ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাখাইনে আগে বন্ধ করতে হবে সহিংসতা ॥ ফিলিপ গ্র্যান্ডি

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রাখাইনে আগে বন্ধ করতে হবে সহিংসতা ॥  ফিলিপ গ্র্যান্ডি

চট্টগ্রাম অফিস/কক্সবাজার প্রতিনিধি ॥ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ গ্র্যান্ডি রবিবার উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সর্বাগ্রে বন্ধ করতে হবে সহিংসতা। এরপর সমাধানে পৌঁছাতে হবে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে। ফিলিপ গ্র্যান্ডি আরও বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান মিয়ানমারের হাতেই। কারণ এর সঙ্কটের উৎপত্তি সেখান থেকেই। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গারা বীভৎস সহিংসতার শিকার। তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাদের চিকিৎসা প্রয়োজন। প্রয়োজন অতি জরুরী খাদ্য সরবরাহ, আশ্রয়ও। তিনি মিয়ানমার সরকারের উদ্দেশ করে বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। রবিবার দুপুরে তিনি উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং ক্যাম্পে অবস্থানরত কর্মকর্তা ও আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তিনি উখিয়ার বালুখালি, থাইনখালিতে রোহিঙ্গা শিবির ও ইউএনএইচসিআরের বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে দেখেন। তিনি সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন। পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে ফিলিপ গ্র্যান্ডি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের মানবিকতায় তিনি মুগ্ধ। বাংলাদেশের মানুষের মানবিক সহায়তা তার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ রোহিঙ্গাদের প্রতি যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তা বিরল ঘটনা। প্রতিদিন হাজার হাজার বাংলাদেশী বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে রোহিঙ্গাদের কাছে ছুটে আসছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য যে মানবিকতা ও উদারতা দেখিয়েছে এজন্য তিনি এদেশের সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ফিলিপ গ্র্যান্ডি বলেন, ক্যাম্প পরিদর্শনকালে তিনি বহু রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি দেখেছেন, এদের মাঝে কারও হাত নেই, কারও পা নেই। অনেকের শরীর বুলেটবিদ্ধ। কোন রকমে প্রাণ নিয়ে তারা এদেশে পালিয়ে এসেছে। রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে তিনি যে বর্ণনা শুনেছেন তা নির্মম। বহু রোহিঙ্গা স্বজন হারিয়েছে। ফলে তাদের মানষিক আঘাতটা বেশি। সঙ্গত কারণে এসব রোহিঙ্গাদের মানষিক আঘাত দূর করতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে। ফিলিপ গ্র্যান্ডি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান মিয়ানমার সরকারকে দিতে হবে। তার আগে রাখাইন রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মিয়ানমার সরকার যদি চায় রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টিতে ইউএনএইচসিআর সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনেও সহায়তা করবে। উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ফিলিপ গ্র্যান্ডি উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেছিলেন। ওই সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কথা বলেন।
×