ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুশীলন শুরু বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুশীলন শুরু বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রায় ৯ বছর পর আবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ২০০৮ সালের নবেম্বরে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে গিয়েছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের নেতৃত্বে। সেই দলে ছিলেন বর্তমান টেস্ট স্কোয়াডে থাকাদের মধ্যে তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস ও মুশফিকুর রহীম। এবার সফরে ২ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে ও ২ টি২০ ম্যাচের সিরিজ খেলবে দু’দল। দুইভাগে বিভক্ত হয়ে এবার দক্ষিণ আফ্রিকা রওনা হওয়া দলটি বাংলাদেশ সময় অনুসারে সোমবার দুপুরে (দক্ষিণ আফ্রিকার ভোর) একসঙ্গে হয়েছে। আর এদিনই অনুশীলনে নেমেছে মুশফিকুরের দল। বেনোনিতে স্থানীয় সময় অনুসারে দুপুরে অনুশীলন করে বাংলাদেশ দল। এর মাধ্যমেই এবারের দক্ষিণ আফ্রিকা মিশন শুরু হয়ে গেল বাংলাদেশ দলের। বৃহস্পতিবার সফরের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে এখানকারই উইলোমুর পার্ক ভেন্যুতে দক্ষিণ আফ্রিকার আমন্ত্রণমূলক একাদশের বিপক্ষে তিনদিনের একটি ম্যাচ খেলবে দল। আর ২৮ সেপ্টেম্বর পচেফস্ট্রমের সেনওয়েস পার্কে প্রথম টেস্ট দিয়ে শুরু হবে সিরিজ। বাংলাদেশের বর্তমান দলটির মাত্র তিন ক্রিকেটারের অভিজ্ঞতা আছে দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে টেস্ট খেলার। অধিনায়ক মুশফিক, ওপেনার তামিম ও ইমরুল খেলেছিলেন ২০০৮ সালের নবেম্বর মাসে হওয়া সফরে। সেটাই সর্বশেষ প্রোটিয়া ভূমিতে বাংলাদেশ দলের শেষবার খেলা। তবে এর মধ্যে আরেকটি সিরিজ হয়েছে দু’দলের। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিল প্রোটিয়া শিবির। দুই বছর পর আবার মুখোমুখি হচ্ছে দু’দল। বাংলাদেশ দলের জন্য এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কোনবারই ভাল কোন স্মৃতি ছিল না। এবার অবশ্য নতুন কোন মাইলফলক অর্জিত হবে বলেই ঘোষণা দিয়ে গেছেন অধিনায়ক মুশফিক। তবে কথার সঙ্গে কাজের প্রয়োগের জন্য ভিন্ন পরিবেশ এবং উইকেটের ভিন্নতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে বাংলাদেশ দলকে। সে কারণে সোমবারই অনুশীলনে নেমেছেন মুশফিকরা। তবে প্রথমদিনের অনুশীলনেই যোগ দিতে পারেননি নির্ভরযোগ্য ওপেনার তামিম ইকবাল। দলের সঙ্গে থাকা জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বেনোনি থেকে দৈনিক জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, ‘আজ (সোমবার) দুপুর ২টায় বাংলাদেশ দল অনুশীলনে নেমেছে। তবে তামিম স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় এসে পৌঁছবেন। তিনি পরবর্তী দিনের অনুশীলনে অংশ নেবেন।’ এবার দলের সঙ্গে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব নেই। তিনি টানা খেলার ক্লান্তি থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছ থেকে বিশ্রাম চেয়ে নিয়েছেন। ফলে দুই টেস্টের জন্য ঘোষিত দলে নেই তিনি। প্রথম টেস্টে সে কারণে নিশ্চিতভাবেই খেলবেন না সাকিব। তবে তিনি চাইলে দ্বিতীয় টেস্টেই খেলার জন্য সুযোগ রয়েছে তার। এমনটাই দল ঘোষণার সময় জানিয়েছিলেন নান্নু। কিন্তু সেটা না হলে শেষ পর্যন্ত ওয়ানডে সিরিজে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন সাকিব। সুতরাং তাকে ছাড়াই এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে হবে বাংলাদেশ দলকে। সদ্যসমাপ্ত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে টাইগাররা ঘরের মাটিতে। আর প্রথম টেস্টে অসিদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন সাকিব। মিরপুর টেস্টে বল হাতে ১০ উইকেট শিকারের পাশাপাশি প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে খেলেছিলেন ৮৪ রানের দারুণ এক ইনিংস। আর ২০০৮ সালে সর্বশেষবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দুই টেস্টে ব্যাট হাতে না জ্বলতে পারলেও বল হাতে ভালই করেছিলেন। ব্লুমফন্টেইনে হওয়া প্রথম টেস্টে ৫ উইকেট এবং দ্বিতীয় টেস্টে ৬ উইকেট শিকার করেছিলেন এ বাঁহাতি স্পিনার। তবে উভয় টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হার দেখেছিল বাংলাদেশ। এবার তাই অভিজ্ঞ সাকিবকে ছাড়া বড় রকমের চ্যালেঞ্জেই পড়তে হবে মুশফিকদের। তবে এ বিষয়ে অধিনায়ক বলে গেছেন, ‘সাকিব না থাকা অবশ্যই অনেক বড় ঘাটতি, তার বিকল্প নেই। তার পরিবর্তে আমাদের একজন ব্যাটসম্যান ও একজন বোলার নিতে হয়। তবে এটাও ঠিক সাকিবকে ছাড়াও আমরা জিতেছি ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে। আর রিয়াদ ভাই (মাহমুদুল্লাহ) দলে আসায় কিছুটা সেই ঘাটতি পূরণ হয়েছে বলেই মনে করি।’ বৃহস্পতিবার প্রস্তুতি ম্যাচের আগে আরও দু’দিন অনুশীলন করতে পারবে বাংলাদেশ দল। এরপরই শুরু হবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মূল লড়াই। তার আগেই নিজেদের মানিয়ে নেয়া এবং উইকেট পরিস্থিতি বুঝে ওঠার মিশন শুরু হয়ে গেল মুশফিকদের।
×