ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ বিতরণে সেনা মোতায়েন করুন ॥ মির্জা ফখরুল

ভারত-চীনে ডেলিগেটস পাঠানোর দাবি বিএনপির

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ভারত-চীনে ডেলিগেটস পাঠানোর দাবি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ বিতরণ করতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। রবিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল এ দাবি জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থাপনায় সরকার ব্যর্থ। ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত ছিল সকল রাজনীতিবিদ ও পেশাজীবীকে নিয়ে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা। কিন্তু তারা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি না করে অন্যায়ভাবে বিএনপির ত্রাণ কাজে বাধা দিয়েছে। ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে বিষয়টি মোকাবেলার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বিভক্তি চাই না। কখনও বিভক্তি করিনি। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। সরকারের উচিত অবিলম্বে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে আলোচনা করা। ফখরুল বলেন, আমরা শুরুর দিকেই বলেছি রোহিঙ্গা ইস্যুতে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর লক্ষ্যে চীন ও ভারতে ডেলিগেটস পাঠানো প্রয়োজন। দরকার হলে প্রধানমন্ত্রী নিজে এসব দেশ সফর করতে পারেন। যাতে জনমত গঠন করে চীন ও ভারতকে বাংলাদেশের পক্ষে নিয়ে আসা যায়। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ত্রাণ কমিটির প্রধান ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সরকারী ত্রাণ তৎপরতা আমাদের চোখে পড়েনি। আওয়ামী লীগের কোন ইউনিট বা অঙ্গসংগঠন সেখানে ত্রাণ বিতরণ করছে বলে আমাদের জানা নেই। বরং মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিপদাপন্ন রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা ছিনিয়ে নিচ্ছে বলে আমরা শুনেছি। এমন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ বিতরণ ও রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে সেনা মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছি। কেন্দ্রীয় ত্রাণ টিমের সঙ্গে কাজ করার কারণে বিএনপির স্থানীয় ৬ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার ও তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে এ ঘটনার নিন্দা জানান মির্জা আব্বাস। মির্জা আব্বাস বলেন, মিয়ানমার সরকার মানবতার ওপর চরম আঘাত করেছে। দেশে ইতোমধ্যে ১০ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে বিএনপিকে বাধা দেয়া হলেও ত্রাণ বিতরণ করতে পেরেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। শুধু তাই নয় সেখানে তিনি মঞ্চ বানিয়ে জনসভাও করেছেন। আমরা সরকারের এই দ্বিমুখী আচরণের নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, সরকার বাধা দিলেও রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিএনপির ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে, কোন অপকৌশলই তা বন্ধ করতে পারবে না। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরাফত আলী সফু। দেশের গণতন্ত্র অর্ধমৃত রিজভী দেশের গণতন্ত্র এখন অর্ধমৃত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘প্রজন্ম-৭১’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের সূর্যোদয় নিয়ে আসতে হবে। আমরা যদি বুক পেতে দাঁড়াতে পারি তাহলে বর্তমান সরকারকে সরাতে পারব। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রথমে সন্ত্রাসী সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পরে তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন রোহিঙ্গাদের সাহায্য করছে, ত্রাণ পাঠাচ্ছে, টাকা পাঠাচ্ছে এবং সমর্থন জানাচ্ছে তখন কাঁচা টাকার জন্য গলার সুর নরম করা হয়েছে। রিজভী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার পুরস্কার হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে সূর্য মনে করে তার চারদিকে পরিক্রমণ করেন। এটা তার প্রত্যয়। নির্বাচন অফিসারদের বদলি ও পদোন্নতি তিনি একাই করেন। এই প্রধান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কী রকম নির্বাচন হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। তিনি বলেন, সরকার চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারছে না। দেশে দুর্ভিক্ষের হাতছানি দেখা যাচ্ছে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার।
×