সুগার মিলের গা ঘেঁষে লালমাটির যে রাস্তাটা চলে গেছে
উত্তরে তিনশ’ মিটার, তার বাঁক ঘুরতেই
ঢিং ঢিং পাড়া।
পাশেই হাফপ্যান্ট পরে দাঁড়িয়ে আছে শ’পাঁচেক ঘর
হাতের বামে যে আস্তানা-এটাই লরেন মর্মের বাড়ি।
বউটা পোয়াতি, আট মাস।
ককিয়ে ককিয়ে কাঁদে মরদটা কই?
আখ ক্ষেতের ঠুটায় পড়ে আছে এক জোড়া দেহ
পরিত্যক্ত, নিষ্প্রাণ
ভোজের মহোৎসবে ব্যস্ত হাজারো কীট, তারা জানে না
এটা ভূমিপুত্রের লাশ।
চারদিকে আগুন, চলছে গোলাগুলি। একদল বুনো বর্গী
উদ্যত বল্লম হাতে, তার মাঝে বাঁচাও বাঁচাও বলে
ছুটছে; ভিটা হারানোর ক্রন্দন।
লরেনের ঘরে তখন কৃষ্ণচূড়া আগুন, মাতাল নৃত্যে
বিভোর
অসুস্থ নারী আগুনে ঝলসানো হাঁসের মতোই প্রাণহীন।
রক্ষকই ভক্ষক-কী বিচিত্র চিত্রনাট্য!
আর্ট ফিল্মের শেষ দৃশ্যে দাঁড়িয়ে থাকে কিছু
দুর্বোধ্য পোড়া খুঁটি।
মাটি হারিয়ে টেরাকোটা মানুষ পড়ে আছে অভুক্ত
স্বপ্নহীন, রক্তাক্ত ক্ষতে ভনভন করে উড়ছে
অশুভ রাক্ষস।
পরাজয় আর প্রতারণার যৌথ গ্লানিতে যেন সঙ্কুচিত হয়ে গেছে
বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের বিশাল ভূখন্ড
তবুও উদ্বাস্তু ‘চোখের ঝিলিকে’ হাতছানি দেয়
আগুনে পোড়া খুঁটিতে দাঁড়িয়ে থাকা সাঁওতালী স্বপ্ন।