ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সঙ্কট কাটাতে বান্দরবানের হোটেল মোটেলে ৪০% ছাড় ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সঙ্কট কাটাতে বান্দরবানের হোটেল মোটেলে ৪০% ছাড় ঘোষণা

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান ॥ গত জুলাই মাসে পাহাড় ধসের ঘটনা, বিরূপ আবহাওয়া ও চলতি মাসে রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে বান্দরবান জেলা পর্যটক না আসায় সঙ্কটময় সময় পার করছে জেলার পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। এ সঙ্কট কাটাতে হোটেল মোটেলগুলোতে এবার পর্যটক টানতে ৪০% ছাড় ঘোষণা করেছে হোটেল মোটেল মালিক সমিতি। হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সূত্র জানায়, গত কয়েক মাস ধরে বান্দরবান জেলায় পর্যটক আগমনের সংখ্যা বেশ কমে যাওয়ার কারণে অলস সময় কাটছে তাদের, ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার কারণে পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা পর্যটকদের জন্য হোটেল মোটেলের সিট ভাড়ায় বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেছে। গতকাল রবিবার ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে হোটেল মোটেল মালিক সমিতির আওতাভুক্ত জেলা শহরের ৪৫ হোটেল মোটেলে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ১০ দিন এই ছাড় থাকবে। সূত্র জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আশানুরূপ পর্যটক না আসার কারণে মন্দা ভাব বিরাজ করছে জেলার বিকাশমান পর্যটন শিল্পে। অর্থ সঙ্কটের কারণে হোটেল-মোটেলগুলোর মালিকরা তাদের কর্মচারীদের মাসিক বেতন মেটাতে পারছে না, মূলত এ কারণেই শহরের বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে ছাড় দেয়ার মধ্যে দিয়ে পর্যটক টানতে চেষ্টা করছে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। জেলা শহরের হোটেল গ্রিনহীলের ম্যানেজার আশিষ ধর বলেন, এক সপ্তাহ ধরে হোটেলের রুমের মাত্র ২টি রুম ভাড়া হয়েছে, আয় না হওয়ার কারণে খুব সঙ্কটে আছি আমরা। বান্দরবানের পর্যটন শিল্পের বিকাশকে কেন্দ্র করে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান এবং দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরালেও ফের বেকারের খাতায় নাম লেখাতে হচ্ছে স্থানীয় যুবকদের। জেলার হোটেল থেকে কর্মচারী ছাঁটাই করে অর্থ সঙ্কট কাটানোর চেষ্টা করলেও অনেক যুবক বেকার হয়ে যাওয়ার কারণে তাদের পরিবারে হতাশা বিরাজ করছে। অন্যদিকে হোটেল-মোটেলগুলোর মতো দূর যাত্রার ভ্রমণের জন্য জীপ, হাইস, মাইক্রোগাড়ির উচ্চ ভাড়া দিয়ে পাওয়া দুষ্কর হলেও এখন ডিসকাউন্ট দিয়ে যাত্রী পাচ্ছে না বলে জানা গেছে। শহরের মেঘলা, নীলাচল, ন্যাচারেল পার্ক, বৌদ্ধ জাদী, চিম্বুক, শৈলপ্রপাত, মিলনছড়ি এখন অনেকটা পর্যটক শূূন্য থাকার কারণে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পড়েছে বেকায়দায়। সকাল থেকে স্পটগুলোতে তারা তাদের বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসলেও কোন ক্রেতা পাচ্ছে না। এই বিষয়ে পর্যটকবাহী জীপচালক জসিম উদ্দিন বলেন, বর্ষা মৌসুমও বিভিন্ন কারণে জেলায় পর্যটক নেই বললেই চলে, এখন কম ভাড়া দিয়ে গাড়ি কেউ নিচ্ছে না। আরও জানা গেছে, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জেলার প্রাকৃতিক পরিবেশ, পাহাড় চূড়ায় ভেসে বেড়ানো মেঘের ভেলা দেখার জন্য দিনে হাজার হাজার পর্যটক আসলেও বর্তমানে শতাধিক পর্যটক আসছে বান্দরবানে। ফলে পর্যটন ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, অন্যদিকে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এই বিষয়ে বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের ছাড়ের এই ঘোষণা, আশাকরি পর্যটকরা লুফে নিয়ে বান্দরবানে ভ্রমণে আসবে পরিবার পরিজন নিয়ে।
×