ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মামলা তুলে নিতে হুমকি ॥ ছাত্রীর কলেজ বন্ধ,পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বাবা

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মামলা তুলে নিতে হুমকি ॥ ছাত্রীর কলেজ বন্ধ,পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বাবা

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ২১ সেপ্টেম্বর ॥ মামলা তুলে নিতে নিলুফাকে জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। তাদের ভয়ে নিলুফার কলেজে যেতে পারছে না। কলেজের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি সে। বাবা মোকলেছুর রহমান সন্ত্রাসীদের ভয়ে ১৩ দিন ধরে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মা তাসলিমা বেগম দুই মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পুলিশকে জানানোর পরও পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। ঘটনা ঘটেছে বরগুনার তালতলী উপজেলার আঙ্গারপাড়া গ্রামে। জানা গেছে, ২০১৪ সালে উপজেলার আঙ্গারপাড়া গ্রামের মোকলেছুর রহমানের মেয়ে নিলুফার সঙ্গে একই গ্রামের প্রতিবেশী লেহাজ চৌকিদারের ছেলে মুনসুরের বিয়ে হয়। এর পর থেকে যৌতুকের জন্য মুনসুর বিভিন্নভাবে নিলুফাকে নির্যাতন করে আসছে। এ ঘটনায় ২০১৫ সালে ২০ জুলাই নিলুফা বাদী হয়ে মুনসুর ও তার ভাই হাবিব চৌকিদারকে আসামি করে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার জের ধরে মোকলেছুর রহমানের ভাগিনা কামাল মৃধাকে গত ৩০ জুন রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মীমাংসার কথা বলে সন্ত্রাসী সেলিম চৌকিদার, তার স্ত্রী লাইজু, ভাই আবদুর রব চৌকিদার, চাচা মুনসুর চৌকিদার, হাবিব চৌকিদার ও ভাইয়ের ছেলে সাইফুল চৌকিদার, মাসুম ও ইউনুচ তাদের বাড়ির পুকুরপারে গোয়ালঘরের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দু’পা ও বাঁ হাত ভেঙ্গে দেয় এবং বাঁ চোখ ট্যাডা (দেশীয় অস্ত্র) মেরে উপড়ে ফেলে। কামাল মৃধা বাগেরহাটের বগা ক্লিনিকে পঙ্গুত্ব অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় মোকলেছুর রহমান গত ২ জুলাই বাদী হয়ে সেলিম চৌকিদারকে প্রধান আসামি করে আট জনের নামে তালতলী থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আবদুর রব চৌকিদার ও লাইজুকে গ্রেফতার করেছে। এ মামলা দায়েরের পর থেকে সন্ত্রাসীরা বাদী মোকলেছুর রহমান ও মেয়ে নিলুফাকে মামলা তুলে নিতে জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। মামলার বাদী মোকলেছুর রহমান সন্ত্রাসীদের ভয়ে ১৩ দিন ধরে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মেয়ে নিলুফা কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজে একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগে লেখাপড়া করে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে নিলুফার কলেজে যেতে পারছে না। মা তাসলিমা বেগম দুই মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পুলিশকে জানানোর পরও পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আসামি সেলিম চৌকিদারের মুঠোফোনে এ অভিযোগের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমাদের হয়রানি করার জন্য এ ঘটনা সাজানো হয়েছে। তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×