিং, ক্লিনজিং, ময়েশ্চারাইজিং, টোনিং উল্লেখযোগ্য। স্ক্রাবিং নরমাল স্কিন হলে কমলালেবুর খোসা ও চালের গুঁড়ার পেস্ট অথবা বার্লি ও ঠা-া দুধের মিশ্রণ ব্যবহার স্ক্রাবার হিসেবে করতে পারেন। ড্রাই স্কিনের ক্ষেত্রে চালের গুঁড়া ও দুধের সরের সঙ্গে একটু মধু মিশিয়ে নিন। অয়েলি স্কিনে মসুর ডালবাটা ও কমলালেবুর খোসা দিয়ে স্ক্রাব করা যায়। কম্বিনেশন স্কিনের ক্ষেত্রে কর্নফ্লাওয়ার ও এক চিমটে কর্পূর কুসুম গরম পানিতে মিশ্রণ করে স্ক্রাবিং করুন। মনে রাখতে হবে, স্ক্রাবিংয়ের সময় হাল্কা প্রেসার দিয়ে সার্কুলার মুভমেন্টে ম্যাসাজ করতে হবে। ক্লিনজিং নরমাল স্কিন হলে কটন বল ঠা-া দুধে চুবিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। তারপর আর একবার পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। ড্রাই স্কিন হলে শসার রস ও ঠা-া দুধের মিশ্রণ কটন বলে ডুবিয়ে পরিষ্কার করে নিন। অয়েলি স্কিনে বেশি ময়লা জমে বলে ঠা-া দুধের সঙ্গে পুদিনাপাতার রস মিশিয়ে নিন। এরপর কটন বল দিয়ে, সেই মিশ্রণে ডুবিয়ে ভাল করে ক্লিনজিং করুন। কম্বিনেশন স্কিনের ক্ষেত্রে ঠা-া দুধে কটন বল ভিজিয়ে পরিষ্কার করলেই উপকার পাবেন। ময়েশ্চারাইজিং নরমাল ও কম্বিনেশন স্কিনে এ্যালোভেরা জেল ও সামান্য মধু মিশিয়ে লাগানো যেতে পারে। অয়েলি স্কিনে আপেল কুচিয়ে তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে লাগিয়ে পরে ধুয়ে নিন। ড্রাই স্কিনে মধুর সঙ্গে নারিকেল তেল মিশিয়ে লাগালে বেশ উপকার পাবেন। টোনিং নরমাল ও ড্রাই স্কিনের জন্য শুধু গোলাপজল দিয়ে টোনিং করলেই হবে। অয়েলি স্কিনে পুদিনাপাতা, শসা ও লেবুর রস ভাল করে মিশিয়ে মাখতে পারেন। কম্বিনেশন স্কিনের জন্য টমেটো রস, শসার পেস্ট ও গোলাপজলের মিশ্রণ ভাল টোনার হিসেবে কাজ করে।
×