ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ক্রিকেট লীগ;###;বিজয়ের ডাবল সেঞ্চুরির পর মাশরাফির আগুন বোলিং, নাসিরের ৫ উইকেট, আশরাফুলের ডেঙ্গু

রাজশাহীর জয়, বাকি তিন ম্যাচই ড্র

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রাজশাহীর জয়, বাকি তিন ম্যাচই ড্র

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ালটন ১৯তম জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) প্রথম রাউন্ডের চারদিনের ম্যাচে শুধু জয় তুলে নিয়েছে রাজশাহী বিভাগ। তারা শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে ৬ উইকেটে হারিয়ে দেয় সিলেট বিভাগকে। এছাড়া দ্বিতীয় স্তরে ঢাকা মেট্রোপলিস ও চট্টগ্রাম বিভাগের ম্যাচ, প্রথম স্তরে ঢাকা বিভাগ-বরিশাল বিভাগের ম্যাচ ও রংপুর বিভাগ-খুলনা বিভাগর ম্যাচ ড্র হয়েছে। প্রথম রাউন্ডের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার প্রথমশ্রেণীর ক্রিকেটে ফিরে আসা। তিনি দ্বিতীয় ইনিংসে আগুন বোলিং করে রংপুরের ৩ উইকেট তুলে নেন। একই ম্যাচে খুলনার হয়ে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আলোচিত হয়েছেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়। তিনি ২১৬ রানে সাজঘরে ফেরেন। খুলনার প্রথম ইনিংসের ৫ উইকেট শিকার করেন রংপুরের অফস্পিন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। অপরদিকে, ঢাকা মেট্রোর হয়ে প্রথম ইনিংসে শতক হাঁকালেও দ্বিতীয় ইনিংসে নামেননি মোহাম্মদ আশরাফুল। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সোমবার ম্যাচের শেষদিন সকালেই ঢাকা ফিরে আসেন তিনি। রাজশাহীর জয় ॥ বোলারদের ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয় তুলে নিয়েছে রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা। ২১২ রানের জয়ের লক্ষ্যে ২ উইকেটে তৃতীয় দিন শেষে ৮৬ রান করেছিল তারা। শেষদিনে আরও দুই উইকেট হারিয়ে ৪ উইকেটে ২১২ রান তুলে সিলেটকে হারিয়ে দেয় স্বাগতিকরা। ফরহাদ হোসেন মাত্র ৯৯ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় ৭০ এবং জুনায়েদ সিদ্দিকী ৭৩ বলে ৪৬ এবং ৫ নম্বরে নেমে ওপেনার মাইশুকুর রহমান ৪১ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৩৭ রান করলে ৬ উইকেটের জয় পায় তারা। তৃতীয় উইকেটে জুনায়েদ-ফরহাদ ৭২ ও চতুর্থ উইকেটে ফরহাদ-মাইশুকুর ৬৭ রানের জুটিই তাদের জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রাখে। বিজয়ের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি, নাসিরের ৫ ও মাশরাফির ৩ উইকেট ॥ আগের দিন ১৭২ রানে অপরাজিত ছিলেন এনামুল হক বিজয়। এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে জাতীয় দলে ফেরার গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত আর ডাক পাননি। সেটার জবাব বেশ ভালভাবেই দিয়েছেন তিনি ব্যাট হাতে। