স্মার্ট ন্যাপি ম্যাট

শিশুর শারীরিকভাবে বেড়ে ওঠা বা তার বিকাশের ওপর নজর রাখার জন্য একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বিশেষ ধরনের ন্যাপি ম্যাট তৈরি করেছে। এটি এক ধরনের বিছানা বা মাদুরের মতো যার উপরে শুইয়ে শিশুর ন্যাপি বদল করা হয়। এই বিছানাকে বলা হচ্ছে স্মার্ট ন্যাপি ম্যাট। উদ্ভাবকদের মতে, এর ফলে মা-বাবা এখন তার নবজাতকের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখতে পারবেন খুব সহজেই। এই বিছানার ওপর শিশুকে শুইয়ে দিলেই মোবাইল ফোনে ইন্সটল করা এ্যাপে চলে আসবে নানা রকমের তথ্য। এই দুটো যুক্ত থাকে ব্লুটুথের মাধ্যমে। যেসব তথ্য পাওয়া যাবে তার মধ্যে রয়েছে- শিশুর ওজন কত, লম্বায় কতটুকু হয়েছে, এক সপ্তাহ আগে কত ওজন ছিল ইত্যাদি। এক নবজাতকের এরকম একজন মা এরিন মেরানি বলেন, ‘আমার সন্তান যখন জন্ম নেয় তখন ওর ওজন খুব একটা বাড়ছিল না। ফলে আমার দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। কিন্তু এখন আমি ওকে ন্যাপি ম্যাটের ওপর শুইয়ে দিয়ে নিয়মিত ওর ওজন মেপে নিতে পারছি। আমাকে আর শিশু ডাক্তারের কাছে যেতে হচ্ছে না। এই কাজটা আমি করতে পারছি ঘরে বসেই। কোন ঝামেলা ছাড়াই। ফলে এটা একটা বড় রকমের শান্তি।’ এই অ্যাপের সাহায্যে জানা যায় শিশুর ন্যাপি কখন বদল করতে হবে, শিশুটি প্রয়োজন মতো ঘুমিয়েছে কিনা, খেয়েছে কিনা- বলছিলেন এই স্মার্ট ন্যাপি ম্যাট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হ্যাচ বেবির প্রধান নির্বাহী অ্যান ক্রেডিট ভাইস। ‘আমরা নানা রকমের পরামর্শও দেই। অন্যান্য শিশুর বেড়ে ওঠার পাশাপাশি আপনার সন্তানের শারীরিক বিকাশের ব্যাপারেও আমরা নানা রকমের টিপস দিয়ে থাকি। স্বাস্থ্যগত পরামর্শ থেকে শুরু করে শারীরিক নানা বিষয়ে এসব পরামর্শ দেয়া হয়। তখন সহজেই বুঝতে পারেন যে তাদের শিশুর কোথাও কোন সমস্যা হচ্ছে কীনা,’ বলেন তিনি। কিন্তু কোন কোন চিকিৎসক বলছেন, এত তথ্য মা-বাবার মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ এসবের হয়তো কোন প্রয়োজনই ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল চিলড্রেন্স হসপিটালের চিকিৎসক ড. ওয়েনডি সু সুয়ানসন বলেন, ‘আপনি যদি এত সব তথ্য উপাত্তের দিকে খুব বেশি মনোযোগ দেন, তা হলে সারাদিনই আপনাকে এসব নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতে হবে। আপনাকে সারাক্ষণই নানা রকমের নম্বরের পেছনে ছুটতে হবে। ফলে আপনি আপনার শিশুকে ঠিক মতো দেখাশোনা করতে পারবেন না, পারবেন না তাকে গান গেয়ে শোনাতে। ফলে আপনার ঘুমও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় এসব তথ্যে অনেক ক্ষতি হতে পারে মা-বাবার এবং এর পরিণতিতে শিশুরও।’ কিন্তু এই স্মার্ট ন্যাপি ম্যাট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, এর ফলে শিশুর বেড়ে ওঠার ওপর নজর রাখার ব্যাপারে পিতামাতার কাজ সহজ হয়ে উঠবে। তারা বলছেন, এই প্রযুক্তি তারা আরও উন্নত করার চেষ্টা করছেন। যেমন শিশুকে ম্যাটের ওপর শুইয়ে দেওয়ার পর এখন পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করে অ্যাপটি চালু করতে হয়। কিন্তু ভবিষ্যতে হয়ত ফোনটি হাতেই নিতে হবে না। সূত্র : বিবিসি, লাইফ সায়েন্স