ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে ব্যাপক অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কুড়িগ্রামে ব্যাপক অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ভুরুঙ্গামারীতে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সমন্বয়কারীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও উৎকোচ গ্রহণের কয়েক দফা অভিযোগ প্রেরণ করলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। তার দুর্নীতির কারণে ভুরুঙ্গামারীতে প্রকল্পের কার্যক্রম ভেস্তে যেতে বসেছে। জানা গেছে, সাধারণ মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ভুরুঙ্গামারীতে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প বাস্তবায়নের কর্মসূচী হাতে নেয়। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে উপজেলার ১০ ইউনিয়নে দল করে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ফিল্ড সুপারভাইজার ও মাঠ কর্মীদের মাধ্যমে স্বল্পসুদে ঋণ বিতরণের নিয়ম থাকলেও উপজেলা সমন্বয়কারী বিকাশ ডাকুয়া দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির কারণে প্রকল্পের কার্যক্রম ভেস্তে যেতে বসেছে। জানা গেছে, ওই বিকাশ ডাকুয়া যোগদানের পর থেকে প্রকল্পের কার্যক্রমে অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। অফিসে কম্পিউটার-কাম অফিস সহকারী ইসমাইল হোসেনের নিকট যোগদানের সময় ১০ হাজার টাকা উৎকোচ না দেয়ার কারণে তাকে এক মাস পর্যন্ত যোগদানপত্র গ্রহণে বিলম্বসহ ৪ মাস বেতন বন্ধ রাখে। শুধু তাই নয় ওই পদে ইসমাইলকে দায়িত্ব বুঝে না দিয়ে আকলিমা নামে এক মাঠকর্মীকে অতিরিক্ত কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে প্রকল্পের ২২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা সরিয়ে দুজনে ব্যক্তিগত ব্যবসার কাজে লাগায়। পরে প্রকল্পের সকল স্টাফের স্বাক্ষরিত অভিযোগ করলে প্রায় দেড় বছর পরে ওই টাকা পর্যায়ক্রমে জমা দেয়। এর ফলে সমিতির ঋণ গ্রহীতাদের ঋণের সার্ভিস চার্জ দ্বিগুণ পরিশোধ করতে হয়েছে। এছাড়া সমিতিগুলো কিরূপ চলছে জানতে চাইলে সমিতির ম্যানেজার সোহরাব আলীর বলেন, ভুরুঙ্গামারীতে বিকাশ ডাকুয়া যোগদানের পর সমিতির কার্যক্রম ভেস্তে যেতে বসেছে। উপজেলা সমন্বয়কারী পাথরডুবি ইউনিয়ন ছাড়া অন্য ইউনিয়নের সমিতিতে তাকে পাওয়া যায় না এবং সমিতির ম্যানেজার ও সভাপতিদের সঙ্গে কোন সমন্বয় নেই বলে তিনি তাকে বদলির জন্য ইতোপূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের বরাবর অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানান তিনি। এছাড়া প্রকল্পের মোটরসাইকেলটি বলদিয়া ইউনিয়নের মাঠকর্মীর নিকট ২০ হাজার টাকা বন্ধক রাখারও অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। বিকাশ ডাকুয়ার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলায় প্রকল্পের বিভিন্ন অনিয়ম ও প্রায় ৪০ লক্ষাধিক টাকার দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কয়েকদফা সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ভুরুঙ্গামারীতে বদলি করা হয়েছে। এদিকে প্রকল্পে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয় জানতে চাইলে বিকাশ ডাকুয়া জানান, যদি মনে হয় সংবাদ প্রকাশ করেন আর না হলে প্রকাশ করবেন না। সংবাদ প্রকাশ করে কোন লাভ নেই। উল্লেখ্য, কম্পিউটার-কাম অফিস সহকারী ইসমাইল হোসেনকে তার দায়িত্ব ঠিকমতো বুঝে না দিয়ে তাকে হয়রানির উদ্দেশে সমিতির টাকা হস্তমজুদ রয়েছে অজুহাতে তার বেতন বন্ধ দেখিয়ে বেতনের টাকা উত্তোলন করে তাকে না দিয়ে ব্যাংকে জমা রাখেন। পরে বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকের পর ২০১৬ সালের জুন মাস থেকে ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত বেতনের টাকা প্রদান করেন। অনতিবিলম্বে বিকাশ ডাকুয়ার বিরুদ্ধে প্রেরিত অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভুরুঙ্গামারীতে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কার্যক্রম ভেস্তে যাবে এবং সমিতির সদস্যরা লাখ লাখ টাকা প্রতারিত হবে বলে একটি মহল ধারণা করছে।
×