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক। ৩৫৬ বলে ১৮ চার ও ২ ছক্কায় ২১৬ রান করার পর নাসিরের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর আরও দুটি উইকেট নিয়ে ৫ উইকেট ঝুলিতে পোরেন নাসির। বিজয় সাজঘরে ফেরার পরও তুষার ইমরানের অর্ধশতকে ৯ উইকেটে ৪৯৫ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে খুলনা। ২৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে মাশরাফির তোপে পড়েন রংপুরের ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসে ১ উইকেট শিকার করা মাশরাফি দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট দখল করেন তিনি। এটি ছিল ‘নড়াইল এক্সপ্রেসের’ প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ফেরার ম্যাচ। রংপুর ৪ উইকটে ৩৭ রান তোলার পর দিন শেষ হয়ে গেলে ম্যাচ ড্র হয়। আশরাফুলের ডেঙ্গু, মেট্রো-চট্টগ্রাম ম্যাচ ড্র ॥ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথম ইনিংসেই ঢাকা মেট্রোর হয়ে শতক হাঁকিয়েছিলেন আশরাফুল। কিন্তু জ্বরের কারণে দ্বিতীয় দিন আর ব্যাট হাতে নামেননি। পরে সোমবার নিশ্চিত হয় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। এদিন ম্যাচের শেষদিনে চট্টগ্রাম থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আশরাফুলকে ঢাকায় পাঠানো হয়। তবে মেট্রোর দেয়া ৩৮৪ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ১৯৩ রান করে চট্টগ্রাম। এরপর ম্যাচটি ড্র হয়ে যায়। সাজ্জাদুল হক ১২২ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৮২ রান করেন। শেষ পর্যন্ত ড্র ঢাকা-বরিশাল ম্যাচ ॥ ম্যাচের প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ দিনে কোন খেলাই হয়নি। দ্বিতীয় দিন ব্যাট করে ঢাকা রনি তালুকদার ও সাইফ হাসানের জোড়া শতকে ২ উইকেটে ৩০৯ রান তুলেছিল। শেষ পর্যন্ত কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বল আর মাঠে না গড়ানোয় ম্যাচটি নিষ্প্রাণ ড্র হয়েছে। স্কোর ॥ চতুর্থ দিন শেষে ঢাকা মেট্রো-চট্টগ্রাম ম্যাচ-দ্বিতীয় স্তর ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস ৩৪৪/১০ এবং দ্বিতীয় ইনিংস ১৬৯/৬; ইনিংস ঘোষণা; মার্শাল ৭৪*, আসিফ ৫৭। চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস ১৩০/১০ ও দ্বিতীয় ইনিংস- আগের দিন ১১/০। চতুর্থ দিনশেষে- ১৯৩/৪; ৬৬ ওভার (সাজ্জাদুল ৮২, তাসামুল ৪৬*, পিনাক ৩৫; শরীফুল্লাহ ২/৬৬)। ফল ॥ ড্র। ম্যাচসেরা ॥ নিহাদুজ্জামান (ঢাকা মেট্রো)। রংপুর-খুলনা ম্যাচ-প্রথম স্তর রংপুর প্রথম ইনিংস ৪৭১/১০; ১২০.৩ ওভার (সোহরাওয়ার্দী ৮৯; আল আমিন ৪/১০২) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ৩৭/৪; ৮ ওভার (জাহিদ ২৭*; মাশরাফি ৪/১২)। খুলনা প্রথম ইনিংস- তৃতীয় দিন ৩৪২/৪; ৯৬ ওভার (বিজয় ১৭২, রবি ১০০, মিঠুন ৪০) ও চতুর্থ দিন- ৪৯৫/৯; ১৩৮.৪ ওভার (বিজয় ২১৬, রবি ১০০, তুষার ৫৪; নাসির ৫/৭০)। ফল ॥ ড্র। ম্যাচসেরা ॥ এনামুল হক বিজয় (খুলনা)। ঢাকা-বরিশাল ম্যাচ-প্রথম স্তর ঢাকা প্রথম ইনিংস ৩০৯/২; ৯০ ওভার (রনি ১২১, সাইফ ১০৬*, রকিবুল ৪৫*)। ফল ॥ ড্র সিলেট-রাজশাহী ম্যাচ-দ্বিতীয় স্তর সিলেট প্রথম ইনিংস ১২৮/১০ ও দ্বিতীয় ইনিংস- ১৬২/১০; রাজিন ৩৯; সাকলায়েন ৩/২৭, ফরহাদ ৩/২৮)। রাজশাহী প্রথম ইনিংস ৭৯/১০ ও দ্বিতীয় ইনিংস- তৃতীয় দিন ৮৬/২; ২৮ ওভার (জহুরুল ৩৫, জুনায়েদ ২৮*, ফরহাদ ১০*) ও চতুর্থ দিনশেষে- ২১২/৪; ৫১.২ ওভার (ফরহাদ হোসেন ৭০, জুনায়েদ ৪৬, মাইশুকুর ৩৭*; শাহানুর ২/৩১)। ফল ॥ রাজশাহী ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সায়েম আলম (সিলেট)।
×