ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খন্দকার মাহবুবুল আলম

প্রত্যাবাসনের জন্য চাপ প্রয়োগ

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

প্রত্যাবাসনের জন্য চাপ প্রয়োগ

যখন মানুষ মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে সাম্প্রদায়িক বা গোত্রিক, জাতিগত স্বার্থপর হয়ে ওঠে তখন তারা আর মানুষ থাকে না। যেখানে বর্মী সেনাদের হাতে জাতিগত নিধনের পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী। এর বিজড়িতদের মধ্যে হিন্দু রোহিঙ্গাও রয়েছে, তবে সংখায় কম। গত ২৫ আগস্ট ২০১৭ তারিখ থেকে তাদের ওপর নেমে আসে বর্মী সেনাদের ভয়াবহ বর্বর নির্যাতন। এরপর থেকে প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটছে নাফ নদী হয়ে বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্তে। অবোধ শিশু থেকে শুরু করে কেউই রেহাই পাচ্ছে না তাদের বর্বর নির্যাতন থেকে। নারী-পুরুষ, শিশু-যুবা নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে বর্বর সশস্ত্র বাহিনী। গুলি করে হত্যা, জবাই, আগুনে পুড়ে মারা ইত্যাদি ভয়ঙ্কর সব প্রক্রিয়ায় ওরা রোহিঙ্গাদের নিধন করে চলেছে। রোহিঙ্গাদের বাপ-দাদার চৌদ্দ পুরুষের বসতভিটাতে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিচ্ছে। সেই আগুনের লেলিহান শিখা প্রতিদিনই এপার থেকে দেখা যায়। আমাদের সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা এদেশে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গার প্রতি বিরল মানবতা প্রদর্শন করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেনÑ ‘প্রয়োজনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে নিজেরা ভাগ করে খাব।’ তাঁর এই মানবিক উদ্যোগের কারণে তিনি আজ সারা বিশ্বের কাছ থেকে সুনাম-সুখ্যাতি কুড়িয়েছেন। বাংলাদেশের গণমাধ্যম যেভাবে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা ও মানবেতর জীবনযাপনের তথ্যচিত্র ধারণ করে দেখাচ্ছে তা বিশ্ব বিবেককে জাগিয়ে তুলছে। এমনটি সত্যিই প্রশংসনীয়। বাংলাদেশে যেভাবে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঘটছে, তা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে বিভিন্ন সংস্থা থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। ‘বাংলাদেশ’ একটি জনবহুল দেশ। প্রায় ষোলো কোটিরও অধিক এ দেশের জনসংখ্যা তার ওপর এই রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ আমাদের দেশের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। যা দেশের জাতীয় অর্থনীতি ও সামাজিক নানা ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। এদের নিয়ে স্বার্থান্বেষীদের রাজনীতিও হতে পারে। ফলে অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। যাতে ওরা নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও দালালদের মাধ্যমে ছড়িয়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে হবে। নতুবা এর ফল ভাল হবে না। বাংলাদেশ মানবিক কারণে ওদের আশ্রয় দিলেও এ সমস্যার সমাধানে অর্থাৎ রোহিঙ্গাদের সে দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর কূটনৈতিক উপায়ে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। আজ যারা রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নির্যাতন করছে, তারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তারা ভুলে গেছেন গৌতম বৌদ্ধের সেই চির ভাস্কর মানবিক বাণীÑ ‘অহিংস পরমধর্ম’ এবং “জীবহত্যা মহাপাপ। আজ তারা মানুষ হয়েও নির্বিচারে এবং বর্বর কায়দায় মানুষ হত্যা করছে। তারা আজ বড় অসহায়। তাদের পাশে আজ সারা বিশ্বকে দাঁড়াতে হবে। মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রাম থেকে
×