ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেরা দুই তারকার দ্বন্দ্বে বেকায়দায় পিএসজি, ব্রাজিলিয়ান তারকার পাশে আলভেজ, বুঝতে পারছেন মেসির অভাব

ড্রেসিংরুমে নেইমার-কাভানি হাতাহাতি

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ড্রেসিংরুমে নেইমার-কাভানি হাতাহাতি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নেইমার ও এডিনসন কাভানির মধ্যে ফ্রিকিক ও পেনাল্টি নিয়ে দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। রবিবার রাতে ফরাসী লীগ ওয়ানের ম্যাচে লিঁওর বিরুদ্ধে পিএসজির হয়ে ফ্রিকিক নিতে এগিয়ে আসেন কাভানি। কিন্তু জাতীয় দলের সতীর্থ দানি আলভেজ বল নিয়ে বাড়িয়ে দেন নেইমারকে। ব্যাপারটি পছন্দ হয়নি কাভানির। বেশ রাগান্বিত হয়ে পড়েন এই উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড। এর কয়েক মিনিট পর (ম্যাচের ৭৯ মিনিটে) নেইমার স্পট কিক নেয়ার চেষ্টা করেন। তবে কাভানি সেটি হতে দেননি। নিজেই এগিয়ে আসেন কিক নিতে। এটি নিয়ে নেইমার বেশ অসন্তোষ প্রকাশ করেন, তর্ক করেন। তর্কে জেতেন কাভানিই। তবে স্পট কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। বাজে এই ঘটনার রেশ মাঠেই শেষ হয়নি। খেলার পর ড্রেসিং রুমেও উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় ব্রাজিলিয়ান ও উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ডের মধ্যে। দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যাওয়ার উপক্রম হয় বলে জানায় ফরাসী সংবাদ মাধ্যম। অনাকাক্সিক্ষত এ ঘটনায় বেশ বেকায়দায় পড়েছে ফরাসী লীগ ওয়ানের পরাশক্তিরা। এখন অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, বার্সিলোনায় লিওনেল মেসির কাছ থেকে যেমন সাহায্য পেতেন পিএসজিতে নেইমার তেমনি পাচ্ছেন না। মানে প্যারিসে এসে মেসির অভাবটা বুঝতে শুরু করেছেন নেইমার। ফরাসী সংবাদ মাধ্যম জানায়, ম্যাচ শেষে ড্রেসিং রুমে ঝগড়া বাধান কাভানি। এমন আচরণের জন্য ব্রাজিলিয়ান তারকাকে গালমন্দ করেন উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড। তবে ছেড়ে দেবার পাত্র নন নেইমারও। কাভানির আচরণে বেজায় চটে যান তিনি। এমনকি তারদিকে তেড়েও যান বার্সিলোনার সাবেক তারকা। তবে নেইমারের জাতীয় দলের সতীর্থ থিয়াগো সিলভা দু’জনের মধ্যে দেয়াল হয়ে দাঁড়ালে শারীরিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। ফরাসী সংবাদ মাধ্যমের দাবি, ফরাসী লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে পারলে মোটা অঙ্কের বোনাস পাবেন কাভানি। গত মৌসুমে সহজেই লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন এই উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড। তবে নেইমার বার্সিলোনা ছেড়ে পিএসজিতে আসায় এবার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়েছেন কাভানি। পিএসজিতে নিজের সুসংহত অবস্থান হাতছাড়া করতে চান না কাভানি। ফুটবলীয় প্রতিভা ও নৈপুণ্যে নেইমারের চেয়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে নেপোলির সাবেক ফরোয়ার্ড। তবে ক্লাবের সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে কাভানি নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে চান। চলতি মৌসুমে পিএসজির হয়ে চারটি পেনাল্টি কিকই নেন তিনি। নেইমার ও কাভানির মধ্যকার এই দ্বন্দ্বে পিএসজির অনেক ক্ষতি হবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। নেইমার-কাভানির স্পট কিক বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন সতীর্থ দানি আলভেজ। ফ্রিকিক নিতে এগিয়ে আসা কাভানির হাত থেকে বল কেড়ে নিয়েছিলেন এই রাইট ব্যাক। এ নিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন আলভেজের দাবি, নেইমার নয় ফ্রিকিকটা তিনি নিজে নিতে চেয়েছিলেন বলেই বল কেড়ে নেন। এক সাক্ষাতকারে আলভেজ বলেন, এ রকম জায়গা থেকে আমি আগেও গোল করেছি। আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, আরও একটা গোল করতে পারব। যদিও ম্যাচের দৃশ্য বলছে অন্য কথা। আলভেজ বল কেড়ে নেইমারকেই দিতে চেয়েছিলেন। বোঝা যাচ্ছে জাতীয় দলের অধিনায়ককে এ বিতর্ক থেকে আড়াল করতে চাইছেন এ ডিফেন্ডার। দলকেও এই বিতর্কের ঘোর থেকে বাইরে টেনে তুলতে চাইছেন আলভেজ। বলছেন, কে শট নিল সেটা খুবই নগণ্য ব্যাপার। দলের জয়টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আর সেটা সবসময়ই ব্যক্তিগত সাফল্যের উর্ধে থাকে। যখন দেখবেন ম্যাচের ফল আপনার পক্ষে যাচ্ছে না তখন আপনাকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমি সেটাই করছিলাম। ম্যাচে ফ্রিকিক বা পেনাল্টি কে নেবেন সেটা অনুশীলনেই নির্ধারিত থাকার কথা। মাঠে কোন পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে সাধারণত অধিনায়কই তা করে থাকেন। অধিনায়কের বাহুবন্ধনী এই তিনজনের কারও নেই। এসব পরিস্থিতিতে দলের কোন সিনিয়র খেলোয়াড়ের হস্তক্ষেপ কাজে দেয়। থিয়াগো সিলভার পক্ষে নাকি এটা সামলানো সম্ভব না। একাধিক তারকা থাকলে ব্যক্তিত্বের সংঘাতও দেখা দিতে পারে।
×