স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে ‘জয়-পরাজয়’ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। বলতে গেলে থাকেই না। এমন ম্যাচে সফরকারী দলগুলো ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন ভালভাবে সেরে নেয়। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। উইকেটের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করার চেষ্টা করে। বাংলাদেশ দল সেই হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রস্তুতি ম্যাচে দুর্দান্ত প্রস্তুতিই সেরে নিচ্ছে। প্রথমদিন ব্যাটিং প্র্যাকটিসটা অসাধারণ করেছে। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে বোলিং প্র্যাকটিসটাও হয়েছে দারুণ। প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে ৩০৬ রান করার পর ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশকে বিপদে ফেলেছে। তারা যদিও পাল্টা জবাব দিয়েছে। স্কোর তাই বলছে। ৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। ৭ রানে এগিয়ে যায়। কিন্তু দিনের শেষদিকে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। যা টেস্টে করা হয় না। মারমুখী ব্যাটিংয়ে সফলও হয়েছে স্বাগতিকরা। এরপর ব্যাট হাতে নেমে বিনা উইকেটে ৬ রান করে ১ রানে পিছিয়ে থাকে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে নেমে ইমরুল কায়েস (৪*) ও লিটন কুমার দাশ (২*) ব্যাট হাতে আছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট পেসবান্ধব। এই ধরনের উইকেটে পেসারদেরই আসল কাজ থাকে। সেই হিসেবে বাংলাদেশ পেসাররা দুর্দান্ত বোলিংই করেছেন। পাঁচ পেসার নিয়ে দল গড়া হয়েছে। এরমধ্যে রুবেল হোসেন ভিসা জটিলতায় প্রস্তুতি ম্যাচের আগে দক্ষিণ আফ্রিকা পৌঁছাতে পারেননি। তাই বেনোনির উইলোমুর পার্কে চলমান প্রস্তুতি ম্যাচটিতে খেলতে পারেননি। শুক্রবারই দক্ষিণ আফ্রিকা পৌঁছে গেছেন রুবেল। কিন্তু ম্যাচতো আর খেলতে পারছেন না। হাতে থাকে বাকি চার পেসার। সবাই বোলিং করেছেন। মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শফিউল ইসলাম ও শুভাশীষ রায় বোলিং করেছেন। সবাই স্বাগতিকদের চাপে রেখেছেন।
প্রথমদিনে মুমিনুল হকের ৬৮, মুশফিকুর রহীমের ৬৩, সাব্বির রহমান রুম্মনের অপরাজিত ৫৮, সৌম্য সরকারের ৪৩ ও ইমরুল কায়েসের ৩৪ রানে ৭ উইকেটে ৩০৬ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ। এরপর হাতে থাকা ৫.৩ ওভার খেলে ২১ রান করতেই ১ উইকেট হারিয়েছিল স্বাগতিকরা। তাতে করে প্রথমদিনে ২৮৫ রানে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করার সুবিধা নিয়েছিল বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানরাও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছিলেন। তামিম ইকবাল মাংশপেশিতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। বাকি পুরোটা সময়ই বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের নিয়ন্ত্রণে ছিল ম্যাচ। এরপর স্বাগতিকরা ব্যাট হাতে নেমে প্রথমদিনে ১ উইকেট হারায়। সেটি রান আউট হয়। দ্বিতীয়দিন ১৬৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। এই সময় পর্যন্ত প্রত্যেক পেসার ১টি করে উইকেট নেন। সঙ্গে স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজও ১ উইকেট শিকার করেন। এরপর একটা বড় জুটি গড়ার সম্ভাবনা জাগায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাথু ক্রিসটেনসেন ও শন বার্গ মিলে দলকে ২০০ রানের ওপরে নিয়ে যান। কিন্তু ২৪৭ রানের বেশি এ জুটিকে এগিয়ে যেতে দেননি শফিউল। ৫৩ রান করা ক্রিসটেনসেনকে এলবিডাবলিউ করে দেন। ৭৯ রানের জুটি গড়ে এ জুটি বাংলাদেশ বোলারদের ভোগায়। এ পর্যন্ত পুরোটাই বাংলাদেশের দখলে থাকে ম্যাচ। ৭ উইকেটের পতনও ঘটে। কিন্তু অষ্টম উইকেটে গিয়েই বার্গ ও মিগায়েল প্রিটোরিয়াস মিলে মারমুখী হয়ে খেলতে থাকেন। তাদের শটগুলো লাগতেও থাকে। ছক্কা-চার হতে থাকে। মুহূর্তেই বাংলাদেশ থেকে এগিয়েও যায় স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের চেয়ে যেই ১ রানে এগিয়ে যায়, প্রিটোরিয়াসকে আউট করেন তাইজুল। এরপর ৩০৮ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। তামিম চোট পেয়ে মাঠের বাইরে। তাই ব্যাট হাতে নামতে পারবেন না। সৌম্য সরকারকেও ওপেনিংয়ে নামানো হয়নি। ইমরুল ও লিটন ওপেনিংয়ে খেলছেন। আজ তৃতীয় দিনে তারাই নামবেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: