ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পিএসজির সৌভাগ্যের জয়

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পিএসজির সৌভাগ্যের জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্ব ফুটবলের সেরা দুই প্রতিভাবান ফুটবলারকে কিনে নিয়ে দল গড়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। নতুন মৌসুমের শুরুটাও করেছে ঠিক সেভাবেই। তবে লিঁওর বিপক্ষে রবিবার ছন্দে ছিলেন না নেইমার, কিলিয়ান এমবাপে এবং এডিনসন কাভানি। গোলের দেখা পাননি তাদের কেউই। তবে দুটি আত্মঘাতী গোলের সৌজন্যে লিঁওকে হারিয়ে ফ্রেঞ্চ লীগ ওয়ানে টানা ষষ্ঠ জয় তুলে নিয়েছে উনাই এমেরির দল। রবিবার নিজেদের মাঠ পার্ক ডি প্রিন্সেসে লিঁওর বিপক্ষে ম্যাচে প্রথমার্ধের খেলায় কোন উত্তেজনা ছিল না। ডানদিক থেকে এমবাপে ও বাঁদিক থেকে নেইমার আক্রমণের চেষ্টা চালিয়ে ততটা সফল হননি। পায়ের কারিকুরি দেখাতে গিয়ে বার বার বলের দখল হারিয়েছেন ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড নেইমার। প্রথমার্ধের একমাত্র ভাল সুযোগটা পিএসজি পেয়েছিল শেষদিকে। এমবাপের কাছ থেকে বল পেয়ে এক ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে নেইমারের নেয়া শট যায় গোলরক্ষক এ্যান্থনি লোপেজের কাছে। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলার গতি বাড়ে। ৫৭ মিনিটে ২১ মিটার দূর থেকে নেয়া নেইমারের ফ্রি-কিক ডানে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন লোপেজ। ৬৭ মিনিটে দারুণ সুযোগ পেয়েছিল লিঁও। কিন্তু ভাগ্য সহায় না থাকায় এগিয়ে যেতে পারেনি অতিথিরা। নদমবেলের দূরপাল্লার জোরালো শটে বল ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরে। দুই মিনিট পর কাছ থেকে মার্সেলোর হেড ঠেকিয়ে পিএসজির ত্রাণকর্তা রূপে আবির্ভাব হন গোলরক্ষক আলফুঁস আরিওলা। অবশেষে ৭৫ মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার জিওভানি লো সেলসোর বাঁদিক থেকে ক্রসে কাভানি পা লাগিয়েছিলেন। এরপর বল মার্সেলোর গায়ে লেগে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে ঢুকে যায়। তার একটু পর ডি-বক্সে এমবাপেকে ফেলে দেয়া হলে পেনাল্টি পায় পিএসজি। তবে কাভানির স্পটকিক ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়াতে দেননি লোপেজ। কিন্তু দুর্ভাগ্য সফরকারীদের। দ্বিতীয়ার্ধের ৮৫ মিনিটে আরেকটি আত্মঘাতী গোলে ম্যাচে ফেরার আশা একেবারেই শেষ হয়ে যায় এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত না হারা লিঁওর। নেইমারের বাড়ানো বল ধরা এমবাপের সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক। বল ফিরিয়েও দিয়েছিলেন; কিন্তু তা ডিফেন্ডার জেরেমি মোরেলের গায়ে লেগে জালে ঢুকে যায়। এর ফলে টানা ছয় ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেয়েছে তারা। সেইসঙ্গে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ফ্রেঞ্চ লীগ ওয়ানের শীর্ষে অবস্থান করছে পিএসজি। আগের ম্যাচে রাদামেল ফ্যালকাওয়ের জোড়া গোলে স্ত্রাসবুরকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে মোনাকো। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তবে লিঁওর বিপক্ষে ম্যাচে ফ্রি-কিক ও পেনাল্টি শটের জন্য তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন পিএসজির তিন তারকা এডিনসন কাভানি, দানি আলভেজ ও নেইমার। প্রথমে ফ্রি-কিকের সময় দেখা যায় দুর্দান্ত ফর্মে থাকা উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার কাভানির কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে নেইমারকে সুযোগ তৈরি করে দেন আলভেজ। কিন্তু নেইমারের দুর্দান্ত শট রুখে দেন লিঁওর অভিজ্ঞ গোলরক্ষক লোপেজ। এখানেই শেষ নয়। লিঁওর বিপক্ষে পরবর্তীতে পেনাল্টি পায় চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটতে থাকা পিএসজি। পেনাল্টি শট নিতে প্রস্তুত কাভানি। ঠিক তখনই আগ্রহ নিয়ে পেনাল্টি শট করতে আসেন নেইমার। তবে সাবেক বার্সিলোনা এবং সান্তোস ফরোয়ার্ডকে প্রত্যাখ্যান করে কাভানি নিজেই পেনাল্টি শট নেন। মন খারাপ করে সরে দাঁড়ান নেইমার। তবে এবার কাভানিও ব্যর্থ। দারুণ কৌশলগত দক্ষতায় উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার কাভানির শট বাম হাতে রুখে দেন লোপেজ। এরপর থেকেই ফুটবল দুনিয়ায় ঝড় বয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার। কেননা বর্তমান ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে দামী ফুটবলার নেইমার। কাভানি-আলভেজও সময়ের আলোচিত ফুটবলার। তাদের মতো তারকা ফুটবলারদের এমন আচরণ সত্যিই যে বেমানান। পিএসজির কোচ উনাই এমেরি দুই ফরোয়ার্ডকে এ নিয়ে সমঝোতায় আসতে বলেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অল্প কিছু খেলোয়াড় পেনাল্টি নেবে। এদের একজন কাভানি এবং অন্যজন নেইমার। পেনাল্টি নেয়ার ক্ষেত্রে মাঠে একটা সাধারণ বোঝাপড়া থাকতে হয়। আমি মনে করি দুইজনই পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারে। আমি চাই এক্ষেত্রে এই দুইজন পালাক্রমে আসুক। কোন মতৈক্য না হলে আমি সিদ্ধান্ত নেব। আমি চাই না এটা আমাদের জন্য একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়াক।’
×