রোহিঙ্গাদের অবস্থা মনিটর করছেন প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে সেখান থেকে ই-মনিটরিং করছেন। কক্সবাজারে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকতা এবং বিভাগীয় কমিশনারসহ জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কর্মকা- সম্পর্কে গণমাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি মিডিয়া সেল গঠন করা হচ্ছে। কক্সবাজারের টেকনাফ উখিয়া সীমান্তে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনসহ তাদের ক্যাম্পের সব খবরাখবর জানাতেই মিডিয়া সেল খোলা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে এ ক্যাম্পের কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা গেছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ারের সভাপতিত্বে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের জন্য করণীয় ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা শেষে কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জানা গেছে, সমন্বয় সভায় কবির বিন আনোয়ার বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে টাইম টু টাইম ফলোআপ বর্তমানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন নির্দেশনা মোতাবেক মেডিক্যাল টিম গঠন, বিশুদ্ধ পানির জন্য টিউবওয়েল স্থাপন, পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য টয়লেট ও খাবারের জন্য ফুড গোডাউন নির্মাণ এবং এতিম শিশুদের চিহ্নিত করে তাদের আলাদা রাখার ব্যবস্থাসহ নানা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রোহিঙ্গা পুনর্বাসন নিয়ে যে কোন প্রকার তথ্য বিভ্রাট এড়ানো এবং সাংবাদিকদের পূর্ণ সহযোগিতার জন্যই এই মিডিয়া সেল উল্লেখ করে কবির বিন আনোয়ার বৈঠকে আরও বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব পর্যায়ের), জেলা তথ্য অফিসার এবং পিআইডির প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই মিডিয়া সেল গঠন করা হচ্ছে। সেখানে প্রতিদিন বিকেলে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক। এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সভায় গৃহীত কিছু পদক্ষেপের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন জনকণ্ঠকে জানান, ১২টি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। টেকনাফ ও উখিয়ার ১২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১২শ’ শৌচালয় এবং ১২শ’ নলকূপ স্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে ২শ’ শৌচালয় এবং ২শ’ নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে নারীদের জন্য ৬০ শতাংশ এবং বাকিগুলো পুরুষদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব ক্যাম্পে যোগাযোগের জন্য রাস্তা নির্মাণে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও ই-মনিটরিং করছেন। এছাড়াও ই-ফাইলের মাধ্যমেও অফিস করছেন প্রধানমন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনসহ তাদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, রোহিঙ্গারা তাদের রান্নার জন্য যেন আশপাশের বনাঞ্চল উজাড় না করে সে জন্য কেরোসিনের চুলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২৫টি অস্থায়ী স্বাস্থ্য ক্যাম্প খোলা হয়েছে। আরও ৬টি স্বাস্থ্য ক্যাম্প খোলার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ত্রাণ মজুদ রাখার জন্য ১৪টি গোডাউন তৈরি করা হচ্ছে।