ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ থাকুন ॥ শিনজো আবে

উ. কোরীয় জলসীমায় ॥ রুশ-চীন নৌমহড়া

প্রকাশিত: ০৩:১৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

উ. কোরীয় জলসীমায় ॥ রুশ-চীন নৌমহড়া

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচীকে ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজনা এবং চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রাক্কালে সোমবার রাশিয়া ও চীন আঞ্চলিক জলসীমায় নৌমহড়া শুরু করেছে। আসন্ন সাধারণ পরিষদের বৈঠকে উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গটি ব্যাপকভাবে উত্থাপিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইয়াহু নিউজ। তিন সপ্তাহের মধ্যে গত শুক্রবার উত্তর কোরিয়া তার দ্বিতীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছে এবং এরও আগে দেশটি আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে ৩ সেপ্টেম্বর তার সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এসবের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও তাদের মিত্র দেশগুলোর ডাকে সাড়া দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে যে কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করুক না কেন চীন ও রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার পক্ষে আছে। এই নৌমহড়ার মাধ্যমে যেন চীন ও রাশিয়া তাদের মনোভাব বিশ্ববাসীকে জানাতে চাইছে। তবে চীনের সরকারী সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া উত্তর কোরিয়া নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনার সঙ্গে এই মহড়ার সরাসরি কোন সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেনি। এই সংবাদ সংস্থা নৌমহড়াটি কোন্ কোন্ এলাকার মধ্যে পরিচালিত হবে তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানায়। রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সামুদ্রিক বন্দর ভøাডিভোস্টকের অনতিদূরে উত্তর কোরিয়া ও রুশ জলসীমার কাছে পিটার দ্য গ্রেট উপসাগরে নৌমহড়াটি শুরু হয়েছে। এটি জাপানের উত্তরে ওখোটস্ক সাগরের দক্ষিণাংশেও বিস্তৃত হবে। এই মহড়া চলতি বছরে চীন-রাশিয়ার যৌথ মহড়ার দ্বিতীয় পর্ব। প্রথম পর্ব জুলাইয়ে রাশিয়ার পশ্চিম উপকূলের বাল্টিক সাগরে অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একঘরে রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করা সত্ত্বেও দেশটি ভ্রর-ক্ষেপহীনভাবে তার পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি চীন ও রাশিয়া আলোচনা ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই সমস্যা সমাধানের কথা বলে আসছে। কিন্তু বাস্তবে তার কোন ফল প্রকাশ ঘটতে দেখা যাচ্ছে না। উত্তর কোরিয়ার ওপর বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সরাসরি সীমান্ত সংযোগ থাকায় এসব নিষেধাজ্ঞা দেশটির ওপর আদৌ কোন প্রভাব ফেলছে না। পক্ষান্তরে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি থাকায় এগুলোর ওপর যে কোন সময় আঘাত হানার হুমকি দিচ্ছে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ গুয়ামেই শুধু নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখ-ে আঘাত হানার নমুনাস্বরূপ কয়েকদিনের বিরতি দিয়ে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে এবং দুটি ক্ষেপণাস্ত্রই জাপানী আকাশসীমা অতিক্রম করেছে। এ প্রসঙ্গে রবিবার নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক সম্পাদকীয় কলামে জাপানী প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, বার বার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক গৃহীত প্রস্তাবের লঙ্ঘন এবং এর মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া দেখাতে চায় যে, দেশটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হামলা চালাতে সক্ষম। শিনজো আবে যুক্তি প্রদর্শন করে বলেন, কূটনীতি ও আলোচনা উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, পিয়ংইয়ংয়ের হুমকি মোকাবেলায় সমগ্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সমন্বিতভাবে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এক সপ্তাহ আগে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নবমবারের মতো নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ২০০৬ সাল থেকে দেশটির পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কর্মসূচীর বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে কোন কাজ হচ্ছে না। কেন কাজ হচ্ছে না তা সকলেরই জানা।
×