ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ শুরু আজ মুশফিকদের

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ শুরু আজ মুশফিকদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকা পৌঁছে সোমবার থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন বাংলাদেশ টেস্ট দলে থাকা ক্রিকেটাররা। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। এবার ম্যাচ প্র্যাকটিসে নামার পালা। তিনদিন ব্যাট-বলের অনুশীলন শেষে আজ থেকে তিনদিনের মাঠের লড়াইয়ে নামবে মুশফিকবাহিনী। দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশের বিপক্ষে তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়। এই ম্যাচটির মাধ্যমেই বোঝা যাবে বাংলাদেশ দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কেমন করবে। ২০০৮ সালের পর ৯ বছর পর আবার দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ খেলতে গেছে বাংলাদেশ। এ সিরিজে কেমন করবে দল তা প্রস্তুতি ম্যাচেই আঁচ পাওয়া যাবে। অবশ্য প্রস্তুতি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা দলটি তারকাহীন। দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটাররা ম্যাচটিতে নেই। তাই ম্যাচটিতে বাংলাদেশ দল যেমনই করুক তা মূল সিরিজের জন্য গুরুত্ব হয়ে দাঁড়াবে না। এরপরও দক্ষিণ আফ্রিকা কন্ডিশনে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যান-বোলাররা কেমন নৈপুণ্য দেখাতে পারে তার ইঙ্গিত মিলবে। বিশেষ করে পেসারদের দিকেই নজর থাকবে। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট পেসবান্ধব, তা সবারই জানা। এ উইকেটে পেসাররাই মূল ভূমিকায় থাকবেন। তাইতো বাংলাদেশ দলও পেসনির্ভর দল গড়েছে। পেসাররা দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে কেমন করবে তা বোঝা যাবে। এ উইকেটে ম্যাচ প্র্যাকটিসে যদি ভাল কিছু করে দেখাতে পারেন মুস্তাফিজ, তাসকিন, শফিউল, শুভাশীষরা তাহলে আসল সিরিজেও নিশ্চয়ই ভাল করবেন। যদিও রুবেল হোসেন এখনও দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছাতে পারেননি। তাই প্রস্তুতি ম্যাচটিতে আর সবাই থাকলেও রুবেল যে থাকছেন না তা নিশ্চিত হয়ে গেছে। আজ থেকে তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়েই মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের। ৪৩ দিনের এই সফরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শুরুতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম ও ৬ অক্টোবর দ্বিতীয় টেস্টে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজ শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৫, ১৮ ও ২২ অক্টোবর যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। ২৬ ও ২৯ অক্টোবর যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় টি২০ খেলবে। তবে আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ হবে, তাই টেস্ট দলের ক্রিকেটাররাই দক্ষিণ আফ্রিকা গেছেন আগে। টেস্ট সিরিজ শেষ হওয়ার আগেই ওয়ানডে দলে যারা ডাক পাবেন তারা দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছাবেন। টেস্ট সিরিজে রয়েছেন মুশফিকুর রহীম, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, সাব্বির রহমান, মুমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন কুমার দাশ, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও শুভাশীষ রায়। ক্রিকেটাররা পুরোদমে প্রস্তুত হচ্ছেন। এখন মাঠের লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেয়ার পালা। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার কাজ হয়ে গেছে। এখন উইকেটের সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছে দুইদিন সকালে অনুশীলন করলেও বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশে অধিনায়ক হিসেবে থাকছেন আইডেন মার্করাম। সঙ্গে দলে আছেন তালাদি বোকাকো, ওখুলি কেলে, ম্যাথু ক্রিস্টেনসেন, মাইকেল কোহেন, আইজ্যাক ডিকগালে, জুবায়ের হামসা, হেনরিক ক্লাসেন, মিগায়েল প্রিটোরিয়াস, ইয়ানসি ভ্যালি, শন ভন বার্গ ও লনডিসওয়া জুমা। তারকাহীনই দল প্রোটিয়াদের। তাই এ দলটির বিপক্ষে সাবধান হয়েই খেলতে হবে। আনকোরা ক্রিকেটাররাই যদি বারোটা বাজিয়ে দেন তাহলে মূল সিরিজে বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। তবে খেলাটি হবে বেনোনিতে। তাই টেস্ট সিরিজে কেমন করবে বাংলাদেশ তা বোঝা কঠিন। কারণ প্রথম টেস্টটি হবে পোচেফস্ট্রুমে। বাংলাদেশ দল এখন অনেক ভাল ক্রিকেট খেলছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েও ভাল খেলার আশা করছে। আবার এরই মধ্যে প্রথম টেস্টের দলে নেই ভারনন ফিল্যান্ডার। ফিটনেসের অভাবে পুরো সিরিজ থেকেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন পেসার ডেল স্টেইন। অলরাউন্ডার ক্রিস মরিসও একই পথের পথিক। তাই পেস আক্রমণ দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্বলই হয়ে পড়েছে। তাইতো বাংলাদেশকে নিয়ে চিন্তায় আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন কোচ ওটিস গিবসন তো নিজ দলের ক্রিকেটারদের সতর্কই করে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে হাল্কাভাবে নেয়ার কোন সুযোগই নেই। এই বাংলাদেশের বিপক্ষে মানসিক দিক থেকে এগিয়ে থাকারও মানে হয় না। আমরা দেখেছি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তারা কেমন খেলেছে। গত বছর ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে আমি ছিলাম। সেবার বাংলাদেশ একটা টেস্ট জিতেছিল।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ খুব আত্মবিশ্বাসী একটি দল। হাল্কা মেজাজ নিয়ে তাদের স্বস্তির জায়গা দিতে চাই না। তারা কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবেই এসেছে। (কোর্টনি) ওয়ালশের মতো বোলার বাংলাদেশের কোচিং স্টাফে আছে। তাদের হেড কোচও (হাতুরাসিংহে) দারুণ কাজ করছে। এটা তাদের খেলায় শক্ত মেজাজ নিয়ে এসেছে।’ অবশ্য ভাল একটা সিরিজের আশা করছেন গিবসন, ‘আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত আছি। প্রত্যেক ক্রিকেটারকে ঘরোয়া লীগের ম্যাচ খেলে মাঠে নামতে হচ্ছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার পর গত আগস্ট থেকে আমরা কোন টেস্ট খেলিনি। এমন অবস্থাতেই আমাদের বাংলাদেশের বিপক্ষে নামতে হচ্ছে। তারপরও আশা করছি আমরা আমাদের লক্ষ্যের দিকে এগোতে পারব। ভাল একটা সিরিজ আশা করছি।’ মুশফিকরা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবেন? আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচেই তার খানিক হলেও আলামত মিলবে।
×