ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্ধর্ষ জঙ্গীনেতা সোহেল ১০ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

দুর্ধর্ষ জঙ্গীনেতা সোহেল  ১০ দিনের রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও গ্রেনেড সরবরাহকারী জঙ্গীনেতা সোহেল মাহফুজ ওরফে নসরুল্লাহ ওরফে হাতকাটা সোহেলের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন রাজশাহীর আদালত রবিবার বিকেলে রাজশাহীর আমলী আদালত-৩ এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম তার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বেনীপুরের ‘জঙ্গী বাড়িতে’ গত মে মাসে অপারেশন ‘সান ডেভিল’ পরিচালনার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি সোহেল মাহফুজ। কয়েকদিন আগে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিবি) পরিদর্শক আতাউর রহমান আদালতে সোহেল মাহফুজের ১৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন। রাজশাহী আদালত পুলিশ পরিদর্শক খুরশিদা বানু জানান, রবিবার রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। তাই সকাল ১০টার দিকে সোহেল মাহফুজকে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে আদালতে তোলা হয়। কিন্তু সোহেল মাহফুজের পক্ষে কোন আইনজীবী তার রিমান্ডের বিরোধিতা করেননি। তাই সকালে আদালত সোহেল মাহফুজকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান। পরে বিকেলে তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আতাউর রহমান জানান, সোহেল মাহফুজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দী ছিল। তার রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত তাকে হাজির করার নির্দেশ দেন। এরপর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শনিবার বিকেলে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। পরে রবিবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আতাউর রহমান বলেন, আদালত সোহেল মাহফুজের রিমান্ড মঞ্জুর করায় রবিবার তাকে কারাগার থেকে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত শেষ করে দ্রুতই মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হবে। তাছাড়া মামলার পলাতক এক আসামির অবস্থান নিশ্চিত হতে সোহেল মাহফুজকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গোদাগাড়ীর বেনীপুর গ্রামে সাজ্জাদ আলীর বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালাতে গেলে জঙ্গী হামলায় এক ফায়ার সার্ভিস কর্মী নিহত হন। আহত হন দুই পুলিশ সদস্য। পরে সাজ্জাদ আলীসহ (৫০) তার স্ত্রী বেলী আক্তার (৪৫), তাদের ছেলে আল-আমিন ওরফে হামজা (২০), মেয়ে কারিমা খাতুন (১৭) এবং আশরাফুল ইসলাম (২৩) নামে বহিরাগত আরেক জঙ্গী আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণে নিহত হয়। অভিযানের সময় বাড়িতে ছিল না সাজ্জাদের আরেক ছেলে সোয়েব আলী। অভিযানের পর ওই বাড়ি থেকে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করে সাজ্জাদের বড় মেয়ে সুমাইয়া খাতুন। পরে এ ঘটনায় মামলা হলে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে এখনও সোয়েবের নাগাল পায়নি পুলিশ। সর্বশেষ এ মামলায় সোহেল মাহফুজকে রিমান্ডে নেয়া হলো। সোহেল মাহফুজের আসল নাম আবদুস সবুর খান। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সাদিপুর গ্রামে তার বাড়ি। বাবার নাম রেজাউল করিম। গত জুলাই মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে সোহেল মাহফুজকে গ্রেফতার করা হয়। সোহেল মাহফুজ গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলার সময়ও গ্রেনেড সরবরাহ করেছিল। ২০১৪ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহে আদালতে নেয়ার পথে তিন জঙ্গীকে ছিনিয়ে নেয়ার মূল পরিকল্পনাকারীও এই সোহেল। এছাড়া ভারতের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা। নব্য জেএমবির পাঁচ শূরা সদস্যর একজন সোহেল মাহফুজ।
×